উৎপাদন প্রকৌশল যুগের পেশা
কোনো দেশের উন্নয়ন তার উৎপাদন-ব্যবস্থার ওপরও অনেকাংশে নির্ভর করে। যে দেশের উৎপাদন যত বেশি, সে দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত শক্তিশালী। তাই উৎপাদন বাড়াতে পৃথিবীর দেশে দেশে বেড়ে চলেছে শিল্প-কলকারখানা। ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনা।
কিন্তু কোনো পণ্য উৎপাদন করতে গেলে মান নিয়ন্ত্রণ, যন্ত্রের সর্বোচ্চ ব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আর এসব ধাপে দরকার হয় দক্ষ উৎপাদন প্রকৌশলী। তাই পেশা হিসেবে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে উৎপাদন প্রকৌশল বা প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং। একটি ওয়েবসাইটে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পেশার মান ও পেশাজীবীর সংখ্যার হিসেবে প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বা উৎপাদন প্রকৌশল তিন নম্বর স্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশেও শিল্প-কলকারখানার প্রসারের ফলে উৎপাদন প্রকৌশল পেশায় কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাফিস আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশে উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে পেশা হিসেবে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে পড়াশোনা করে যে কেউ তাঁর কর্মজীবন নিশ্চিন্ত করতে পারেন। কারণ, একজন পেশাজীবী হিসেবে অর্থ, সম্মান, সৃজনশীলতা—সবকিছুর সুযোগ রয়েছে এখানে।’ তিনি বলেন, কাজের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়টি শিল্পকেন্দ্রিক হওয়ায় কোথাও কোথাও এটি শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল নামেও পরিচিত।
কাজটা কী: একজন উৎপাদন প্রকৌশলীকে একটি শিল্প-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে লোকবল নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ জনবল তৈরি ও জনবলের সঠিক ব্যবহার, যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়, প্রশাসন, বাজারজাতকরণ, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিপণন পরিকল্পনা, পণ্য ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা-মানোন্নয়ন প্রভৃতি কাজ করতে হয়। তবে প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিভেদে একজন উৎপাদন প্রকৌশলীর কাজের তারতম্য হতে পারে।
কাজের সুযোগ যেখানে: তৈরি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ভিয়েলাটেক্স গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান শিরিন আক্তার এ সম্পর্কে বলেন, ‘দেশে হালকা, মাঝারি ও ভারী—তিন ধরনের শিল্পেই স্নাতক ডিগ্রিধারী শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশলীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যকয়েকটি হলো—ভোগ্যপণ্য ও প্রসাধন, জাহাজশিল্প, তৈরি পোশাক ইত্যাদি। এ ছাড়া ব্যাংক, বিমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সাপ্লাই চেইন শপগুলোয়ও এ বিষয়ে কাজের সুযোগ রয়েছে। উৎপাদন ও শিল্পসংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কর্মকর্তা, প্রক্রিয়াজাতকরণ কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করা যাবে।’
বেতন কেমন: উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার পর কাউকে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় না বলে জানান বুয়েটের আইপিই বিভাগের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর। তিনি জানান, শুরুতেই একজন উৎপাদন প্রকৌশলী ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন। তবে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারলে কয়েক বছরের মধ্যে লাখ টাকা বেতন পাওয়া সম্ভব।
আছে পড়ার সুযোগ: শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে দেশের বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো হলো, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে চার বছরের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হতে হয়। এ ছাড়া উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে বাংলাদেশ শিল্প ও কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে। আর খুব শিগগির ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কোর্স চালু হবে বলে জানান নিখিল রঞ্জন ধর।
যা পড়ানো হয়: উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে মূলত পণ্যের পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা আর উৎপাদন সম্পর্কে পড়ানো হয়। সেই সঙ্গে পণ্যের ডিজাইন ও মানোন্নয়ন, পণ্য বাছাই, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে অভিযোজন, পরিকল্পনা আর ব্যবস্থাপনা এগুলোও শেখানো হয় এ ধরনের কোর্সে।
চাই বাড়তি কিছু যোগ্যতা: বাড়তি কিছু যোগ্যতা থাকলে এ পেশায় খুব দ্রুত ভালো করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপিই বিভাগের প্রভাষক ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের কাজে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় যোগাযোগের। তাই পড়ালেখায় ভালো করার পাশাপাশি যোগাযোগেও দক্ষ হতে হবে।’ এ ছাড়া তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে সৃজনশীলতা আর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাও থাকা চাই।
বাংলাদেশেও শিল্প-কলকারখানার প্রসারের ফলে উৎপাদন প্রকৌশল পেশায় কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাফিস আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশে উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে কাজের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে পেশা হিসেবে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে পড়াশোনা করে যে কেউ তাঁর কর্মজীবন নিশ্চিন্ত করতে পারেন। কারণ, একজন পেশাজীবী হিসেবে অর্থ, সম্মান, সৃজনশীলতা—সবকিছুর সুযোগ রয়েছে এখানে।’ তিনি বলেন, কাজের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়টি শিল্পকেন্দ্রিক হওয়ায় কোথাও কোথাও এটি শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল নামেও পরিচিত।
কাজটা কী: একজন উৎপাদন প্রকৌশলীকে একটি শিল্প-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে লোকবল নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ জনবল তৈরি ও জনবলের সঠিক ব্যবহার, যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়, প্রশাসন, বাজারজাতকরণ, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিপণন পরিকল্পনা, পণ্য ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা-মানোন্নয়ন প্রভৃতি কাজ করতে হয়। তবে প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিভেদে একজন উৎপাদন প্রকৌশলীর কাজের তারতম্য হতে পারে।
কাজের সুযোগ যেখানে: তৈরি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ভিয়েলাটেক্স গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান শিরিন আক্তার এ সম্পর্কে বলেন, ‘দেশে হালকা, মাঝারি ও ভারী—তিন ধরনের শিল্পেই স্নাতক ডিগ্রিধারী শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশলীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যকয়েকটি হলো—ভোগ্যপণ্য ও প্রসাধন, জাহাজশিল্প, তৈরি পোশাক ইত্যাদি। এ ছাড়া ব্যাংক, বিমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সাপ্লাই চেইন শপগুলোয়ও এ বিষয়ে কাজের সুযোগ রয়েছে। উৎপাদন ও শিল্পসংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কর্মকর্তা, প্রক্রিয়াজাতকরণ কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করা যাবে।’
বেতন কেমন: উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার পর কাউকে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় না বলে জানান বুয়েটের আইপিই বিভাগের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর। তিনি জানান, শুরুতেই একজন উৎপাদন প্রকৌশলী ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন। তবে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারলে কয়েক বছরের মধ্যে লাখ টাকা বেতন পাওয়া সম্ভব।
আছে পড়ার সুযোগ: শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে দেশের বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো হলো, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে চার বছরের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হতে হয়। এ ছাড়া উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে বাংলাদেশ শিল্প ও কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে। আর খুব শিগগির ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কোর্স চালু হবে বলে জানান নিখিল রঞ্জন ধর।
যা পড়ানো হয়: উৎপাদন প্রকৌশল বিষয়ে মূলত পণ্যের পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা আর উৎপাদন সম্পর্কে পড়ানো হয়। সেই সঙ্গে পণ্যের ডিজাইন ও মানোন্নয়ন, পণ্য বাছাই, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে অভিযোজন, পরিকল্পনা আর ব্যবস্থাপনা এগুলোও শেখানো হয় এ ধরনের কোর্সে।
চাই বাড়তি কিছু যোগ্যতা: বাড়তি কিছু যোগ্যতা থাকলে এ পেশায় খুব দ্রুত ভালো করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপিই বিভাগের প্রভাষক ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের কাজে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় যোগাযোগের। তাই পড়ালেখায় ভালো করার পাশাপাশি যোগাযোগেও দক্ষ হতে হবে।’ এ ছাড়া তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে সৃজনশীলতা আর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাও থাকা চাই।
No comments