রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণ-মিশন হোক চৌকস ও দায়িত্বশীল
রফতানি বাজার সম্প্রসারণে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলো থেকে সহায়তা না পাওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নতুন নয়। কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার ব্যাপারে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও বিভিন্ন সময়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও কোনো কোনো মিশন তা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টিকে হালকাভাবে
নেওয়ার অবকাশ নেই। ব্যবসায়ীদের এ অভিযোগ যথার্থ যে, দেশের রফতানি পণ্য সম্পর্কে বেশিরভাগ মিশন কর্মকর্তার সুস্পষ্ট ধারণা নেই। একই সঙ্গে আন্তরিকতার ঘাটতিও রয়েছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরার সর্বশেষ পারফরম্যান্স প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ওই তালিকায় ব্যর্থ মিশনের সংখ্যাই বেশি। ব্যর্থতার তালিকায় যেসব নাম রয়েছে, তাও কম কৌতূহলোদ্দীপক নয়_ নয়াদিলি্ল, ওয়াশিংটন, বেইজিং, প্যারিস, ইসলামাবাদ, মস্কো, কুয়েত, ব্যাংকক। এগুলো আমাদের প্রধান প্রধান রফতানি অঞ্চলের রাজধানী বলে পরিচিত। ওইসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যাও ব্যাপক। এখন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কুয়েত কিংবা পাকিস্তানে যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করা যায়, উগান্ডার মতো দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগইবা কতটুকু আর তাতে মোট রফতানির সুবিধাইবা কতটুকু? মিশনগুলোকে ব্যর্থতা থেকে উদ্ধার করতে অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ে শিক্ষিত ও অভিজ্ঞ কমার্শিয়াল কাউন্সিলর নিয়োগের যে সুপারিশ বিকেএমইএ কর্মকর্তারা করেছেন, তা আমলে নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা। একই সঙ্গে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন আনা জরুরি। জনবল নিয়োগেও প্রয়োজন প্রভূত সতর্কতা। আমরা জানি, জাতীয় স্বার্থ ও ভাবমূর্তি সুরক্ষায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থানে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে খামখেয়ালিপনাই প্রাধান্য পেয়েছে। কূটনৈতিক বিবেচনার ওপরে স্থান দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে। এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকারী ও তার সহযোগীদেরও রাষ্ট্রীয় মিশনে নিয়োগ দেওয়ার ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তাদের কাছ থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা কী আশা করতে পারি! আমরা চাই, বিলম্বে হলেও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোকে চৌকস ও দায়িত্বশীল করে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হোক। আর রফতানি বাজার সম্প্রসারণে সক্ষমতা হতে পারে তার প্রথম মাপকাঠি।
No comments