পবিত্র কোরআনের আলো-প্রত্যেক ইবাদতের সময়ই পোশাকে যথাসম্ভব সুসজ্জিত হওয়া উচিত
২৮. ওয়া ইযা ফাআ'লূ ফা-হিশাতান ক্বা-লূ ওয়াজাদনা আ'লাইহা আ-বা-আনা ওয়াল্লা-হু আমারানা বিহা; ক্বুল ইন্নাল্লা-হা লা-ইয়া'মুরু বিলফাহ্শা-য়ি; আতাক্বূলূনা আ'লাল্লা-হি মা লা তা'লামূন। ২৯. ক্বুল আমরা রাব্বী বিলকি্বছতি্ব; ওয়া আক্বীমূ উজূহাকুম ই'নদা কুলি্ল মাছজিদিন ওয়াদঊ'হু মুখলিসীনা লাহুদ্ দীনা; কামা বাদাআকুম তাঊ'দূন।
৩০. ফারীক্বান হাদা ওয়া ফারীক্বান হাক্কা আ'লাইহিমুদ্ দ্বালা-লাতু ইন্নাহুমুত্তাখাযুশ্ শাইয়া-ত্বীনা আওলিইয়া-আ মিন দূনিল্লাহি ওয়া ইয়াহ্ছাবূনা আন্নাহুম্ মুহতাদূন।
৩১. ইয়া-বানী আ-দামা খুযূ যীনাতাকুম ই'নদা কুলি্ল মাছজিদিন ওয়া কুলূ ওয়াশ্রাবূ ওয়ালা- তুছরিফূ; ইন্নাহূ লা-ইউহিব্বুল মুছরিফীন।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ২৮-৩১]
অনুবাদ : ২৮. তারা (অর্থাৎ কাফিররা) যখন কোনো অশ্লীল কাজ করে তখন বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের তা করতে দেখেছি (সুতরাং আমরা বুঝে নিয়েছি), স্বয়ং আল্লাহই আমাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন। (হে নবী!) আপনি বলুন, আল্লাহ তায়ালা কখনো অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহর নামে এমন কথা লাগাচ্ছ, যে সম্পর্কে তোমাদের কোনো জ্ঞান নেই!
২৯. আপনি বলে দিন, আমার প্রভু তো শুধু ন্যায়নিষ্ঠতার আদেশ দেন। (তাঁর আদেশগুলো এ রকম) প্রতিটি ইবাদতেই তোমরা তোমাদের লক্ষ্য স্থির রাখবে। আর এ রকম ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁকে ডাকবে যে আনুগত্য কেবল তাঁরই প্রাপ্য। যেভাবে তিনি তোমাদের প্রথমে সৃষ্টি করেছেন সেভাবেই তাঁর কাছে ফিরিয়ে নেবেন।
৩০. একদল লোককে তিনি সঠিক পথ দেখিয়েছেন, আর অন্য দলটি এমন যে তাদের জন্য পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। কারণ তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে। অথচ তারা মনে করে যে তারা সঠিক পথে আছে।
৩১. হে আদম সন্তানরা, তোমরা প্রত্যেক (আনুষ্ঠানিক) ইবাদতের সময় (যথাসম্ভব) পোশাকে সুসজ্জিত হবে। তোমরা খাও, পান করো, তবে কোনো অপচয় কোরো না। কেননা আল্লাহ তায়ালা অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোতেও সভ্য, শালীন পোশাক পরিধান করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে ইবাদতের সময় এবং মসজিদে গমনকালে সাধ্যমতো পোশাক-পরিচ্ছদ যাতে ভালো হয়, সে বিষয়ে আদেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ন্যায়নিষ্ঠতা ও সুষম সুন্দর সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, আরবে আতরাফ বলে কথিত গোত্রগুলোর নারী-পুরুষ সবাই কাবা শরিফ তাওয়াফ করত উলঙ্গ হয়ে। বিশেষ করে বনি ছাকিফ গোত্রসহ বেশ কয়েকটি গোত্রের জন্য এ ব্যবস্থাই নির্ধারিত ছিল। অন্যদিকে বনি আমের গোত্রের লোকরা ইহরাম অবস্থায় ঘি ও মাংস খেত না। এটাকে তারা ইবাদত ও তাজিম বলে মনে করত। তাদের এ কাজের নজির টেনে মুসলমানদের কেউ কেউ রাসুল (সা.)-কে বলছিলেন, এই তাজিম করা তো আমাদের জন্যই অধিকতর সংগত। এ পরিপ্রেক্ষিতেই এই আয়াতে বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
এখানে উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করার যে অপসংস্কৃতিটির কথা বলা হয়েছে, এটি চলে আসছিল বংশানুক্রমে যুগ যুগ ধরে। বংশানুক্রমে যা চলে আসছিল, সেটাই ছিল রেওয়াজটির পক্ষের দলিল। আর দীর্ঘকাল ধরে চলে আসার ফলে তারা বুঝত এবং বোঝাতে চেষ্টা করত যে আল্লাহ তায়ালা এ রকমই আদেশ করে থাকবেন।
২৯ নম্বর আয়াতে ইনসাফের প্রসঙ্গটা এসেছে। ইনসাফের বিষয়টা এখানে উল্লেখ করার একটা কারণ এ হতে পারে যে 'হুমস'ভুক্ত লোকেরা নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র এক নিয়ম এবং আতরাফদের জন্য অন্য আরেক নিয়ম চালু করেছিল, সেটাও তো ইনসাফের পরিপন্থী। কেবল হুমসের অভিজাত লোকেরা পোশাক পরে তাওয়াফ করতে পারবে আর আতরাফদের তাওয়াফ করতে হবে উলঙ্গ হয়ে, এটা তো চরম অন্যায় ও বৈষম্যমূলক রেওয়াজ। গুনাহর কারণে যদি আতরাফদের বস্ত্র অপবিত্র হয়ে গিয়ে থাকে, তবে আশরাফদের বস্ত্রও তো একই কারণে অপবিত্র হওয়ার কথা। অথচ তারা গুনাহর সব দায় চাপাচ্ছিল আতরাফদের ওপর।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৩১. ইয়া-বানী আ-দামা খুযূ যীনাতাকুম ই'নদা কুলি্ল মাছজিদিন ওয়া কুলূ ওয়াশ্রাবূ ওয়ালা- তুছরিফূ; ইন্নাহূ লা-ইউহিব্বুল মুছরিফীন।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ২৮-৩১]
অনুবাদ : ২৮. তারা (অর্থাৎ কাফিররা) যখন কোনো অশ্লীল কাজ করে তখন বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের তা করতে দেখেছি (সুতরাং আমরা বুঝে নিয়েছি), স্বয়ং আল্লাহই আমাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন। (হে নবী!) আপনি বলুন, আল্লাহ তায়ালা কখনো অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেন না। তোমরা কি আল্লাহর নামে এমন কথা লাগাচ্ছ, যে সম্পর্কে তোমাদের কোনো জ্ঞান নেই!
২৯. আপনি বলে দিন, আমার প্রভু তো শুধু ন্যায়নিষ্ঠতার আদেশ দেন। (তাঁর আদেশগুলো এ রকম) প্রতিটি ইবাদতেই তোমরা তোমাদের লক্ষ্য স্থির রাখবে। আর এ রকম ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁকে ডাকবে যে আনুগত্য কেবল তাঁরই প্রাপ্য। যেভাবে তিনি তোমাদের প্রথমে সৃষ্টি করেছেন সেভাবেই তাঁর কাছে ফিরিয়ে নেবেন।
৩০. একদল লোককে তিনি সঠিক পথ দেখিয়েছেন, আর অন্য দলটি এমন যে তাদের জন্য পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। কারণ তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে। অথচ তারা মনে করে যে তারা সঠিক পথে আছে।
৩১. হে আদম সন্তানরা, তোমরা প্রত্যেক (আনুষ্ঠানিক) ইবাদতের সময় (যথাসম্ভব) পোশাকে সুসজ্জিত হবে। তোমরা খাও, পান করো, তবে কোনো অপচয় কোরো না। কেননা আল্লাহ তায়ালা অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোতেও সভ্য, শালীন পোশাক পরিধান করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে ইবাদতের সময় এবং মসজিদে গমনকালে সাধ্যমতো পোশাক-পরিচ্ছদ যাতে ভালো হয়, সে বিষয়ে আদেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ন্যায়নিষ্ঠতা ও সুষম সুন্দর সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, আরবে আতরাফ বলে কথিত গোত্রগুলোর নারী-পুরুষ সবাই কাবা শরিফ তাওয়াফ করত উলঙ্গ হয়ে। বিশেষ করে বনি ছাকিফ গোত্রসহ বেশ কয়েকটি গোত্রের জন্য এ ব্যবস্থাই নির্ধারিত ছিল। অন্যদিকে বনি আমের গোত্রের লোকরা ইহরাম অবস্থায় ঘি ও মাংস খেত না। এটাকে তারা ইবাদত ও তাজিম বলে মনে করত। তাদের এ কাজের নজির টেনে মুসলমানদের কেউ কেউ রাসুল (সা.)-কে বলছিলেন, এই তাজিম করা তো আমাদের জন্যই অধিকতর সংগত। এ পরিপ্রেক্ষিতেই এই আয়াতে বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
এখানে উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করার যে অপসংস্কৃতিটির কথা বলা হয়েছে, এটি চলে আসছিল বংশানুক্রমে যুগ যুগ ধরে। বংশানুক্রমে যা চলে আসছিল, সেটাই ছিল রেওয়াজটির পক্ষের দলিল। আর দীর্ঘকাল ধরে চলে আসার ফলে তারা বুঝত এবং বোঝাতে চেষ্টা করত যে আল্লাহ তায়ালা এ রকমই আদেশ করে থাকবেন।
২৯ নম্বর আয়াতে ইনসাফের প্রসঙ্গটা এসেছে। ইনসাফের বিষয়টা এখানে উল্লেখ করার একটা কারণ এ হতে পারে যে 'হুমস'ভুক্ত লোকেরা নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র এক নিয়ম এবং আতরাফদের জন্য অন্য আরেক নিয়ম চালু করেছিল, সেটাও তো ইনসাফের পরিপন্থী। কেবল হুমসের অভিজাত লোকেরা পোশাক পরে তাওয়াফ করতে পারবে আর আতরাফদের তাওয়াফ করতে হবে উলঙ্গ হয়ে, এটা তো চরম অন্যায় ও বৈষম্যমূলক রেওয়াজ। গুনাহর কারণে যদি আতরাফদের বস্ত্র অপবিত্র হয়ে গিয়ে থাকে, তবে আশরাফদের বস্ত্রও তো একই কারণে অপবিত্র হওয়ার কথা। অথচ তারা গুনাহর সব দায় চাপাচ্ছিল আতরাফদের ওপর।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments