কলকাতার চিঠি-যুদ্ধশেষে ফলের অপেক্ষা by অমর সাহা
যুদ্ধ শেষ। মঙ্গলবার ১০ মে বিকেল তিনটায় এই যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ও ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি রাজনৈতিক ময়দানে শেষ বাঁশি বাজিয়ে শেষ করলেন এই যুদ্ধ। শুরু করেছিলেন সেই ১৮ এপ্রিল। তারপর যুদ্ধ চলে ২৩, ২৭ এপ্রিল এবং ৩, ৭ ও ১০ মে, ৬ দফায়।
যুদ্ধ ময়দানের দুই প্রধান কমান্ডার বুদ্ধদেব আর মমতা। অর্থাৎ একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর অন্যদিকে বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন এই দুই যোদ্ধা এই যুদ্ধ ময়দান থেকে ফসল তোলার জন্য প্রস্তুত।
শুক্রবার (১৩ মে) ফসল তুলবেন তাঁরা। কিন্তু কে পাবেন এই ফসলের সিংহভাগ, তাই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই যুদ্ধ ময়দানে বিতর্কের অভাব নেই। মমতা তো আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছেন, এবার বেশির ভাগ ফসল তাঁরাই তুলছেন। পশ্চিমবঙ্গে তাঁরাই সূচনা করবেন নতুন দিনের। পরিবর্তনের হাওয়ায় ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাবে বুদ্ধর শিবির। সেখানে নতুন সূর্যোদয় হবে। অস্তমিত হবে ৩৪ বছরের বাম সূর্য।
আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছেন, বাম দুর্গ অটুট রেখেই পরিবর্তন নয়, প্রত্যাবর্তনই হবে বাম দলের। ক্ষমতায় আবার আসবে বাম দলের জোট বামফ্রন্ট। লাল বাড়ির কুর্শিতে থাকবেন বুদ্ধদেবই। লাল বাড়িতে উড়বে লাল পতাকাই। মুছে যাবে মমতার স্বপ্নের সাধ। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ।
এ তো গেল দুই নেতা-নেত্রীর কথা। এবার কী বলছেন এই রাজ্যের আমজনতা? সত্যি কি এবার পট পরিবর্তন হচ্ছে এই রাজ্যে? মমতা কি মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন? নাকি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবার প্রত্যাবর্তন করছেন বুদ্ধদেব? ইত্যাদি প্রশ্নে এখন জেরবার গোটা রাজ্যের রাজনীতি। নির্বাচনী ময়দান। সমীক্ষকেরা অবশ্য আগে থেকেই পাল্লা ভারী করে রেখেছেন মমতার দিকে। জনমত সমীক্ষায়ও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে মমতার যুদ্ধজয়ের।
সম্ভাবনা: ১
জিতবে মমতা। হারবে বামফ্রন্ট। মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা। বিদায় নেবেন বুদ্ধদেব। এ ক্ষেত্রে ফলাফল এমন হতে পারে, মমতার তৃণমূল কংগ্রেসই বিধানসভার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ে ফেলতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজন ১৪৮ আসন। রাজ্য বিধানসভায় রয়েছে ২৯৪টি আসন। ফলে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস একাই ওই ১৪৮টি আসন পেয়ে গড়ে ফেলতে পারে সরকার। কারণ মমতা তিন দফার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছেন, তখনই তাঁরা পেয়ে গেছেন সরকার গড়ার মতো আসন। যদিও তখন ১৭৯টি আসনের নির্বাচন হয়। সেই আসনের ১৬০টি দাবি করেছিলেন মমতা। এখনো একই কথা বলছেন মমতা। বলছেন এখন আসনসংখ্যা বাড়ানোর লড়াই চলছে। জিতে তো তাঁরা গেছেই।
সম্ভাবনা: ২
ফলাফলে এমনও দেখা যেতে পারে, মমতা সত্যিই পেল না একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অর্থাৎ ১৪৮টি আসন। অগত্যা তাঁকে সরকার গড়তে হতে পারে শরিক কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে। অর্থাৎ কংগ্রেস-তৃণমূল জোটই শেষ পর্যন্ত গড়তে পারে সরকার। এ ক্ষেত্রে এমনও দেখা যেতে পারে, মমতাকে নির্ভর করতে হচ্ছে কংগ্রেসের ওপর। ফলে কংগ্রেসও চাপে রাখতে পারবে মমতাকে। সরকার চালাতে মমতার একক নেতৃত্ব খর্ব হতে পারে। মমতার ওপর খবরদারি করার শক্তি পাবে কংগ্রেস।
সম্ভাবনা: ৩
এমনও হতে পারে, মমতা শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলেন না। অর্থাৎ এই জোটও পেল না ১৪৮টি আসন। ঘাটতি পড়ে দু-চারটি আসন। সে ক্ষেত্রে মমতা যদি কোনো নির্দল বা ছোটখাটো দলের প্রার্থী যেমন—দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, আদিবাসী বিকাশ পরিষদ বা ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার জয়ী বিধায়কদের সমর্থন নিয়েও গড়তে পারেন সরকার। এ ক্ষেত্রে ওই সব ছোটখাটো দলের নেতারা মমতার কাছ থেকে বাগিয়ে নিতে পারবেন মন্ত্রিত্ব। ফলে মমতার সরকার হবে দুর্বল। মমতাকেও নির্ভর করতে হতে পারে ওই সব দলের মর্জির ওপর। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তি সঞ্চার করবে কংগ্রেস।
সম্ভাবনা: ৪
সব সমীক্ষা ও জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত সরকার গড়ে ফেলতে পারে বামফ্রন্ট। এ ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট একাই ১৪৮ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গড়তে পারে। এবার যে বামফ্রন্টের বহু আসনে পরাজয় হচ্ছে, সেটা মেনেও নিয়েছেন বামফ্রন্টের নেতারা। বামফ্রন্টের নেতারাও দাবি করেছেন, তাঁরা ১৬০-৭০টি আসন পাবেনই এবং তাঁরাই গড়বেন সরকার।
সম্ভাবনা: ৫
এমনও হতে পারে, বামফ্রন্ট অভীষ্ট সেই ১৪৮ থেকে দু-চারটি আসন কম পেল। দেখা গেল, নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলো নির্দল বা ছোটখাটো রাজনৈতিক দলের বিধায়কেরা। তখন হয়তো বামফ্রন্ট ওই বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়তে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই সব বিধায়ক বা নির্দল প্রার্থীরা বামফ্রন্টের দিকে যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
সম্ভাবনা: ৬
এমনও হতে পারে, বিজেপিই শেষ পর্যন্ত নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলো। বিজেপির দাবি, তারা কম করে হলেও এবার পাঁচটি আসনে জিততে চলেছে। যদি কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বা বামফ্রন্টের কাছে বিজেপিই নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে এই জোট কি বিজেপির সমর্থন নেবে? এ ক্ষেত্রে বলা চলে, বামফ্রন্ট কখনো বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়ার উদ্যোগ নেবে না। এবার মমতা মুসলিমদের সমর্থন আদায়ের জন্য বিজেপিবিরোধী কঠোর অবস্থান নেন। সুতরাং মমতাও সমর্থন নিতে চাইবেন না বিজেপির। তবে এমন সম্ভাবনা থাকতে পারে বামফ্রন্ট সরকারকে ফেলার জন্য, মমতা শেষ পর্যন্ত পরোক্ষ সমর্থন নিতেও পারেন। কারণ বিজেপির শত্রু কমিউনিস্টদের সরানোর জন্য এটাই মহা অস্ত্র।
শেষ কথা: শেষ পর্যন্ত সব সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়ে মমতাই পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী সরকার গড়তে পারেন। এমনই সম্ভাবনা দেখছেন এই রাজ্যের একাংশ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, যেভাবে এবার গোটা রাজ্যজুড়ে মমতার পরিবর্তনের ঝড় উঠেছে, তাঁকে সামাল দেওয়া কঠিনই হবে বামফ্রন্টের। তবে বামফ্রন্ট এমনটা মনে করে শুধু কলকাতা বা এর আশপাশ এলাকা নিয়ে বিচার করলে চলবে না। এখনো পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-গাঁয়ে শক্ত খুঁটি গেড়ে আছে বামফ্রন্ট। তারা তো গ্রাম-গাঁয়ে গরিবের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। সুতরাং এই গরিবেরাই আবার ভাগ্য ফেরাবে বামফ্রন্টের। কিন্তু এখনো যে সমীক্ষায় পাল্লা ভারী মমতার। তাই ১৩ মে শুক্রবার সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন এবারের পশ্চিমবঙ্গের ভোটযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। অপেক্ষা শুক্রবারের জন্য।
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
শুক্রবার (১৩ মে) ফসল তুলবেন তাঁরা। কিন্তু কে পাবেন এই ফসলের সিংহভাগ, তাই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এই যুদ্ধ ময়দানে বিতর্কের অভাব নেই। মমতা তো আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছেন, এবার বেশির ভাগ ফসল তাঁরাই তুলছেন। পশ্চিমবঙ্গে তাঁরাই সূচনা করবেন নতুন দিনের। পরিবর্তনের হাওয়ায় ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাবে বুদ্ধর শিবির। সেখানে নতুন সূর্যোদয় হবে। অস্তমিত হবে ৩৪ বছরের বাম সূর্য।
আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছেন, বাম দুর্গ অটুট রেখেই পরিবর্তন নয়, প্রত্যাবর্তনই হবে বাম দলের। ক্ষমতায় আবার আসবে বাম দলের জোট বামফ্রন্ট। লাল বাড়ির কুর্শিতে থাকবেন বুদ্ধদেবই। লাল বাড়িতে উড়বে লাল পতাকাই। মুছে যাবে মমতার স্বপ্নের সাধ। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ।
এ তো গেল দুই নেতা-নেত্রীর কথা। এবার কী বলছেন এই রাজ্যের আমজনতা? সত্যি কি এবার পট পরিবর্তন হচ্ছে এই রাজ্যে? মমতা কি মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন? নাকি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবার প্রত্যাবর্তন করছেন বুদ্ধদেব? ইত্যাদি প্রশ্নে এখন জেরবার গোটা রাজ্যের রাজনীতি। নির্বাচনী ময়দান। সমীক্ষকেরা অবশ্য আগে থেকেই পাল্লা ভারী করে রেখেছেন মমতার দিকে। জনমত সমীক্ষায়ও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে মমতার যুদ্ধজয়ের।
সম্ভাবনা: ১
জিতবে মমতা। হারবে বামফ্রন্ট। মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা। বিদায় নেবেন বুদ্ধদেব। এ ক্ষেত্রে ফলাফল এমন হতে পারে, মমতার তৃণমূল কংগ্রেসই বিধানসভার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ে ফেলতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজন ১৪৮ আসন। রাজ্য বিধানসভায় রয়েছে ২৯৪টি আসন। ফলে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস একাই ওই ১৪৮টি আসন পেয়ে গড়ে ফেলতে পারে সরকার। কারণ মমতা তিন দফার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছেন, তখনই তাঁরা পেয়ে গেছেন সরকার গড়ার মতো আসন। যদিও তখন ১৭৯টি আসনের নির্বাচন হয়। সেই আসনের ১৬০টি দাবি করেছিলেন মমতা। এখনো একই কথা বলছেন মমতা। বলছেন এখন আসনসংখ্যা বাড়ানোর লড়াই চলছে। জিতে তো তাঁরা গেছেই।
সম্ভাবনা: ২
ফলাফলে এমনও দেখা যেতে পারে, মমতা সত্যিই পেল না একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অর্থাৎ ১৪৮টি আসন। অগত্যা তাঁকে সরকার গড়তে হতে পারে শরিক কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে। অর্থাৎ কংগ্রেস-তৃণমূল জোটই শেষ পর্যন্ত গড়তে পারে সরকার। এ ক্ষেত্রে এমনও দেখা যেতে পারে, মমতাকে নির্ভর করতে হচ্ছে কংগ্রেসের ওপর। ফলে কংগ্রেসও চাপে রাখতে পারবে মমতাকে। সরকার চালাতে মমতার একক নেতৃত্ব খর্ব হতে পারে। মমতার ওপর খবরদারি করার শক্তি পাবে কংগ্রেস।
সম্ভাবনা: ৩
এমনও হতে পারে, মমতা শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলেন না। অর্থাৎ এই জোটও পেল না ১৪৮টি আসন। ঘাটতি পড়ে দু-চারটি আসন। সে ক্ষেত্রে মমতা যদি কোনো নির্দল বা ছোটখাটো দলের প্রার্থী যেমন—দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, আদিবাসী বিকাশ পরিষদ বা ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার জয়ী বিধায়কদের সমর্থন নিয়েও গড়তে পারেন সরকার। এ ক্ষেত্রে ওই সব ছোটখাটো দলের নেতারা মমতার কাছ থেকে বাগিয়ে নিতে পারবেন মন্ত্রিত্ব। ফলে মমতার সরকার হবে দুর্বল। মমতাকেও নির্ভর করতে হতে পারে ওই সব দলের মর্জির ওপর। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তি সঞ্চার করবে কংগ্রেস।
সম্ভাবনা: ৪
সব সমীক্ষা ও জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত সরকার গড়ে ফেলতে পারে বামফ্রন্ট। এ ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট একাই ১৪৮ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গড়তে পারে। এবার যে বামফ্রন্টের বহু আসনে পরাজয় হচ্ছে, সেটা মেনেও নিয়েছেন বামফ্রন্টের নেতারা। বামফ্রন্টের নেতারাও দাবি করেছেন, তাঁরা ১৬০-৭০টি আসন পাবেনই এবং তাঁরাই গড়বেন সরকার।
সম্ভাবনা: ৫
এমনও হতে পারে, বামফ্রন্ট অভীষ্ট সেই ১৪৮ থেকে দু-চারটি আসন কম পেল। দেখা গেল, নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলো নির্দল বা ছোটখাটো রাজনৈতিক দলের বিধায়কেরা। তখন হয়তো বামফ্রন্ট ওই বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়তে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই সব বিধায়ক বা নির্দল প্রার্থীরা বামফ্রন্টের দিকে যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
সম্ভাবনা: ৬
এমনও হতে পারে, বিজেপিই শেষ পর্যন্ত নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলো। বিজেপির দাবি, তারা কম করে হলেও এবার পাঁচটি আসনে জিততে চলেছে। যদি কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বা বামফ্রন্টের কাছে বিজেপিই নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে এই জোট কি বিজেপির সমর্থন নেবে? এ ক্ষেত্রে বলা চলে, বামফ্রন্ট কখনো বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়ার উদ্যোগ নেবে না। এবার মমতা মুসলিমদের সমর্থন আদায়ের জন্য বিজেপিবিরোধী কঠোর অবস্থান নেন। সুতরাং মমতাও সমর্থন নিতে চাইবেন না বিজেপির। তবে এমন সম্ভাবনা থাকতে পারে বামফ্রন্ট সরকারকে ফেলার জন্য, মমতা শেষ পর্যন্ত পরোক্ষ সমর্থন নিতেও পারেন। কারণ বিজেপির শত্রু কমিউনিস্টদের সরানোর জন্য এটাই মহা অস্ত্র।
শেষ কথা: শেষ পর্যন্ত সব সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়ে মমতাই পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী সরকার গড়তে পারেন। এমনই সম্ভাবনা দেখছেন এই রাজ্যের একাংশ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, যেভাবে এবার গোটা রাজ্যজুড়ে মমতার পরিবর্তনের ঝড় উঠেছে, তাঁকে সামাল দেওয়া কঠিনই হবে বামফ্রন্টের। তবে বামফ্রন্ট এমনটা মনে করে শুধু কলকাতা বা এর আশপাশ এলাকা নিয়ে বিচার করলে চলবে না। এখনো পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-গাঁয়ে শক্ত খুঁটি গেড়ে আছে বামফ্রন্ট। তারা তো গ্রাম-গাঁয়ে গরিবের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। সুতরাং এই গরিবেরাই আবার ভাগ্য ফেরাবে বামফ্রন্টের। কিন্তু এখনো যে সমীক্ষায় পাল্লা ভারী মমতার। তাই ১৩ মে শুক্রবার সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন এবারের পশ্চিমবঙ্গের ভোটযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। অপেক্ষা শুক্রবারের জন্য।
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
No comments