ইতিউতি-শত্রু বাতাসে পানিতে জমিতে by আতাউস সামাদ
দিনকয়েক আগে ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় একটা ছবি দেখে চমকে গিয়েছিলাম। আলোকচিত্রটিতে দেখা যাচ্ছিল, এক রজক ঢাকার পাশ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা নদীতে কাপড় ধুচ্ছেন। এই অংশটুকু খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি বিন্দুমাত্র অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়।
কিন্তু ছবিটা দেখে ভয় লাগল এ জন্য যে মনে হলো, যেন কেউ আলকাতরার মধ্যে চুবিয়ে সাদা কাপড় ধুচ্ছে। চাদরগুলোর শুভ্রতার বিপরীতে বুড়িগঙ্গার বর্তমান প্রবাহের ঘোর কৃষ্ণ বর্ণ বেশি করে বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল। যদিও পরে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছিল, অত কালো পানিতে সাদা কাপড় পরিষ্কার হয় কী করে; কিন্তু সেটাও মুছে গেল এই দুশ্চিন্তার দরুন যে ঢাকার পাশের বুড়িগঙ্গায় যে বস্ত্র প্রক্ষালন করা হয় তা কি আদৌ পরিষ্কার হয়? ওই কাপড়ে কি অসংখ্য রোগবীজাণু এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু দৃশ্যমান নয়_এমন রাসায়নিক দ্রব্য লেগে থাকে না।
পত্রিকায় ওই ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার দিনকয়েক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক প্রাক্তন ছাত্রী বলছিলেন যে তাঁদের সমিতির সদস্যরা মিলে কয়েক দিন আগে নৌভ্রমণে গিয়েছিলেন মেঘনা পর্যন্ত। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় এর কালো পানি দেখে মন তো খারাপ হচ্ছিলই, তদুপরি এক ঝাঁঝালো ও তীব্র দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাঁর ওই মন্তব্য শোনার দিনকয়েক পর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা একটা রিপোর্টে জানায় যে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে এখন পানি প্রবাহিত হয় না। এতে যা বয়ে যাচ্ছে তা হলো একধরনের তরল বিষাক্ত রাসায়নিক।
ইতিমধ্যে একদিন ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ধরে গাজীপুর ছাড়িয়ে কিছু দূর পর্যন্ত গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় টঙ্গী সেতুর ওপর থেকে দুই পাশে তুরাগ নদীর যতটুকু দেখা গেল, তার সবটাই কালো। একই রকমভাবে সাভার এলাকায়ও এখন কলকারখানা থেকে নিঃসৃত বর্জ্যের দরুন সব জলাধারের রং কালো হয়ে গেছে। কড্ডা এলাকায় অসংখ্য ইটখোলায় ব্যবহৃত কয়লার ধোঁয়ায় গন্ধকের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেখানকার আম, কাঁঠালগাছগুলোতে আজকাল প্রায় ফল হয়ই না। তাহলে কি বাতাসেও দূষণ ছড়িয়েছে বেশ? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমি এ মুহূর্তে জানি না। তবে তেমন হতেও পারে।
এ প্রসঙ্গে বছরসাতেক আগের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ছে। কী মনে করে জানি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ যে নতুন রাস্তাটা হয়েছে, ওটা দিয়ে মুন্সীগঞ্জের পথে যাত্রা করছিলাম। নারায়ণগঞ্জ এলাকা পার হওয়ার পর একটা সেতু মেরামত হচ্ছিল বলে মাঝপথ থেকেই ফিরে আসতে হলো। কিন্তু সেদিন বেশ বিস্মিত হয়েছিলাম পথের পাশের খাল, নালা ও ডোবার পানির কালো রং দেখে। ওই অভিজ্ঞতার পর ভাবলাম, ঢাকার উত্তর দিকটাও একটু দেখে আসি। তাই সাভার হয়ে কালিয়াকৈরের পথ ঘুরে চন্দ্রা ও জয়দেবপুর হয়ে ঢাকায় ফিরলাম। পথে দেখলাম অসংখ্য ইটখোলা। সবগুলোর চিমনি দিয়ে গলগল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই আকাশও ঢেকে যাচ্ছে। বাড়ি ফিরে যখন গাড়ি থেকে নামতে যাব, তখন দেখি গায়ের জামায় ছোট ছোট কালো ফোঁটা। ঝাড়া দিতেই সেগুলো দাগ হয়ে জামাটায় বিচিত্র নকশা তৈরি করে দিল। আর গাড়ির আসন ছেড়ে যখন উঠে দাঁড়ালাম, তখন কোঁচড় থেকে কালো কালো গুঁড়ো কয়লা ঝরে পড়ল। আমি এটুকু বুঝি যে ওই পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমাদের রাজধানী ঢাকা শহরের উন্নয়ন, সরকারের অসংখ্য দালান ও ডেভেলপারদের বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করতে ইটের অফুরান সরবরাহ দরকার। ঢাকার বাইরেও মহাসড়কগুলোর পাশে ইটখোলা দেখা যায় বিস্তর। সব সরকারের আমলেই আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচির বড় অংশ হলো, রাস্তা পাকা করা আর কালভার্ট বানানো। তার পরই বোধ হয় আসে সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের রেস্ট হাউস, ডাকবাংলো, পরিবার পরিকল্পনাকেন্দ্র এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ। তাই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইট বানানোর ব্যবসাটা আজও রমরমা। সেই সঙ্গে ক্ষয়ে যাচ্ছে চাষাবাদযোগ্য জমি আর বায়ুদূষণে নষ্ট হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য। বৃক্ষরাজি ও গৃহপালিত জীবজন্তুও রেহাই পাচ্ছে না।
কিন্তু পরিবেশদূষণ সম্পর্কে সর্বশেষ যে খবরটা পড়লাম, তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ৩০ মার্চ, ২০১১ তারিখে একটি সংবাদের শিরোনাম 'পাবনার ছলিমপুর এখন ছাইনগর, চাতালের ছাইয়ে ১৫ বছরে তিন হাজার মানুষ অন্ধ'। খবরের বিস্তারিত অংশে জানানো হয়েছে, 'উত্তরবঙ্গের ধান চাতালের বৃহৎ মোকাম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুরের জয়নগর আর ছলিমপুর ইউনিয়নেই রয়েছে সাড়ে চার শ ধানের চাতাল মিল। এই মিলগুলো ঐতিহ্যবাহী আই কে রোডের দুই পাশ দিয়ে অবস্থিত। ধান চাতালের মালিকরা ধান সেদ্ধ করার পর ধানের ছাইগুলো স্তূপ করে রেখেছে আই কে রোডের দুই পাশে। এই ছাই চৈত্রের দাবদাহে ও বাতাসে উড়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। আশপাশের প্রায় বাড়িঘরই ছাইয়ে ডুবে যাচ্ছে।' রিপোর্টটিতে ঈশ্বরদী আই হসপিটাল ও ফ্যাকো সেন্টারের এবং ঈশ্বরদী চক্ষু হাসপাতালের সূত্র ধরে বলা হয়েছে, প্রতিদিনই শত শত রোগী আসছে এবং সবার চোখে একই ধরনের ছাই পাওয়া যাচ্ছে।
দেশে মানুষ বাড়ছে। খাদ্যসামগ্রী, বিশেষ করে চালের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশে ধানের উৎপাদনও বেড়েছে, যা আমাদের জন্য সত্যি সত্যিই স্বস্তি ও আনন্দের কথা। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি উন্নয়নে আমাদের যেটুকু সাফল্য আছে তার মধ্যে অন্যতম। বড় কথা হলো, আমরা দুমুঠো খেয়ে বাঁচতে পারছি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে আমাদেরই কিছু দেশবাসীকে অন্ধ হয়ে যেতে দেব তা তো হয় না।
আজকাল আর খোঁজাখুঁজি করে জানতে হয় না, খবরের কাগজ ও টেলিভিশনে পরিবেশদূষণের ভয়াবহ সব তথ্য রোজই প্রকাশিত বা প্রচারিত হচ্ছে। নিজেরাও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। সরকারও বলছে যে তারাও এসব সমস্যার কথা জানে। তবুও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। কিন্তু তা কেন? তা কি আমরা টাকার জোর আর মামার জোরের কাছে হেরে যাচ্ছি সে জন্য? সরকার কেন ওই পরিবেশদূষণকারীদের তাদের মুনাফার একটা অংশ ব্যয় করে বর্জ্য শোধন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বাধ্য করছে না। কালো টাকাগুলো সাদা কাজে ব্যবহার করালেই তো হয়। আশা করি, সরকারের স্মরণ আছে যে দুর্নীতির তালিকায় আমরা তলানির চেয়ে বেশি ওপরে নেই। সম্প্রতি জীবনযাপনের দিক থেকে ঢাকা শহর বিশ্বের দ্বিতীয় নিকৃষ্টতম শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখন আমরা কি দূষিত পরিবেশের দেশ বলেও পরিচিত হব?
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
পত্রিকায় ওই ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার দিনকয়েক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক প্রাক্তন ছাত্রী বলছিলেন যে তাঁদের সমিতির সদস্যরা মিলে কয়েক দিন আগে নৌভ্রমণে গিয়েছিলেন মেঘনা পর্যন্ত। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় এর কালো পানি দেখে মন তো খারাপ হচ্ছিলই, তদুপরি এক ঝাঁঝালো ও তীব্র দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাঁর ওই মন্তব্য শোনার দিনকয়েক পর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা একটা রিপোর্টে জানায় যে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে এখন পানি প্রবাহিত হয় না। এতে যা বয়ে যাচ্ছে তা হলো একধরনের তরল বিষাক্ত রাসায়নিক।
ইতিমধ্যে একদিন ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ধরে গাজীপুর ছাড়িয়ে কিছু দূর পর্যন্ত গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় টঙ্গী সেতুর ওপর থেকে দুই পাশে তুরাগ নদীর যতটুকু দেখা গেল, তার সবটাই কালো। একই রকমভাবে সাভার এলাকায়ও এখন কলকারখানা থেকে নিঃসৃত বর্জ্যের দরুন সব জলাধারের রং কালো হয়ে গেছে। কড্ডা এলাকায় অসংখ্য ইটখোলায় ব্যবহৃত কয়লার ধোঁয়ায় গন্ধকের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেখানকার আম, কাঁঠালগাছগুলোতে আজকাল প্রায় ফল হয়ই না। তাহলে কি বাতাসেও দূষণ ছড়িয়েছে বেশ? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমি এ মুহূর্তে জানি না। তবে তেমন হতেও পারে।
এ প্রসঙ্গে বছরসাতেক আগের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ছে। কী মনে করে জানি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ যে নতুন রাস্তাটা হয়েছে, ওটা দিয়ে মুন্সীগঞ্জের পথে যাত্রা করছিলাম। নারায়ণগঞ্জ এলাকা পার হওয়ার পর একটা সেতু মেরামত হচ্ছিল বলে মাঝপথ থেকেই ফিরে আসতে হলো। কিন্তু সেদিন বেশ বিস্মিত হয়েছিলাম পথের পাশের খাল, নালা ও ডোবার পানির কালো রং দেখে। ওই অভিজ্ঞতার পর ভাবলাম, ঢাকার উত্তর দিকটাও একটু দেখে আসি। তাই সাভার হয়ে কালিয়াকৈরের পথ ঘুরে চন্দ্রা ও জয়দেবপুর হয়ে ঢাকায় ফিরলাম। পথে দেখলাম অসংখ্য ইটখোলা। সবগুলোর চিমনি দিয়ে গলগল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই আকাশও ঢেকে যাচ্ছে। বাড়ি ফিরে যখন গাড়ি থেকে নামতে যাব, তখন দেখি গায়ের জামায় ছোট ছোট কালো ফোঁটা। ঝাড়া দিতেই সেগুলো দাগ হয়ে জামাটায় বিচিত্র নকশা তৈরি করে দিল। আর গাড়ির আসন ছেড়ে যখন উঠে দাঁড়ালাম, তখন কোঁচড় থেকে কালো কালো গুঁড়ো কয়লা ঝরে পড়ল। আমি এটুকু বুঝি যে ওই পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমাদের রাজধানী ঢাকা শহরের উন্নয়ন, সরকারের অসংখ্য দালান ও ডেভেলপারদের বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করতে ইটের অফুরান সরবরাহ দরকার। ঢাকার বাইরেও মহাসড়কগুলোর পাশে ইটখোলা দেখা যায় বিস্তর। সব সরকারের আমলেই আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচির বড় অংশ হলো, রাস্তা পাকা করা আর কালভার্ট বানানো। তার পরই বোধ হয় আসে সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের রেস্ট হাউস, ডাকবাংলো, পরিবার পরিকল্পনাকেন্দ্র এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ। তাই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইট বানানোর ব্যবসাটা আজও রমরমা। সেই সঙ্গে ক্ষয়ে যাচ্ছে চাষাবাদযোগ্য জমি আর বায়ুদূষণে নষ্ট হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য। বৃক্ষরাজি ও গৃহপালিত জীবজন্তুও রেহাই পাচ্ছে না।
কিন্তু পরিবেশদূষণ সম্পর্কে সর্বশেষ যে খবরটা পড়লাম, তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ৩০ মার্চ, ২০১১ তারিখে একটি সংবাদের শিরোনাম 'পাবনার ছলিমপুর এখন ছাইনগর, চাতালের ছাইয়ে ১৫ বছরে তিন হাজার মানুষ অন্ধ'। খবরের বিস্তারিত অংশে জানানো হয়েছে, 'উত্তরবঙ্গের ধান চাতালের বৃহৎ মোকাম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুরের জয়নগর আর ছলিমপুর ইউনিয়নেই রয়েছে সাড়ে চার শ ধানের চাতাল মিল। এই মিলগুলো ঐতিহ্যবাহী আই কে রোডের দুই পাশ দিয়ে অবস্থিত। ধান চাতালের মালিকরা ধান সেদ্ধ করার পর ধানের ছাইগুলো স্তূপ করে রেখেছে আই কে রোডের দুই পাশে। এই ছাই চৈত্রের দাবদাহে ও বাতাসে উড়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। আশপাশের প্রায় বাড়িঘরই ছাইয়ে ডুবে যাচ্ছে।' রিপোর্টটিতে ঈশ্বরদী আই হসপিটাল ও ফ্যাকো সেন্টারের এবং ঈশ্বরদী চক্ষু হাসপাতালের সূত্র ধরে বলা হয়েছে, প্রতিদিনই শত শত রোগী আসছে এবং সবার চোখে একই ধরনের ছাই পাওয়া যাচ্ছে।
দেশে মানুষ বাড়ছে। খাদ্যসামগ্রী, বিশেষ করে চালের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশে ধানের উৎপাদনও বেড়েছে, যা আমাদের জন্য সত্যি সত্যিই স্বস্তি ও আনন্দের কথা। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি উন্নয়নে আমাদের যেটুকু সাফল্য আছে তার মধ্যে অন্যতম। বড় কথা হলো, আমরা দুমুঠো খেয়ে বাঁচতে পারছি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে আমাদেরই কিছু দেশবাসীকে অন্ধ হয়ে যেতে দেব তা তো হয় না।
আজকাল আর খোঁজাখুঁজি করে জানতে হয় না, খবরের কাগজ ও টেলিভিশনে পরিবেশদূষণের ভয়াবহ সব তথ্য রোজই প্রকাশিত বা প্রচারিত হচ্ছে। নিজেরাও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। সরকারও বলছে যে তারাও এসব সমস্যার কথা জানে। তবুও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। কিন্তু তা কেন? তা কি আমরা টাকার জোর আর মামার জোরের কাছে হেরে যাচ্ছি সে জন্য? সরকার কেন ওই পরিবেশদূষণকারীদের তাদের মুনাফার একটা অংশ ব্যয় করে বর্জ্য শোধন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বাধ্য করছে না। কালো টাকাগুলো সাদা কাজে ব্যবহার করালেই তো হয়। আশা করি, সরকারের স্মরণ আছে যে দুর্নীতির তালিকায় আমরা তলানির চেয়ে বেশি ওপরে নেই। সম্প্রতি জীবনযাপনের দিক থেকে ঢাকা শহর বিশ্বের দ্বিতীয় নিকৃষ্টতম শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখন আমরা কি দূষিত পরিবেশের দেশ বলেও পরিচিত হব?
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
No comments