জনপ্রিয় নাশতা হতে পারে অসুখের কারণ by অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
জাংক ফুড নামেই পরিচিত। একে কী বলব? জঞ্জাল খাবার? বাতিল খাবার? ফাস্টফুড? পুষ্টিকর আবার তো নয়ই।
প্রিয় নুডলস, বার্গার, চিপস, অন্যান্য ফাস্টফুড যাই বলি, এসবে রয়েছে খুব বেশি ট্রান্সফ্যাট, নুন ও চিনি।
জাংক ফুড নামেই পরিচিত। একে কী বলব? জঞ্জাল খাবার? বাতিল খাবার? ফাস্টফুড? পুষ্টিকর আবার তো নয়ই।
প্রিয় নুডলস, বার্গার, চিপস, অন্যান্য ফাস্টফুড যাই বলি, এসবে রয়েছে খুব বেশি ট্রান্সফ্যাট, নুন ও চিনি।
এসব খেয়ে পরে অবশ্যই হবে গুরুতর হত স্বাস্থ্য ও রোগ। যেমন—স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হূদেরাগ। দিল্লিভিত্তিক সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের গবেষকেরা তা-ই বলেন। জাংক ফুড নিউট্রিশন স্টাডি নামের এই প্রকল্পের গবেষকেরা আরও বলেন, এসব জঞ্জাল খাবারে আসক্ত তরুণ প্রজন্মের জীবনের আগেভাগেই হূদেরাগের সূত্রপাত ঘটে।
আমরা সবাই জানি, জাংক ফুড মন্দ, তবু আমরা এসব খাবার খেয়েই চলি। কিন্তু কত খারাপ যে এসব খাবার, পুরো খবর আমরা জানিই না। পটেটো চিপস বা ম্যাগি নুডলসের প্যাকেটের মধ্যে পুষ্টি কতটুকু, যে দাবি ওদের প্রস্তুতকারকদের, তাও তো জানি না। এসব খাবার সম্বন্ধে জানা, স্বাস্থ্যের ওপর এদের প্রভাব—এসব জানতে চাই। দিল্লির সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ১৬টি ব্র্যান্ডের জাংক ফুড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাগি টপ র্যামেন নুডলস, ম্যাকডোনাল্ড ফুডস, ফ্রায়েড চিকেন, হলদিরামের আলু ডুজিয়া।
পরীক্ষা করে অবাক হলো তারা: দেখা গেল, উৎপন্ন দ্রব্য সম্বন্ধে যে তথ্য দেখানো হয়েছে, তা সঠিক নয়। এসব দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাট নেই দাবি করলেও গবেষকেরা এগুলোর মধ্যে খুব বেশি ট্রান্সফ্যাট পেলেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই হিতকর নয়।
জনপ্রিয় সব নাশতা যেমন পটেটো চিপস, নুডলস, আলু ভুজিয়া, সফট ড্রিংক, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন—এসব খাবার যে মোটেই স্বাস্থ্যহিতকরী নয়, তা প্রমাণিত।
দেখা গেল, ম্যাগি নুডলসের ৮০ গ্রামের প্যাকেট যা প্রতিদিন অনেকে একাই সাবাড় করেন। এতে রয়েছে ৩ দশমিক ৫ গ্রাম লবণ, যা দৈনিক প্রস্তাবিত লবণ গ্রহণকে অনেকটাই ছাড়িয়ে যায়।
কেবল লবণই নয়, মূল সমস্যা হলো, ট্রান্সফ্যাট বা মন্দ ফ্যাট। প্যাকেটের ওপর লেখা থাকে লেমনে ট্রান্সফ্যাট নেই বা খুব কম বলা হলেও এদের মধ্যে ট্রান্সফ্যাট বাস্তবে অনেক বেশি।
যেমন তারা দেখলেন যে টপ র্যামেন নুডলসের দাবি, প্রতি ১০০ গ্রামে আছে শূন্য ট্রান্সফ্যাট, কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেল, রয়েছে শূন্য দশমিক ৭ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট। হলদিরামের ভুজেয়ার দাবি, কোনো ট্রান্সফ্যাট নেই। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেল, প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ২ দশমিক ৫ গ্রাম ট্রান্সফুড। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই) স্টাডিতে পাওয়া গেল, প্রতি ১০০ গ্রাম কোমল পানীয় কো ল্যায়সে (স্ন্যাক স্মার্টে) রয়েছে ৩ দশমিক ৭ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট—এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মান। কিন্তু পেপসি কো সে তথ্যটি ভোক্তাদের জানানোর জন্য দায়বোধ করেনি।
সিএসই গবেষকদের বক্তব্য: এত উচ্চমাত্রা ট্রান্সফ্যাট, সেই সঙ্গে প্রচুর লবণ। জনপ্রিয় এসব নাশতা-খাবার থেকে যে বিপজ্জনক উপকরণগুলো আসে, তা অস্বাস্থ্য তো ঘটায়ই, আবার কালক্রমে তা চরম পরিণতিরও কারণ হতে পারে।
বিজ্ঞানী চন্দ্রভূষণের বক্তব্য, পৃথিবীজুড়ে অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে যে ক্রমে ক্রমে অনেক তরুণ-তরুণী কম বয়সে হূদেরাগের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। এ বয়সে তাঁদের উৎপাদনশীল কর্ম করার কথা অথচ জাংক ফুড খেয়ে খেয়ে জীবনীশক্তি হারাচ্ছেন, যা প্রতিরোধযোগ্য।
অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি: আমাদের আহারের যে সংস্কৃতি, চিরায়ত যেসব খাবার, তা অনেক স্বাস্থ্যহিতকর; কেবল তা-ই নয়, অনেক বিষমুক্তও বটে। যে অধিবেশনে এই আলোচনা হয়েছে, এতে যোগ দিয়েছিলেন ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটান থেকে আগত ৫০ জন সাংবাদিক। এ অঞ্চলের প্রচলিত খাবার স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয়, স্বাস্থ্যকর তো বটেই। চিরায়ত অঞ্চলের খাবারের প্রশংসায় মুখর হলেন সম্মেলনে আগত অংশগ্রহণকারীরা।
অবশ্য ফাস্টফুড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, ফুড সেফটি ও স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন থেকেই এসব প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে তা যে সর্বাংশে সত্য নয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণা তথ্য হলো এর প্রমাণ। আমাদের দেশেও দেশি-বিদেশি এসব ব্র্যান্ডের খাবার বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এ প্রবণতা রোধ করা চাই, জনসচেতনতা সৃষ্টি করা চাই, তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যবিপদ থেকে রক্ষার জন্য।
আমরা সবাই জানি, জাংক ফুড মন্দ, তবু আমরা এসব খাবার খেয়েই চলি। কিন্তু কত খারাপ যে এসব খাবার, পুরো খবর আমরা জানিই না। পটেটো চিপস বা ম্যাগি নুডলসের প্যাকেটের মধ্যে পুষ্টি কতটুকু, যে দাবি ওদের প্রস্তুতকারকদের, তাও তো জানি না। এসব খাবার সম্বন্ধে জানা, স্বাস্থ্যের ওপর এদের প্রভাব—এসব জানতে চাই। দিল্লির সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ১৬টি ব্র্যান্ডের জাংক ফুড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাগি টপ র্যামেন নুডলস, ম্যাকডোনাল্ড ফুডস, ফ্রায়েড চিকেন, হলদিরামের আলু ডুজিয়া।
পরীক্ষা করে অবাক হলো তারা: দেখা গেল, উৎপন্ন দ্রব্য সম্বন্ধে যে তথ্য দেখানো হয়েছে, তা সঠিক নয়। এসব দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাট নেই দাবি করলেও গবেষকেরা এগুলোর মধ্যে খুব বেশি ট্রান্সফ্যাট পেলেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই হিতকর নয়।
জনপ্রিয় সব নাশতা যেমন পটেটো চিপস, নুডলস, আলু ভুজিয়া, সফট ড্রিংক, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন—এসব খাবার যে মোটেই স্বাস্থ্যহিতকরী নয়, তা প্রমাণিত।
দেখা গেল, ম্যাগি নুডলসের ৮০ গ্রামের প্যাকেট যা প্রতিদিন অনেকে একাই সাবাড় করেন। এতে রয়েছে ৩ দশমিক ৫ গ্রাম লবণ, যা দৈনিক প্রস্তাবিত লবণ গ্রহণকে অনেকটাই ছাড়িয়ে যায়।
কেবল লবণই নয়, মূল সমস্যা হলো, ট্রান্সফ্যাট বা মন্দ ফ্যাট। প্যাকেটের ওপর লেখা থাকে লেমনে ট্রান্সফ্যাট নেই বা খুব কম বলা হলেও এদের মধ্যে ট্রান্সফ্যাট বাস্তবে অনেক বেশি।
যেমন তারা দেখলেন যে টপ র্যামেন নুডলসের দাবি, প্রতি ১০০ গ্রামে আছে শূন্য ট্রান্সফ্যাট, কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেল, রয়েছে শূন্য দশমিক ৭ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট। হলদিরামের ভুজেয়ার দাবি, কোনো ট্রান্সফ্যাট নেই। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেল, প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ২ দশমিক ৫ গ্রাম ট্রান্সফুড। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই) স্টাডিতে পাওয়া গেল, প্রতি ১০০ গ্রাম কোমল পানীয় কো ল্যায়সে (স্ন্যাক স্মার্টে) রয়েছে ৩ দশমিক ৭ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট—এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মান। কিন্তু পেপসি কো সে তথ্যটি ভোক্তাদের জানানোর জন্য দায়বোধ করেনি।
সিএসই গবেষকদের বক্তব্য: এত উচ্চমাত্রা ট্রান্সফ্যাট, সেই সঙ্গে প্রচুর লবণ। জনপ্রিয় এসব নাশতা-খাবার থেকে যে বিপজ্জনক উপকরণগুলো আসে, তা অস্বাস্থ্য তো ঘটায়ই, আবার কালক্রমে তা চরম পরিণতিরও কারণ হতে পারে।
বিজ্ঞানী চন্দ্রভূষণের বক্তব্য, পৃথিবীজুড়ে অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে যে ক্রমে ক্রমে অনেক তরুণ-তরুণী কম বয়সে হূদেরাগের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। এ বয়সে তাঁদের উৎপাদনশীল কর্ম করার কথা অথচ জাংক ফুড খেয়ে খেয়ে জীবনীশক্তি হারাচ্ছেন, যা প্রতিরোধযোগ্য।
অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি: আমাদের আহারের যে সংস্কৃতি, চিরায়ত যেসব খাবার, তা অনেক স্বাস্থ্যহিতকর; কেবল তা-ই নয়, অনেক বিষমুক্তও বটে। যে অধিবেশনে এই আলোচনা হয়েছে, এতে যোগ দিয়েছিলেন ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটান থেকে আগত ৫০ জন সাংবাদিক। এ অঞ্চলের প্রচলিত খাবার স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয়, স্বাস্থ্যকর তো বটেই। চিরায়ত অঞ্চলের খাবারের প্রশংসায় মুখর হলেন সম্মেলনে আগত অংশগ্রহণকারীরা।
অবশ্য ফাস্টফুড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, ফুড সেফটি ও স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন থেকেই এসব প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে তা যে সর্বাংশে সত্য নয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণা তথ্য হলো এর প্রমাণ। আমাদের দেশেও দেশি-বিদেশি এসব ব্র্যান্ডের খাবার বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এ প্রবণতা রোধ করা চাই, জনসচেতনতা সৃষ্টি করা চাই, তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যবিপদ থেকে রক্ষার জন্য।
No comments