চীনে রদবদল-বো শিলাইয়ের বিদায়ের নেপথ্যে ব্য by শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক বো শিলাইয়ের পদচ্যুতির ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি হিসেবে মনে করা হচ্ছে এ ঘটনাকে। দেশের বৃহত্তম নগর চংকিংয়ে দলের সেক্রেটারি ছিলেন বো শিলাই।
দলের নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বপূর্ণ কমিটি পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির নয় সদস্যের একজন হওয়ার খুব উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল তাঁর। ১৫ মার্চ সেক্রেটারির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ায় এখন সে সম্ভাবনা বিলীন বলা যায়।
এ বছরই পরের দিকে চীনে একটি নতুন প্রজন্মের নেতারা দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ঠিক এই সময়ে উচ্চাভিলাষী বো শিলাইয়ের আকস্মিক বিদায়কে দেখা হচ্ছে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বড় মতাদর্শগত বিরোধের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত চংকিংকে কট্টর বিপ্লবী মনোভাবাপন্ন কমিউনিস্ট দুর্গে পরিণত করেছিলেন বো শিলাই। ধারণা করা হচ্ছে তার অপসারণ অধিকতর রক্ষণশীল ও রাষ্ট্রের আধিপত্যে বিশ্বাসী সমাজতন্ত্রী ও উদারপন্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করবে।
তবে অনেক সময় এ ধরনের ঘটনার একটা তাৎক্ষণিক কারণও থাকে। এখানে তা খুঁজতে গিয়ে একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। ৬২ বছর বয়সী বো শিলাই বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সুস্পষ্ট জবাব পাওয়া যায়নি। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার পক্ষ থেকে কেবল বলা হয়েছে, উপপ্রধানমন্ত্রী ঝাং দেজিয়াং বোর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
রয়টার্সসহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থা সাবেক চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য বের করেছে, সে অনুযায়ী স্ত্রী গু কাইলাইয়ের কারণেই বোর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির বারোটা বেজেছে। আবার কয়েকজন বিশ্লেষক বলেছেন, চীনা রাজনীতিতে খুব বেশি উজ্জ্বল নেতারা লক্ষ্যে পৌঁছার আগেই ঝরে পড়েন। বো শিলাইয়ের বেলায়ও তা-ই ঘটেছে।
নাম প্রকাশ না করে চীনা কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, বো’র স্ত্রী গু কাইলাইয়ের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ ওঠায় এ ব্যাপারে তদন্ত চলছিল। এ ব্যাপারে বোকে সতর্ক করেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও নগরের উপমেয়র ওয়াং লিজুন। এতে হিতে বিপরীত হয়। তদন্তের বিষয়ে ওয়াং জড়িত থাকায় বো বরং ক্ষিপ্ত হন তাঁর ওপর। এ ঘটনায় ওয়াং চেংদু শহরে মার্কিন কনসুলেটে গিয়ে আশ্রয় নেন। বিষয়টি বেইজিংয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নজরে আসে। এরই জের ধরে বো শিলাইয়ের রাজনীতিতে এই ভরাডুবি। ওয়াং লিজুনকেও উপমেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পূর্বসূরি ওয়াং ইয়াংয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে পতন ঘটেছে বোর। ওয়াং ইয়াং এখন গুয়াংদংয়ে দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চংকিংয়ে বোর ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক ভূমিকা তাঁর জন্য ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে তিনি বোকে সরানোয় নেপথ্য ভূমিকা পালন করেন।
বো শিলাই সম্পর্কে অন্য কথাও শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, নিজ নগরে বো ‘রেড কালচার’ বলে পরিচিত নতুন যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছেন, সেটাই তাঁর জন্য কাল হয়েছে। দেশাত্মবোধক গান আর কমিউনিস্টদের বিভিন্ন শাশ্বত বাণী দিয়ে চংকিংবাসীর মন জয় করেন বো শিলাই। তাঁর অধীনে কাজ করেছেন, এমন একজন কর্মকর্তা বলেন, লাল সংস্কৃতিকে তিনি ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লবের’ পর্যায়ে নিয়ে যান। তবে তাঁর এই অভিনব লাল সংস্কৃতিতে কেবল কমিউনিস্ট মূল্যবোধ গুরুত্ব পায়নি, এর সঙ্গে কনফুসিয়াস, আইনস্টাইন, শেক্সপিয়ার, মার্টিন লুথার কিং এমনকি মাইকেল জ্যাকসনের ভাবধারাও যুক্ত করা হয়।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সূচনালগ্ন থেকেই ‘রংহীন’ নেতারাই কেবল দেশ ও দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। চীনে রাজনৈতিক চর্চা যেভাবে হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে কোনো নেতা যত বড়ই হোন না কেন, তাঁকে নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। জনারণ্যে খুব সহজে চোখে পড়ার মতো ভাবমূর্তি থাকে না। কিন্তু বো শিলাই তার উল্টো। বক্তা হিসেবে তাঁর গলায় যেমন জোর রয়েছে, তেমনি নিজেকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রেও তাঁর মুনশিয়ানা রয়েছে। চীনে চলমান রাজনৈতিক ধারার বিপরীতে এর অবস্থান।
ইয়াং ফান নামের একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘চীনের জন্য বো শিলাই মোটেও ভালো রাজনীতিক নন। তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের নেতা হতেন, তাহলে নির্বাচনে লড়ে সফল হতেন। কিন্তু চীনে সেভাবে কোনো নির্বাচন নেই। এ ছাড়া নেতা হিসেবে খুব বেশি নামডাক ছড়ানো আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না।’
বোর ভেতর আত্মপ্রচারের প্রবণতা রয়েছে। পদচ্যুতির আগে ফলাও করে নিজের ‘লাল-সংস্কৃতি’ প্রচারের প্রবণতা দেখা গেছে তাঁর মধ্যে। অন্য নেতাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ব্যত্যয় ঘটিয়ে তিনি বারবার সংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রচার করেছেন নিজেরে কাজের কথা। ইয়াং ফান বলেছেন, পদ হারানোর আগে বোর নেতৃত্বের ধাঁচ ও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে চংকিংকে একটি ভালো স্থানে পরিণত করার চেষ্টা ছিল। আধুনিক চীনে যেসব রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক রয়েছে, বোর কর্মকাণ্ডে তা খুব বেশি প্রকাশ পেত।
বো শিলাইয়ের রাজনৈতিক পটভূমির অনেকখানি জুড়ে রয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। কারও কারও মতে, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে এর প্রভাব পড়েছে তাঁর মধ্যে।
২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন বো শিলাই। এ সময় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও চুক্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন তিনি। তাঁর চোস্ত ইংরেজি ও উৎফুল্ল আচরণ বিদেশি দূতদের মুগ্ধ করে।
বো শিলাইয়ের ছেলে হ্যারো স্কুল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নামকরা দুটি ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁকে ফেরারি গাড়িতে করে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা গেছে। পশ্চিমা ঘেঁষা এমন একজন ব্যক্তির চংকিংয়ের মতো দ্রুত অগ্রসরমাণ নগরে জেঁকে বসা দলের শীর্ষ নেতাদের ভালো না লাগারই কথা। এর মধ্যে তিনি আরও গোল বাধিয়েছেন নতুন করে মাও সে তুংয়ের ভাবাদর্শ প্রচারে নেমে।
এ ব্যাপারে ইয়াং ফান বলেন, বো শিলাই যেভাবে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এগোচ্ছিলেন, তাতে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে তিনি আজকের মাও সে তুং হওয়ার কসরত করছিলেন। কিন্তু চীনে এখন কোনো মাও সে তুংয়ের প্রয়োজন নেই।
এ বছরই পরের দিকে চীনে একটি নতুন প্রজন্মের নেতারা দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ঠিক এই সময়ে উচ্চাভিলাষী বো শিলাইয়ের আকস্মিক বিদায়কে দেখা হচ্ছে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বড় মতাদর্শগত বিরোধের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত চংকিংকে কট্টর বিপ্লবী মনোভাবাপন্ন কমিউনিস্ট দুর্গে পরিণত করেছিলেন বো শিলাই। ধারণা করা হচ্ছে তার অপসারণ অধিকতর রক্ষণশীল ও রাষ্ট্রের আধিপত্যে বিশ্বাসী সমাজতন্ত্রী ও উদারপন্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করবে।
তবে অনেক সময় এ ধরনের ঘটনার একটা তাৎক্ষণিক কারণও থাকে। এখানে তা খুঁজতে গিয়ে একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। ৬২ বছর বয়সী বো শিলাই বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সুস্পষ্ট জবাব পাওয়া যায়নি। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার পক্ষ থেকে কেবল বলা হয়েছে, উপপ্রধানমন্ত্রী ঝাং দেজিয়াং বোর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
রয়টার্সসহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থা সাবেক চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য বের করেছে, সে অনুযায়ী স্ত্রী গু কাইলাইয়ের কারণেই বোর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির বারোটা বেজেছে। আবার কয়েকজন বিশ্লেষক বলেছেন, চীনা রাজনীতিতে খুব বেশি উজ্জ্বল নেতারা লক্ষ্যে পৌঁছার আগেই ঝরে পড়েন। বো শিলাইয়ের বেলায়ও তা-ই ঘটেছে।
নাম প্রকাশ না করে চীনা কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, বো’র স্ত্রী গু কাইলাইয়ের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ ওঠায় এ ব্যাপারে তদন্ত চলছিল। এ ব্যাপারে বোকে সতর্ক করেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও নগরের উপমেয়র ওয়াং লিজুন। এতে হিতে বিপরীত হয়। তদন্তের বিষয়ে ওয়াং জড়িত থাকায় বো বরং ক্ষিপ্ত হন তাঁর ওপর। এ ঘটনায় ওয়াং চেংদু শহরে মার্কিন কনসুলেটে গিয়ে আশ্রয় নেন। বিষয়টি বেইজিংয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নজরে আসে। এরই জের ধরে বো শিলাইয়ের রাজনীতিতে এই ভরাডুবি। ওয়াং লিজুনকেও উপমেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পূর্বসূরি ওয়াং ইয়াংয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে পতন ঘটেছে বোর। ওয়াং ইয়াং এখন গুয়াংদংয়ে দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চংকিংয়ে বোর ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক ভূমিকা তাঁর জন্য ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে তিনি বোকে সরানোয় নেপথ্য ভূমিকা পালন করেন।
বো শিলাই সম্পর্কে অন্য কথাও শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, নিজ নগরে বো ‘রেড কালচার’ বলে পরিচিত নতুন যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছেন, সেটাই তাঁর জন্য কাল হয়েছে। দেশাত্মবোধক গান আর কমিউনিস্টদের বিভিন্ন শাশ্বত বাণী দিয়ে চংকিংবাসীর মন জয় করেন বো শিলাই। তাঁর অধীনে কাজ করেছেন, এমন একজন কর্মকর্তা বলেন, লাল সংস্কৃতিকে তিনি ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লবের’ পর্যায়ে নিয়ে যান। তবে তাঁর এই অভিনব লাল সংস্কৃতিতে কেবল কমিউনিস্ট মূল্যবোধ গুরুত্ব পায়নি, এর সঙ্গে কনফুসিয়াস, আইনস্টাইন, শেক্সপিয়ার, মার্টিন লুথার কিং এমনকি মাইকেল জ্যাকসনের ভাবধারাও যুক্ত করা হয়।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সূচনালগ্ন থেকেই ‘রংহীন’ নেতারাই কেবল দেশ ও দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। চীনে রাজনৈতিক চর্চা যেভাবে হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে কোনো নেতা যত বড়ই হোন না কেন, তাঁকে নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। জনারণ্যে খুব সহজে চোখে পড়ার মতো ভাবমূর্তি থাকে না। কিন্তু বো শিলাই তার উল্টো। বক্তা হিসেবে তাঁর গলায় যেমন জোর রয়েছে, তেমনি নিজেকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রেও তাঁর মুনশিয়ানা রয়েছে। চীনে চলমান রাজনৈতিক ধারার বিপরীতে এর অবস্থান।
ইয়াং ফান নামের একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘চীনের জন্য বো শিলাই মোটেও ভালো রাজনীতিক নন। তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের নেতা হতেন, তাহলে নির্বাচনে লড়ে সফল হতেন। কিন্তু চীনে সেভাবে কোনো নির্বাচন নেই। এ ছাড়া নেতা হিসেবে খুব বেশি নামডাক ছড়ানো আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না।’
বোর ভেতর আত্মপ্রচারের প্রবণতা রয়েছে। পদচ্যুতির আগে ফলাও করে নিজের ‘লাল-সংস্কৃতি’ প্রচারের প্রবণতা দেখা গেছে তাঁর মধ্যে। অন্য নেতাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ব্যত্যয় ঘটিয়ে তিনি বারবার সংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রচার করেছেন নিজেরে কাজের কথা। ইয়াং ফান বলেছেন, পদ হারানোর আগে বোর নেতৃত্বের ধাঁচ ও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে চংকিংকে একটি ভালো স্থানে পরিণত করার চেষ্টা ছিল। আধুনিক চীনে যেসব রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক রয়েছে, বোর কর্মকাণ্ডে তা খুব বেশি প্রকাশ পেত।
বো শিলাইয়ের রাজনৈতিক পটভূমির অনেকখানি জুড়ে রয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। কারও কারও মতে, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে এর প্রভাব পড়েছে তাঁর মধ্যে।
২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন বো শিলাই। এ সময় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও চুক্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন তিনি। তাঁর চোস্ত ইংরেজি ও উৎফুল্ল আচরণ বিদেশি দূতদের মুগ্ধ করে।
বো শিলাইয়ের ছেলে হ্যারো স্কুল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নামকরা দুটি ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁকে ফেরারি গাড়িতে করে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা গেছে। পশ্চিমা ঘেঁষা এমন একজন ব্যক্তির চংকিংয়ের মতো দ্রুত অগ্রসরমাণ নগরে জেঁকে বসা দলের শীর্ষ নেতাদের ভালো না লাগারই কথা। এর মধ্যে তিনি আরও গোল বাধিয়েছেন নতুন করে মাও সে তুংয়ের ভাবাদর্শ প্রচারে নেমে।
এ ব্যাপারে ইয়াং ফান বলেন, বো শিলাই যেভাবে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এগোচ্ছিলেন, তাতে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে তিনি আজকের মাও সে তুং হওয়ার কসরত করছিলেন। কিন্তু চীনে এখন কোনো মাও সে তুংয়ের প্রয়োজন নেই।
No comments