পরিচালকরা শেয়ার ধারণ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিলেন by রাশেদুল তুষার
নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর পরিচালকদের শেয়ার ধারণের তথ্য এসইসিতে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় গত ২১ মে পর্যন্ত পরিচালকদের শেয়ার ধারণের তথ্য দিতে বলা হয়েছিল। তবে পদ ধরে রাখতে কিছু পরিচালক নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এসইসিকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
কালের কণ্ঠের নিজস্ব অনুসন্ধানে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
নির্দেশনা ছিল ২১ মে পর্যন্ত যেসব পরিচালক ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট কম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবেন, শুধু তাঁরাই পরিচালক পদে বহাল থাকবেন। কিন্তু অনেক কম্পানি তাদের পরিচালক পদ টিকিয়ে রাখতে ২১ মের পরিবর্তে ৩১ মে পর্যন্ত হালনাগাদ শেয়ার ধারণের তথ্য জমা দিয়েছেন দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে। আর এ তথ্য যাচাই না করেই সরাসরি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসিতে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
কালের কণ্ঠ প্রতিবেদকের দেওয়া তথ্য যাচাই করে কম্পানিগুলোর মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ফলে এসইসির কাছে পরিচালকদের শেয়ার ধারণের তালিকা গত বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হলেও সেই তালিকা আবার যাচাই-বাছাই শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন সিএসইর প্রধান নির্বাহী পরিচালক সাজিদ হোসাইন। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, যেসব কম্পানির নামে এ ধরনের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তা চিঠি দিয়ে এসইসিকে জানানো হবে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ গত বৃহস্পতিবার এসইসিতে যে তালিকা জমা দিয়েছে তাতে দেখা যায়, সিএসইতে তালিকাভুক্ত ২০৪টি কম্পানির মধ্যে ১৭৫টি সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পেরেছে। ব্যর্থ হয়েছে ২৯টি কম্পানি। আর এ কম্পানিগুলোর এক হাজার ৩৭২ জন পরিচালকের মধ্যে এক হাজার ৩৪ জন ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট কম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছেন। অন্য ৩৩৮ জন পরিচালক নির্ধারিত শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে কম্পানিগুলোর দেওয়া তথ্য যাচাই করলে শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
এসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, সিএসই তাদের এখানে তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোকে ২১ মে পর্যন্ত তথ্য দিতে বলা হয়। এ হিসাবে দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড তাদের পরিচালকদের যে তথ্য সরবরাহ করেছে তাতে এই ব্যাংকের ১৩ পরিচালকের সবাই ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছেন বলে জানানো হয়। তাদের দেওয়া এ তথ্যই গত বৃহস্পতিবার এসইসির কাছে পাঠিয়েছে সিএসই। কিন্তু কালের কণ্ঠের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ব্যাংকের অন্তত চারজন পরিচালক ২১ মের মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারেননি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সিটি ব্যাংকের পরিচালক আজিজ আল মাহমুদ এসইসির বেঁধে দেওয়া সময় ২১ মের মধ্যে চার দফায় ৯৭ লাখ সাড়ে ২২ হাজার শেয়ার কিনেছেন। ফলে ২১ মে তাঁর কাছে মোট এক কোটি দুই লাখ ১২ হাজার ৭৮০টি শেয়ার ছিল। ২ শতাংশ কোটা পূরণে তাঁর ২৪ লাখ ৩৫ হাজার শেয়ার কম ছিল। ফলে ২ শতাংশ কোটা পূরণে গত ৩১ মে বাকি শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি ব্যাংকের এই পরিচালক। গত ৩ জুলাই এই শেয়ার কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন।
একইভাবে এই ব্যাংকের করপোরেট পরিচালক এ-ওয়ান পলিমার ও ব্যক্তি পরিচালক হোসাইন খালিদ গত ২৯ মে যথাক্রমে ২৪ লাখ ১২ হাজার এবং আড়াই লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়ে নিজেদের ২ শতাংশ কোটা পূরণ করেছেন। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকের আরেক পরিচালক রাজিবুল হক চৌধুরী ২৯ মে বাজার থেকে চার লাখ পাঁচ হাজার শেয়ার কেনা এবং ৩১ মে ১৫ লাখ শেয়ার বাবা আজিজুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থাৎ এই চারজন পরিচালক এসইসি নির্দেশিত ২১ মের পরে নিজেদের কোটা পূরণ করেছেন। চট্টগ্রাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এ তথ্য দেওয়া আছে।
এদিকে প্রিমিয়ার লিজিংয়ের পরিচালক জুনাইদ আহমেদ এসইসি নির্ধারিত সময়ের একদিন পর ২২ মে ৩০ হাজার শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। এর আগে এই পরিচালকের কাছে মোট ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ শেয়ার ছিল। কিন্তু ২ শতাংশ কোটা পূরণে এই পরিচালকের ২১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭৮টি শেয়ারের প্রয়োজন ছিল। অথচ সিএসই যে তালিকা এসইসিকে জমা দিয়েছে, তাতে ২১ মের মধ্যে এই পরিচালকের কাছে ২ শতাংশ শেয়ার ছিল বলে জানানো হয়।
তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর দেওয়া এসব গরমিলের কথা গতকাল সিএসইর প্রধান নির্বাহীর কাছে তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, 'প্রথমত সিএসই ও ডিএসই যে তালিকা জমা দিয়েছে তা পুনরায় নিশ্চিতভাবে যাচাই-বাছাই করে এসইসি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করবে। তবে আপনার (কালের কণ্ঠ) দেওয়া তথ্য যাচাই করলে মনে হচ্ছে, এরকম আরো অনেক কম্পানির নাম পাওয়া যাবে।'
এ ধরনের প্রতারণামূলক তথ্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিএসইর সাবেক সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যর্থতা। আপনি রিপোর্টার হয়ে যদি এটা ধরতে পারেন তবে স্টক এক্সচেঞ্জ কেন কম্পানিগুলোর দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করবে না? এভাবে যাচাই করলে পরিচালকদের শূন্য পদের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।'
নির্দেশনা ছিল ২১ মে পর্যন্ত যেসব পরিচালক ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট কম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবেন, শুধু তাঁরাই পরিচালক পদে বহাল থাকবেন। কিন্তু অনেক কম্পানি তাদের পরিচালক পদ টিকিয়ে রাখতে ২১ মের পরিবর্তে ৩১ মে পর্যন্ত হালনাগাদ শেয়ার ধারণের তথ্য জমা দিয়েছেন দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে। আর এ তথ্য যাচাই না করেই সরাসরি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসিতে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
কালের কণ্ঠ প্রতিবেদকের দেওয়া তথ্য যাচাই করে কম্পানিগুলোর মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ফলে এসইসির কাছে পরিচালকদের শেয়ার ধারণের তালিকা গত বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হলেও সেই তালিকা আবার যাচাই-বাছাই শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন সিএসইর প্রধান নির্বাহী পরিচালক সাজিদ হোসাইন। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, যেসব কম্পানির নামে এ ধরনের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তা চিঠি দিয়ে এসইসিকে জানানো হবে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ গত বৃহস্পতিবার এসইসিতে যে তালিকা জমা দিয়েছে তাতে দেখা যায়, সিএসইতে তালিকাভুক্ত ২০৪টি কম্পানির মধ্যে ১৭৫টি সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পেরেছে। ব্যর্থ হয়েছে ২৯টি কম্পানি। আর এ কম্পানিগুলোর এক হাজার ৩৭২ জন পরিচালকের মধ্যে এক হাজার ৩৪ জন ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট কম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছেন। অন্য ৩৩৮ জন পরিচালক নির্ধারিত শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে কম্পানিগুলোর দেওয়া তথ্য যাচাই করলে শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
এসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, সিএসই তাদের এখানে তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোকে ২১ মে পর্যন্ত তথ্য দিতে বলা হয়। এ হিসাবে দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড তাদের পরিচালকদের যে তথ্য সরবরাহ করেছে তাতে এই ব্যাংকের ১৩ পরিচালকের সবাই ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছেন বলে জানানো হয়। তাদের দেওয়া এ তথ্যই গত বৃহস্পতিবার এসইসির কাছে পাঠিয়েছে সিএসই। কিন্তু কালের কণ্ঠের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ব্যাংকের অন্তত চারজন পরিচালক ২১ মের মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারেননি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সিটি ব্যাংকের পরিচালক আজিজ আল মাহমুদ এসইসির বেঁধে দেওয়া সময় ২১ মের মধ্যে চার দফায় ৯৭ লাখ সাড়ে ২২ হাজার শেয়ার কিনেছেন। ফলে ২১ মে তাঁর কাছে মোট এক কোটি দুই লাখ ১২ হাজার ৭৮০টি শেয়ার ছিল। ২ শতাংশ কোটা পূরণে তাঁর ২৪ লাখ ৩৫ হাজার শেয়ার কম ছিল। ফলে ২ শতাংশ কোটা পূরণে গত ৩১ মে বাকি শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি ব্যাংকের এই পরিচালক। গত ৩ জুলাই এই শেয়ার কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন।
একইভাবে এই ব্যাংকের করপোরেট পরিচালক এ-ওয়ান পলিমার ও ব্যক্তি পরিচালক হোসাইন খালিদ গত ২৯ মে যথাক্রমে ২৪ লাখ ১২ হাজার এবং আড়াই লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়ে নিজেদের ২ শতাংশ কোটা পূরণ করেছেন। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকের আরেক পরিচালক রাজিবুল হক চৌধুরী ২৯ মে বাজার থেকে চার লাখ পাঁচ হাজার শেয়ার কেনা এবং ৩১ মে ১৫ লাখ শেয়ার বাবা আজিজুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থাৎ এই চারজন পরিচালক এসইসি নির্দেশিত ২১ মের পরে নিজেদের কোটা পূরণ করেছেন। চট্টগ্রাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এ তথ্য দেওয়া আছে।
এদিকে প্রিমিয়ার লিজিংয়ের পরিচালক জুনাইদ আহমেদ এসইসি নির্ধারিত সময়ের একদিন পর ২২ মে ৩০ হাজার শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। এর আগে এই পরিচালকের কাছে মোট ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ শেয়ার ছিল। কিন্তু ২ শতাংশ কোটা পূরণে এই পরিচালকের ২১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭৮টি শেয়ারের প্রয়োজন ছিল। অথচ সিএসই যে তালিকা এসইসিকে জমা দিয়েছে, তাতে ২১ মের মধ্যে এই পরিচালকের কাছে ২ শতাংশ শেয়ার ছিল বলে জানানো হয়।
তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর দেওয়া এসব গরমিলের কথা গতকাল সিএসইর প্রধান নির্বাহীর কাছে তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, 'প্রথমত সিএসই ও ডিএসই যে তালিকা জমা দিয়েছে তা পুনরায় নিশ্চিতভাবে যাচাই-বাছাই করে এসইসি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করবে। তবে আপনার (কালের কণ্ঠ) দেওয়া তথ্য যাচাই করলে মনে হচ্ছে, এরকম আরো অনেক কম্পানির নাম পাওয়া যাবে।'
এ ধরনের প্রতারণামূলক তথ্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিএসইর সাবেক সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যর্থতা। আপনি রিপোর্টার হয়ে যদি এটা ধরতে পারেন তবে স্টক এক্সচেঞ্জ কেন কম্পানিগুলোর দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করবে না? এভাবে যাচাই করলে পরিচালকদের শূন্য পদের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।'
No comments