বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে by হায়দার আকবর খান রনো
এক-এগারোর নায়করা দুই বছর ধরে সংবিধান লঙ্ঘন থেকে শুরু করে হেন অপকর্ম নেই যা করেননি। গণতন্ত্র অপহরণ, দৈহিক নির্যাতন, প্রহসনের বিচার করে বহু মানুষকে কারারুদ্ধ করা, রিমান্ডে নিয়ে বর্বর নির্যাতন, শ্রমজীবী মানুষের ওপর অত্যাচার—আরও কত যে অপকর্ম করেছেন, তার পুরো ফিরিস্তি দিলে তা এতই দীর্ঘ হবে যে, সংবাদপত্রের পাতায় জায়গা হবে না।
দুষ্কর্মের নায়কদের বিচার ও শাস্তি হওয়া দরকার। গত ১২ জানুয়ারির আমার দেশ’র সম্পাদকীয় পাতায় এই দাবি করেছেন জনাব মাহফুজউল্লাহ। বস্তুত, এটা তার একার দাবি নয়। মানবাধিকারে বিশ্বাসী ও গণতান্ত্রিক সব মানুষের, এক কথায় সমগ্র জনগণের দাবিরই তিনি প্রতিধ্বনি করেছেন মাত্র।
জনাব মাহফুজ উল্লাহ আরও বলেছেন, এই দুই বছরের (২০০৭-২০০৮) বর্বর শাসনের ফলে দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা খুবই বড় মাপের। তিনি বলেছেন, ‘এ ক্ষত যদি শুকানোর ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে তা সমাজ প্রগতির পক্ষে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে এবং সেনাবাহিনীর মতো মর্যাদাবান প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে না।’ তারপর তিনি দুঃখ করে বলেছেন, ‘কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, দেশের একটি প্রভাবশালী মহল এ অপকর্মের হোতাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ব্যাপারে নিশ্চুপ। জাতীয় সংসদেও মাত্র দু’ একজন এ অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।’ এরপর তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘যদি সেই দুষ্কর্মের হোতাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো না যায় তাহলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ সঙ্কটমুক্ত হবে না।’ বলাই বাহুল্য, মাহফুজ উল্লাহর এই অভিমতের সঙ্গে দ্বিমত করার সামান্যতম অবকাশ নেই।
এই একই সংখ্যায় সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ‘সেনাবাহিনী প্রধানসহ শীর্ষ ব্যক্তিরা রাষ্ট্রক্ষমতা করায়ত্ত করেছিলেন। বন্দুকের জোরে রাষ্ট্রপতিকে জিম্মি করে সরকার প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ ও জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।’ পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি, ফখরুদ্দীনের সরকারকে সেনাসমর্থিত সরকার বলে আখ্যায়িত করা হতো। সেই আমলেই সব পত্রপত্রিকায় এভাবেই লেখা হয়েছিল। সেনাবাহিনী বা সরকার তাতে আপত্তি জানায়নি। তার মানে আসলেই ওই সরকারটি ছিল এক ধরনের সামরিক সরকার। আমার দেশ’র সম্পাদকীয়তে অবশ্য এটিকে ‘সামরিক অভ্যুত্থান ছিল না’ বলে মন্তব্য করা হলেও বাস্তবে যেখানে বন্দুকের জোরে সরকার বসানো হয় এবং সেনা কর্মকর্তাদের বিশেষ করে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশে (হতে পারে মৌখিক) সরকার পরিচালিত হয়, সেখানে এটাকে সেনা অভ্যুত্থান ও সেনা শাসন ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না। হতে পারে সেনাবাহিনীর সব সদস্য বা সব অফিসার এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বা জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডেও সব সেনা কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন না। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর তাত্ক্ষণিকভাবেই তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউল্লাহ এবং বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধানরা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে এসে রেডিও স্টেশনে গিয়ে মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। যে কোনো হিসাবেই মোশতাক সরকার ছিল অবৈধ সরকার। তিনি উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন না যে, রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাকেই রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিতে হয়েছিল। আসলে কয়েকজন বন্দুকধারী অফিসার হুকুম দিল আর প্রধান বিচারপতি সায়েম সাহেব শপথ পাঠ করালেন। এমন অবৈধ কাজের জন্য সেদিনের প্রধান বিচারপতিকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। শুধু কি তাই? বঙ্গবন্ধু হত্যার একঘণ্টার মধ্যেই দেখলাম সেদিনের সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউল্লাহ্ এবং তদানীন্তন বিমানবাহিনী প্রধান ও নৌপ্রধানরাও রেডিও স্টেশনে এসে অবৈধ মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেন। তারা তো ক্যান্টনমেন্টে নিরাপদে ছিলেন। সেখানে তো রশিদ-ফারুকের ট্যাংকবাহিনী বা আর্টিলারি বাহিনী ছিল না। প্রধান বিচারপতি না হয় বন্দুকের ভয়ের অজুহাত দেখাতে পারেন, কিন্তু জেনারেল শফিউল্লাহ বিমানবাহিনী প্রধান তোয়াব সাহেব এবং নৌবাহিনী প্রধান (তার নামটা এখন মনে আসছে না) যেখানে নিরাপদ দূরত্বে এরা নিজস্ব অনুগত বাহিনী দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন, তারা কেন দৌড়ে গেলেন রেডিও স্টেশনে? এক অর্থে সেদিনের সেনাবাহিনী বা অন্ততপক্ষে উপরতলার সেনা আমলারা জড়িত ছিলেন এবং এভাবে সদ্য মুক্তিযুদ্ধ করা এই বিজয়ী সেনাবাহিনীর মর্যাদা সেদিন ক্ষুণ্ন করা হয়েছিল। রশিদ-ফারুক-ডালিম প্রমুখ ছাড়াও শফিউল্লাহসহ আরও যারা অপ্রত্যক্ষ হলেও জড়িত ছিলেন তাদের কিন্তু এখনও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি।
এরপর এলো আরেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার অবশ্য হয়েছিল এবং কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার ফাঁসিও হয়েছিল। কিন্তু বিচারটি হয়েছিল সামরিক আদালতে, যাকে কোনো সভ্যদেশ ন্যায়সঙ্গত বিচার ব্যবস্থা বলে মেনে নিতে পারে না। সেদিন অবশ্য তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদ সাংবিধানিকভাবে বৈধ আবদুস সাত্তারের সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে ভালো কাজটি করেছিলেন। চট্টগ্রামের বিদ্রোহী সরকারের সহজ পতন ঘটেছিল। ঘটনাটি কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ঘটালেও, এটিও সেনাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছিল।
অভিযোগ আছে যে, জেনারেল মঞ্জুর কর্তৃক সেনাবিদ্রোহের পেছনে নাকি জেনারেল এরশাদেরও হাত ছিল। তিনি নাকি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয়েছিল, যে মামলার বর্তমান অবস্থান কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আমরা জানি না। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট সাত্তারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সাত্তার সাহেবের প্রতি আগ বাড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশের ঘটনাটি আন্তরিক ছিল কিনা, এ নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, তার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই এরশাদ সামরিক ক্যুদেতা করেছিলেন। সেদিন বাংলার বাণী পত্রিকা এটিকে সমর্থন জানালেও এটা যে কত বড় সর্বনাশ করে গেছে, তা ব্যাখ্যার প্রয়োজন রাখে না। এরশাদের সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে উপরতলার সব অফিসার জড়িত ছিলেন। এক অর্থে তিনি বেশ ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে’ সেনা অফিসারদের সম্মতি নিয়ে ক্যুদেতা করেছিলেন। ফলে এবার কিন্তু গোটা সেনাবাহিনীই অভিযুক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচ বাম দলের পক্ষ থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধ ক্ষমতা দখলের জন্য এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। রমনা থানায় হাসানুল হক ইনু মামলাটি করেছিলেন, যিনি এখন এরশাদের দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহাজোটের অংশীদার হয়েছেন। যা হোক সেটি স্বতন্ত্র প্রশ্ন। সেই মামলা কিন্তু চলতে দেয়া হয়নি। এরশাদের বিচার হয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে এবং জেলও হয়েছে। কিন্তু অবৈধ ক্ষমতা দখলের বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার সরকার উভয়ই বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা না হয় দুই বারই এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনে জিতেছেন। ফলে তিনি যে সত্যটাকে এড়িয়ে যাবেন তা বোধগম্য। কিন্তু খালেদা জিয়া কেন অবৈধ ক্ষমতা দখলের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করলেন না? সেনা আমলাদের ঘাঁটাতে চান না, তাই তো? ঠিক একই কারণে কি শেখ হাসিনা এখন এক এগারোর সেনা নায়কদের নিরাপদে আশ্রয় দিচ্ছেন এবং সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন?
শেখ হাসিনার বর্তমানের মহাজোটের সরকার প্রথম থেকেই একাধিক মামলা নিয়ে লড়ছেন। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হয়েছে এবং খুব শিগগিরই তা কার্যকর হতে যাচ্ছে। নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও শুরু হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এসব বিচার হওয়া দরকার এবং দ্রুতই হওয়া বাঞ্ছনীয়। খালেদা জিয়ার আমলে সন্ত্রাসী মৌলবাদীদের দ্বারা সংঘটিত জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছিল এবং দোষীদের ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। তেমনি ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছিল (যাদের টার্গেট ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা) তাদের অবশ্যই বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। আমরা এসব বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য সরকারকে স্বাগত জানাচ্ছি।
কিন্তু বিচার কি কেবল বঙ্গবন্ধু বা জিয়াউর রহমানের হত্যাকারীদের বা শেখ হাসিনার হত্যা প্রচেষ্টাকারীদেরই (২১ আগস্ট) হবে? যারা রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন না, কিন্তু সাধারণ মানুষ অথবা রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন মতাদর্শী ছিলেন তাদের হত্যার ব্যাপারটি কি একেবারেই আলোচনায় আসবে না? রক্ষীবাহিনী কয়েক হাজার বাম কর্মীকে হত্যা করেছিল। সিরাজ শিকদারও পুলিশ হেফাজতে নিহত হয়েছিলেন। জিয়াউর রহমানের আমলে কয়েকশ’ সেনা সদস্যকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। ৭ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মহানায়ক কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। এছাড়াও পরবর্তী সময়ে র্যাব যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে অথবা রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের দ্বারা হত্যা করা হয়েছিল সেসব কি বিচারের বাইরে থেকে যাবে? ছোট-বড় সবার মৃত্যুই বেদনাদায়ক এবং সব হত্যাকাণ্ডই সমভাবে অপরাধ। সবারই বিচার আমরা দাবি করব।
এসব তো গেল পুরনো কথা। তবে বাসি হলেও তামাদি হয়নি। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে আমরা সব হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও বিচার চাই। তবে বিচার যেন জরুরি তত্ত্বাবধায়ক আমলের মতো না হয়, যেখানে রিমোট কন্ট্রোল থেকে বিচারের রায় ঘোষিত হতো।
আমরা এক-এগারোর নায়কদের বিশেষ করে তিন নায়কের ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দীন ও মইনউদ্দিনের বিচার দাবি করি। অথর্ব ইয়াজউদ্দিন কেন বন্দুকের সামনে অবৈধ ঘোষণায় সই করলেন? ততটুকু বুকের পাটা না থাকলে তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার খায়েশ দেখিয়েছিলেন কেন? ফখরুদ্দীনের মার্কিন নাগরিকত্ব এবং বিশ্ব ব্যাংকের আমলার চরিত্র নিয়ে সন্দেহ থাকা তো স্বাভাবিক। তিনি যদি মার্কিন নাগিরকত্বের বিষয়টি অথবা মার্কিন দেশে তার সম্পত্তি আছে এই বিষয়টি গোপন করে থাকেন, তাহলে সে জন্যও বিচার ও শাস্তি হওয়া খুবই জরুরি। তাছাড়া ওই আমলের সব দুঃশাসনের জন্য তো ফখরুদ্দীনই প্রধানত দায়ী। আর মইনউদ্দিন তো হলেন আসল নায়ক বা খলনায়ক। বন্দুকের জোরে সরকার পরিবর্তনের জন্য তার তো চরম শাস্তি হওয়া উচিত।
নির্যাতিত সংসদ সদস্যরা পর্যন্ত বিচারের দাবি তুলেছেন। সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বা শেখ সেলিম তাদের ওপর নির্যাতনের কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন। কিন্তু সরকার এত বিচার নিয়ে তত্পর হয়ে উঠলেও এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। তাহলে কি সেই অভিযোগটাই, যেটা বাজারে গুজব আকারে আছে? সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করেই তাকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছিল? বেনজির ভুট্টোও পাকিস্তানে পিতৃহত্যাকারী সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করেছিলেন। না হলে তিনিও প্রধানমন্ত্রী (প্রথমবার) হতে পারতেন না।
এক-এগারোর গণতন্ত্র বিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যে বিদেশি শক্তিগুলো জড়িত ছিল এটা এখন সবারই জানা। আমার দেশ’র সম্পাদকীয়তে সঠিকভাবেই বলা হয়েছে যে ব্রিটিশ, মার্কিন প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকরা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমরা তো দেখেছি তখন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সবকিছু লঙ্ঘন করে কীভাবে তারা নগ্ন ভূমিকা রেখেছিলেন। এমনকি জাতিসংঘের মহাসচিবের নামে যে ভুয়া চিঠির ব্যবস্থা করা হয়েছিল তাও ছিল মহা ষড়যন্ত্রের অংশ। এসব বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকেও কথা বলা উচিত ছিল। বিরোধী দলকেও মুখ খুলতে হবে। এ ব্যাপারে নীরবতা থেকে এমন সন্দেহ হয় যে, বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে সমঝোতা করেই বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। আর প্রধান বিরোধীদল ভারতের নাম উচ্চারণ করলেও মূল প্রভু ও মানবতার দুশমন এবং এক এগারোর মূল হোতা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ প্রসঙ্গে একেবারেই নীরব। হয়তো ভয় আছে, মার্কিন প্রভুরা অসন্তুষ্ট হলে তারা আর কখনই ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। দেশকে প্রকৃত অর্থেই স্বাধীন ও সার্বভৌম করতে হলে দেশি বা বিদেশি সব অশুভ শক্তির সঙ্গে সমঝোতার রাজনীতি ও কৌশল পরিত্যাগ করতে হবে। আমরা আশা করব শিগগিরই সংবিধান লঙ্ঘনকারী, গণতন্ত্র হত্যাকারী ও নির্যাতনকারী মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের বিচার করতে হবে। তা আদৌ হবে কি? না হলে তা হবে ভবিষ্যতের জন্য বড় ভয়াবহ। কারণ, ভবিষ্যতে আবারও এক-এগারোর জন্ম হতে পারে এবং তখনও ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দীন, মইনউদ্দিনের মতো লোকের অভাব হবে না।
No comments