বৈশাখের বাদ্য by মারুফ ইসলাম
আর মাত্র দুটি দিন। তার পরই পয়লা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। তাকে বরণ করতে হবে না? নিশ্চয়ই! চৈত্রের রোদেলা আকাশ তাই হঠাৎ ছেয়ে যাচ্ছে কালো মেঘে। চাতক ক্ষণে ক্ষণে করে উঠছে আর্তনাদ ‘ফটিক জল’ বলে। প্রকৃতি ও প্রাণিকুলজুড়ে বেসুমার প্রস্তুতি বৈশাখকে বরণ করার।
সেই সঙ্গে প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরাও। কে না জানে, প্রতিবছর সাড়ম্বরে বৈশাখকে বরণ করার গুরুদায়িত্ব বর্তায় চারুকলার কোনো এক নির্দিষ্ট ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাঁধে। এবারে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া ১১তম ব্যাচ। তাঁরাই আয়োজন করছেন ১৪১৯ বঙ্গাব্দকে বরণ করার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’। তাঁদের অবশ্য সহযোগিতা করছেন সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আর প্রাণের টানে ছুটে আসা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তো আছেনই। তাঁরাও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন অনুজদের। আর এভাবেই গড়ে উঠছে ছোট-বড়-নতুন-পুরোনোদের মাঝে আত্মার সেতুবন্ধন। সব মিলিয়ে চারুকলার প্রাঙ্গণজুড়ে তাই এখন ব্যাপক কর্মকোলাহল।
সেই কোলাহলের খানিক আঁচ নিতেই সেদিন হাজিরা দিই চারুকলায়। মূল ফটক ধরে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল কর্মযজ্ঞের নমুনা। একদল শিক্ষার্থীর কেউ সরায় রং করছেন, কেউ ক্যানভাসে ফুটে তুলছেন চিত্র। শিল্পকর্ম শেষ করে সেসব আবার টানিয়ে রাখছেন দেয়ালে। আর টেবিলজুড়ে আগে থেকেই সাজিয়ে রেখেছেন নিজেদের হাতে বানানো হাতি, ঘোড়া, ব্যাঙ, কচ্ছপ, সাইকেলসহ নানা ধরনের মৃৎশিল্প। এসবই বিক্রির জন্য। জানালেন গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া মিথুন দত্ত। তিনি আরও জানালেন, এই বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়েই তাঁরা মূল আয়োজনের ব্যয়ভার পরিচালনা করেন।
মিথুনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মূল চত্বরে প্রবেশ করতেই ভিরমি খাওয়ার দশা! এখানে কর্মযজ্ঞের পসরা আরও ব্যাপক। একপাশে তৈরি হচ্ছে একটি বিশালাকৃতির সাম্পানের কাঠামো, আরেক পাশে টাট্টু ঘোড়া। অদূরে বারান্দার একপাশে তৈরি হচ্ছে কাগজের মণ্ড দিয়ে মুখোশ, আরেক পাশে সেই মুখোশ রাঙিয়ে তোলার কাজ।
পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই সাম্পানের কাছে। আপাতত বাঁশ, বেত ও কাঠ দিয়ে সাম্পানের শরীর নির্মাণ করছেন শ্যামলচন্দ্র সরকার, রামীজ আফরোজ, অন্তু মোদক, ইয়াসিন, পলাশসহ ভাস্কর্য বিভাগের আরও বেশ কজন শিক্ষার্থী। তাঁরা জানালেন, বাংলাদেশের সমুদ্রজয় উপলক্ষে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে সাম্পানকে। এ ছাড়া হাতি, ঘোড়া, বাঘ, মাছ, কাকতারুয়া ইত্যাদি তো থাকবেই।
এবার যাই মুখোশ নির্মাতাদের কাছে। কাগজের মণ্ড দিয়ে ‘পেপার ম্যাশ’ তৈরি করছেন সৈয়দ মুর্তাজা মনোয়ার। ভাস্কর্য বিভাগের মাস্টার্সের এই শিক্ষার্থীকে সাহায্য করছেন বিভিন্ন বর্ষের বান্টি, মনির, নিশান, আর্নি, স্বরূপা, রুবা ও ইমন। উপল বলেন, ‘হাতে-কলমে কাজ শেখার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ সময়ের দলগত কাজ পরবর্তী জীবনে খুব কাজে দেয়। তা ছাড়া নতুন যারা ভর্তি হয়েছে, প্রথম বর্ষে পড়ছে, তারা পরিচিত হতে পারে বড়দের সঙ্গে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগটাও বাড়ে।’
উপলের কথার প্রতিধ্বনি মিলল সিনথিয়া আরেফিনের কণ্ঠে। ‘প্রায় এক মাস ধরে একসঙ্গে কাজ করতে হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই একটা আন্তসম্পর্ক তৈরি হয় সবার সঙ্গে। তা ছাড়া শিক্ষকেরা সব সময় আমাদের কাজের তদারকি করেন বলে তাঁদের সঙ্গেও একটা আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হয়।’ সিনথিয়া কাগজ কেটে একটি পেঁচার মুখোশ তৈরি করছিলেন। এ রকম পেঁচা, খরগোশ, মাছ ইত্যাদি তৈরি করছেন ও রং করছেন নামিরাহ ফারজানা, সোহান শাহরিয়ার, সুভা ও নাইমুন নাহার।
এই শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই প্রতিবছর সফল হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। জেগে ওঠে দেশ, গেয়ে ওঠে গান, এসো হে বৈশাখ এসো এসো...।
সেই কোলাহলের খানিক আঁচ নিতেই সেদিন হাজিরা দিই চারুকলায়। মূল ফটক ধরে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল কর্মযজ্ঞের নমুনা। একদল শিক্ষার্থীর কেউ সরায় রং করছেন, কেউ ক্যানভাসে ফুটে তুলছেন চিত্র। শিল্পকর্ম শেষ করে সেসব আবার টানিয়ে রাখছেন দেয়ালে। আর টেবিলজুড়ে আগে থেকেই সাজিয়ে রেখেছেন নিজেদের হাতে বানানো হাতি, ঘোড়া, ব্যাঙ, কচ্ছপ, সাইকেলসহ নানা ধরনের মৃৎশিল্প। এসবই বিক্রির জন্য। জানালেন গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া মিথুন দত্ত। তিনি আরও জানালেন, এই বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়েই তাঁরা মূল আয়োজনের ব্যয়ভার পরিচালনা করেন।
মিথুনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মূল চত্বরে প্রবেশ করতেই ভিরমি খাওয়ার দশা! এখানে কর্মযজ্ঞের পসরা আরও ব্যাপক। একপাশে তৈরি হচ্ছে একটি বিশালাকৃতির সাম্পানের কাঠামো, আরেক পাশে টাট্টু ঘোড়া। অদূরে বারান্দার একপাশে তৈরি হচ্ছে কাগজের মণ্ড দিয়ে মুখোশ, আরেক পাশে সেই মুখোশ রাঙিয়ে তোলার কাজ।
পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই সাম্পানের কাছে। আপাতত বাঁশ, বেত ও কাঠ দিয়ে সাম্পানের শরীর নির্মাণ করছেন শ্যামলচন্দ্র সরকার, রামীজ আফরোজ, অন্তু মোদক, ইয়াসিন, পলাশসহ ভাস্কর্য বিভাগের আরও বেশ কজন শিক্ষার্থী। তাঁরা জানালেন, বাংলাদেশের সমুদ্রজয় উপলক্ষে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে সাম্পানকে। এ ছাড়া হাতি, ঘোড়া, বাঘ, মাছ, কাকতারুয়া ইত্যাদি তো থাকবেই।
এবার যাই মুখোশ নির্মাতাদের কাছে। কাগজের মণ্ড দিয়ে ‘পেপার ম্যাশ’ তৈরি করছেন সৈয়দ মুর্তাজা মনোয়ার। ভাস্কর্য বিভাগের মাস্টার্সের এই শিক্ষার্থীকে সাহায্য করছেন বিভিন্ন বর্ষের বান্টি, মনির, নিশান, আর্নি, স্বরূপা, রুবা ও ইমন। উপল বলেন, ‘হাতে-কলমে কাজ শেখার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ সময়ের দলগত কাজ পরবর্তী জীবনে খুব কাজে দেয়। তা ছাড়া নতুন যারা ভর্তি হয়েছে, প্রথম বর্ষে পড়ছে, তারা পরিচিত হতে পারে বড়দের সঙ্গে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগটাও বাড়ে।’
উপলের কথার প্রতিধ্বনি মিলল সিনথিয়া আরেফিনের কণ্ঠে। ‘প্রায় এক মাস ধরে একসঙ্গে কাজ করতে হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই একটা আন্তসম্পর্ক তৈরি হয় সবার সঙ্গে। তা ছাড়া শিক্ষকেরা সব সময় আমাদের কাজের তদারকি করেন বলে তাঁদের সঙ্গেও একটা আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হয়।’ সিনথিয়া কাগজ কেটে একটি পেঁচার মুখোশ তৈরি করছিলেন। এ রকম পেঁচা, খরগোশ, মাছ ইত্যাদি তৈরি করছেন ও রং করছেন নামিরাহ ফারজানা, সোহান শাহরিয়ার, সুভা ও নাইমুন নাহার।
এই শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই প্রতিবছর সফল হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। জেগে ওঠে দেশ, গেয়ে ওঠে গান, এসো হে বৈশাখ এসো এসো...।
No comments