আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস-বিলুপ্তি রোধে সচেতনতা জরুরি by ধরিত্রী সরকার সবুজ
আজ ২২ মে। আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। বিশ্বব্যাপী মানুষের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির নিমিত্তে প্রতিবছর এই দিনটিকে পালন করা হয় বিশ্বজুড়ে। বন এবং বনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রতি মানুষকে মনোযোগী করে তুলতে এবারকার আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবসের প্রতিপাদ্য 'বনের জীববৈচিত্র্য' (Forest
Biodiversity)। জাতিসংঘ ২০১১ সালকে 'আন্তর্জাতিক বনবর্ষ' ঘোষণা করেছে। মানুষের জীবন-জীবিকা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য বনাঞ্চল এবং বনাঞ্চলে বসবাসকারী জীবের আবাস রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে প্রতিনিয়তই পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি ঘটছে এবং বিনষ্ট হচ্ছে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য।
আমরা সব সময়ই বলছি, আমাদের বনভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। বনভূমি রক্ষার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও হচ্ছে। তবুও নগর উন্নয়ন, অধিক জনসংখ্যার জন্য বসতবাড়ি নির্মাণ এবং কৃষিজমি বৃদ্ধি করতে গিয়ে বনভূমি রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা হয়তো বাঘ-হাতি-হরিণের মতো প্রাণীগুলোর কথা চিন্তা করি। কিন্তু বনভূমি ধ্বংসের ফলে আমাদের চোখের হিসাবে ধরা না পড়া কত জীব যে হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্যের কবর রচনা করে, তার ইয়ত্তা নেই। কিছু সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং অভয়ারণ্য ছাড়া আমাদের প্রাণী সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থাই প্রায় নেই। কেঁচো-সাপ-পোকামাকড়ের মতো প্রাণীকে সংরক্ষণের কোনো চেষ্টাই আমরা করি না। বাতাস ও মাটি যেভাবে দূষিত হচ্ছে, তাতে পোকামাকড়ের বাসস্থান এবং জীবনধারণের পরিবেশ_দুটোই ধ্বংস হচ্ছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বন্য প্রাণী ধরা বা নিধন করা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও তা চলছেই। পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে কচ্ছপ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগে হাকালুকি হাওরে ১২ প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া গেলেও এখন শুধু ছিব, সিলেটি কড়ি কাইট্টা ও ধুম_এই তিন প্রজাতির কচ্ছপ দেখা যাচ্ছে। নির্বিচারে আহরণ, বিল সম্পূর্ণ সেচে মাছ ধরা এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়ার কারণেই অনেক প্রজাতির কচ্ছপ হারিয়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। দেশের মোট জলাভূমির বেশির ভাগই জলমহাল এবং এগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছে। মন্ত্রণালয় এগুলো ইজারা দিয়ে দেয়। ইজারাদাররা মাছের চাষ করতে গিয়ে বছর শেষে শুষ্ক মৌসুমে এগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে ফেলে সর্বশেষ মাছটি ধরার জন্য। ফলে প্রতিবেশব্যবস্থা ও জলজ জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। উপকূলীয় ও জলাভূমির জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য কঙ্বাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১২০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকাকে সংকটাপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকা থেকে শামুক, ঝিনুক, বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই অপরাধ থেমে নেই। একটি অসৎ চক্রের সৈকত এলাকার বালুচর থেকে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহের ফলে জীববৈচিত্র্য পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে। আমাদের অনেক জলাভূমির অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। নদীর পানি শিল্পবর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে। অনেক নদীই শুকিয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত জাহাজ ভাঙা এবং জাহাজের তেল নিঃসরণের মতো মনুষ্য সৃষ্ট অনেক কারণে সাগরও দূষিত হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য যাতে নষ্ট না হয়, এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে গণমাধ্যমের সহায়তায় প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া দরকার এবং এলাকাভিত্তিক জীববৈচিত্র্যবিষয়ক সভা বা দলীয় বৈঠক করা প্রয়োজন। জীববৈচিত্র্য একবার হারিয়ে গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না, এ কথা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
ধরিত্রী সরকার সবুজ
আমরা সব সময়ই বলছি, আমাদের বনভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। বনভূমি রক্ষার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও হচ্ছে। তবুও নগর উন্নয়ন, অধিক জনসংখ্যার জন্য বসতবাড়ি নির্মাণ এবং কৃষিজমি বৃদ্ধি করতে গিয়ে বনভূমি রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা হয়তো বাঘ-হাতি-হরিণের মতো প্রাণীগুলোর কথা চিন্তা করি। কিন্তু বনভূমি ধ্বংসের ফলে আমাদের চোখের হিসাবে ধরা না পড়া কত জীব যে হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্যের কবর রচনা করে, তার ইয়ত্তা নেই। কিছু সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং অভয়ারণ্য ছাড়া আমাদের প্রাণী সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থাই প্রায় নেই। কেঁচো-সাপ-পোকামাকড়ের মতো প্রাণীকে সংরক্ষণের কোনো চেষ্টাই আমরা করি না। বাতাস ও মাটি যেভাবে দূষিত হচ্ছে, তাতে পোকামাকড়ের বাসস্থান এবং জীবনধারণের পরিবেশ_দুটোই ধ্বংস হচ্ছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বন্য প্রাণী ধরা বা নিধন করা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও তা চলছেই। পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে কচ্ছপ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগে হাকালুকি হাওরে ১২ প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া গেলেও এখন শুধু ছিব, সিলেটি কড়ি কাইট্টা ও ধুম_এই তিন প্রজাতির কচ্ছপ দেখা যাচ্ছে। নির্বিচারে আহরণ, বিল সম্পূর্ণ সেচে মাছ ধরা এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়ার কারণেই অনেক প্রজাতির কচ্ছপ হারিয়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। দেশের মোট জলাভূমির বেশির ভাগই জলমহাল এবং এগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছে। মন্ত্রণালয় এগুলো ইজারা দিয়ে দেয়। ইজারাদাররা মাছের চাষ করতে গিয়ে বছর শেষে শুষ্ক মৌসুমে এগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে ফেলে সর্বশেষ মাছটি ধরার জন্য। ফলে প্রতিবেশব্যবস্থা ও জলজ জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। উপকূলীয় ও জলাভূমির জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য কঙ্বাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১২০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকাকে সংকটাপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকা থেকে শামুক, ঝিনুক, বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই অপরাধ থেমে নেই। একটি অসৎ চক্রের সৈকত এলাকার বালুচর থেকে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহের ফলে জীববৈচিত্র্য পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে। আমাদের অনেক জলাভূমির অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। নদীর পানি শিল্পবর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে। অনেক নদীই শুকিয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত জাহাজ ভাঙা এবং জাহাজের তেল নিঃসরণের মতো মনুষ্য সৃষ্ট অনেক কারণে সাগরও দূষিত হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য যাতে নষ্ট না হয়, এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে গণমাধ্যমের সহায়তায় প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া দরকার এবং এলাকাভিত্তিক জীববৈচিত্র্যবিষয়ক সভা বা দলীয় বৈঠক করা প্রয়োজন। জীববৈচিত্র্য একবার হারিয়ে গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না, এ কথা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
ধরিত্রী সরকার সবুজ
No comments