‘... নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই’ by মাহবুব তালুকদার


গুরুদেব যোগাসনে বসিয়া ছিলেন, কিন্তু তিনি ধ্যানমগ্ন ছিলেন না। তাহার দৃষ্টি ঘরের জানালা অতিক্রম করিয়া দূরের আকাশের প্রতি নিবদ্ধ ছিল। তাহাকে দীর্ঘকাল নির্বাক দেখিয়া শিষ্যও নিশ্চুপ ছিল। এক সময়ে গুরুদেব শিষ্যের দিকে দৃকপাত করিয়া কহিলেন, বত্স! অবধান করো।

আপনার বাণী শ্রবণের নিমিত্ত কান পাতিয়া রহিয়াছি প্রভু।
বলিতে পারো কি বর্তমান মন্ত্রিসভার কোন মন্ত্রী সর্বাপেক্ষা সাকসেসফুল?
তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান।
কেন তাহাকে তোমার সর্বাধিক সাফল্য অর্জনকারী মন্ত্রী বলিয়া ধারণা হইয়াছে?
মহাত্মন! কোনো মন্ত্রীর সাফল্য নির্ভর করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টির ওপর। কয়েকদিন পূর্বে প্রধানমন্ত্রী তাহার কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করিয়াছেন। মিডিয়ায় উহা প্রচারিত হইয়াছে।
সাধু! এইবার বলো প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের সাকসেসের সিক্রেট কি?
গাস্তাকি মাফ করিলে উহা বলিতে পারি।
তুমি নির্ভয়ে বলো।
গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর সাকসেসের মূলমন্ত্র হইতেছে চমক ও ধমক।
চমক ও ধমক! তুমি কি বলিতেছ?
হ্যাঁ প্রভু! আপনি অনুমতি দিলে আমি উহা ব্যাখ্যা করিতে পারি।
তথাস্তু!
শিষ্য কহিল সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রী মহোদয় রিহ্যাবের ডেভেলপারগণকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিয়াছেন, ‘সঠিক কাগজপত্রে ১৫ দিনে প্রকল্পের ছাড়পত্র না দিলে সচিবকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় মন্ত্রিত্ব ছাড়বেন মান্নান খান!’ (দৈনিক আমাদের সময়, ১১ জানুয়ারি ২০১০)। আমি ইহাকে মন্ত্রীর চমক সৃষ্টি বলিয়া মনে করি।
মন্ত্রীরা এইরূপ চমক সৃষ্টি করিতে খুবই ভালোবাসেন। গুরুদেব কহিলেন, তবে আশার কথা হইতেছে মন্ত্রীরা উহা মীন করেন না।
হ্যাঁ। আমিও মনে করি ১৫ দিনের মধ্যে কোনো ছাড়পত্র পাওয়া না গেলে সচিব পদত্যাগ করিবেন না এবং গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীও স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্ব ছাড়িবেন না। শিষ্য একটু থামিয়া আবার কহিল, প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ১৫ দিনের বদলে ১৫ মাস বলিলে উহা যথাযথ হইত। আমার মনে হয়, তাহার সময়জ্ঞানের কিঞ্চিত্ অভাব রহিয়াছে।
এইরূপ উক্তি করিতেছ কেন? গুরুদেব জিজ্ঞাসিলেন।
হুজুর! আমি সৌজন্যমূলকভাবে তাহার সময়জ্ঞানের কিঞ্চিত্ অভাব বলিয়াছি। আসলে তাহার সময়জ্ঞান নাই বলিলে চলে।
বাছা! তোমারও কি বুদ্ধিশুদ্ধি ও স্বাভাবিক জ্ঞান লুপ্ত হইয়াছে? যাহা হউক, তুমি তোমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা প্রদান করো।
স্যার! গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী সাহেব এক মাসের মধ্যে পূর্বাচল ও উত্তরা প্রকল্পের জামানতের টাকা ফেরত প্রদানের ঘোষণা দিয়াছিলেন। কিন্তু ওই এক মাস কতদিনে হইবে তাহা নির্দিষ্ট করিয়া কহেন নাই। তিনি ঐ সময়ে উল্লেখ করিয়াছিলেন রাজউকের কর্মচারীরা জামানতের অর্থ ফেরত দিতে গড়িমসি করিলে তাহাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা লওয়া হইবে। কিন্তু তাহার এই উক্তিও এক প্রকার চমক। বর্তমানে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকে জামানতের টাকা ফেরত চাহিয়া হাজার হাজার আবেদন জমা পড়িতেছে। কিন্তু তিনটি ব্যাংক মিলিয়া দৈনিক গড়ে চারশত হইতে পাঁচশত আবেদনকারীর টাকা ফেরত পাওয়া যাইতেছে। মজার বিষয় হইল মন্ত্রী এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরতের অঙ্গীকার করিলেও ব্যাংকগুলি হইতে দুই মাস পরে টাকা প্রদানের তারিখ লিখিয়া দেওয়া হইতেছে। তবে দুই মাসে টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব নহে। যে প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত পাওয়া যাইতেছে, উহাতে লক্ষাধিক ব্যক্তিকে টাকা ফেরত দিতে এক বছরও বিলম্ব হইতে পারে। এমতাবস্থায় প্রতিমন্ত্রী এক মাসের স্থলে এক বছর বলিলে বাস্তবানুগ হইত।
গুরুদেব স্মিতহাস্যে বলিলেন, বুঝিলাম। কিন্তু মন্ত্রীর চমকের সহিত ধমকের কথা উল্লেখ করিয়াছ কেন?
শিষ্য বলিল, টেলিভিশনে দেখিলাম, প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ওই সভায় ল্যান্ড ডেভেলপারগণকে রীতিমত ধমক দিতেছেন। তাহার ওইরূপ ধমক শুনিয়া আমি নিজেও হতবাক হইয়া পড়িয়াছি।
আমি ঘটনাটি টিভিতে না দেখিলেও পত্রিকায় ইহার রিপোর্ট দেখিয়াছি, বলিয়া গুরুদেব তাহার ল্যাপটপের বোতাম টিপিয়া এতদসংক্রান্ত রিপোর্টটি স্ক্রিনের ওপরে তুলিয়া আনিলেন। শিষ্য তাহা পাঠ করিল : ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় হাউজিং ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের সঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের চরম দুর্ব্যবহার, অপমান ও অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হইয়াছে। সরকারের একজন মন্ত্রী তারই মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সামনে এমনভাবে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের অপদস্ত করার ঘটনা নজিরবিহীন। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগকারী এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এসব শীর্ষ শিল্পপতি-ব্যবসায়ীর সঙ্গে লাগামহীন ভাষায় আক্রমণ অপমান এবং দাম্ভিকতার সুরে হুমকি প্রদান করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ।...’ (দৈনিক যুগান্তর ১২ জানুয়ারি ২০১০)।
পাঠ শেষ হইলে শিষ্য কহিল, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ঢালাওভাবে হাউজিং শিল্পের মালিকদের ভূমিদস্যু বলিয়া আখ্যায়িত করিয়াছেন। এইরূপ কটূক্তি করিয়া তিনি নিজেই পার পাইতে পারেন না।
কেন এই কথা বলিতেছ?
কেহ ভূমিদস্যু হইলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের লোকবলের মাধ্যমে তিনি ব্যবস্থা লইতেছেন না কেন তাহাদের বিরুদ্ধে বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা-২০০৪, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও ইমারত নির্মাণ আইন-১৯৯৬, প্রাকৃতিক জলাধার আইন-২০০০, ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ ও ডিএমডিপি ১৯৯৫-২০১৫ ইত্যাদি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না কেন? গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর সভায় কথিত ভূমিদস্যুরা প্রবেশাধিকার পায় কীভাবে?
কিন্তু তদন্ত না করিয়া কাহারা ভূমিদস্যু তাহা নিরূপণ করার উপায় নাই। গুরুদেব জানাইলেন।
আমিও উহাই বলিতে চাহিতেছি। শিষ্য কহিল, আমার বক্তব্য ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখিয়া অপরাধ মার্জনা করিলে এই বিষয়ে আরও কিছু কথা বলিতে পারি।
তোমার দ্বিধার কারণ নাই। তুমি বলো।
এই দেশে কে ভূমিদস্যু এবং কে ভূমিদস্যু নহে, উহা ভাবিয়া আমি বিভ্রান্ত। অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণের জন্য র্যাংগস ভবনটি ভাঙিয়া ফেলা হইয়াছিল। কিন্তু বিজিএমইএ ভবনটির নির্মাণের অবৈধতা জায়েজ করা হইয়াছে। আমার মনে প্রশ্ন জাগে গুলশানে রাইফেলস ক্লাবের সন্নিকটে কনকর্ড যে পুলিশ কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করিতেছে উহা কি নিচু জমি ভরাট করিয়া হয় নাই? উহাতে কি প্রাকৃতিক জলাধার আইন-২০০০ লঙ্ঘন করা হয় নাই?
বত্স! তুমি বড় কঠোর কথা বলিতেছ। তোমার আর কি বক্তব্য আছে?
আমার বক্তব্য হইতেছে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী তাহার কথিত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করিলে সকলেই উহাকে সাধুবাদ জানাইবে। ভূমিদস্যুতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। তবে ইহার জন্য প্রকাশ্যে চমক সৃষ্টি ও রিহাব সদস্যগণকে ধমক প্রদানের প্রয়োজন নাই। শিষ্য পুনরায় বলিল, এই প্রসঙ্গে আরও কথা আছে।
কি কথা?
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কেও সর্বাগ্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি হইতে মুক্ত হইতে হইবে।
তুমি কি বলিতেছ?
স্যার! সাপ্তাহিক ‘শীর্ষ কাগজে’ বিগত ৪ জানুয়ারি ‘পূর্ত মন্ত্রণালয় : দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট’ শিরোনামে একটি কভার স্টোরি করা হইয়াছে। উহাতে ওই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির চিত্র সরকারি নথিপত্রের ফটোকপি উদ্ধৃত করিয়া প্রকাশ করা হইয়াছে। উহা আমার নোটপ্যাডে সংরক্ষিত আছে। আপনি অনুমতি দিলে তাহা দেখাইতে পারি।
অত:পর গুরুদেবের সম্মতিতে শিষ্য গৃহায়ন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ করিল। গুরুদেব দেখিলেন : ‘৫০ কোটি টাকার দুটি বাড়ি বেহাত’ উপ-শিরোনামে লেখা আছে, ‘বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের দু’টি বাড়ি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে বেসরকারি মালিক দাবিদারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এই বাড়ি দু’টির একটি প্রায় ৪০ কোটি টাকার অধিক মূল্যের ফার্মগেটস্থ তেজকুনিপাড়ার ২১ শতাংশ ভূমির উপর ১২৮ নম্বর প্লটের ২১৫ নম্বর বাড়ি। অন্যটি সোয়া ৮ কাঠার অবয়ব নিয়ে মিরপুরের নম্বর-১০ বি/১-৬ বাড়ি। আইন বহির্ভূতভাবে সমস্ত প্রক্রিয়া অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে সম্পাদন করার ক্ষেত্রে পূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং সচিব উভয়েই সরাসরি জড়িত।’...
‘প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি’ উপ-শিরোনামে বলা হয় : ‘বর্তমান সরকারের আমলে জনগণ আশা করেছিল এবার রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্প ও উত্তরায় প্লট বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হবে না। কিন্তু এবারের লটারি থেকে শুরু করে সব আয়োজনই ছিল লোক দেখানো। মূলত প্লট বরাদ্দের তালিকা আগেই প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল।... প্রতিমন্ত্রী ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ড্র অনুষ্ঠানের শুরুতে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, লটারির ফলাফল এক এক করে এ মঞ্চেই দেখানো হবে, ওয়েবসাইটে দেয়া হবে, টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের হাতে কপি সরবরাহ করা হবে। দুপুর ১২টায় লটারির ড্র শুরু হয়ে দুপুর ১টায় শেষ হয়। কিন্তু এই লটারিতে মানুষ এতদিন যা দেখে এসেছে তার কিছুই ঘটেনি। লটারির চিরাচরিত নিয়ম হলো, লটারির মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম উঠানো হবে এবং এক এক করে বিজয়ীদের নাম জনসম্মুখে ঘোষণা করা হবে। এ লটারির ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, শুধু ঘোষণাই নয়, লটারি পাওয়া ভাগ্যবানদের নাম ও সিরিয়াল নম্বর এক এক করে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিসপ্লেতে দেখানো হবে। অথচ উপস্থিত সাংবাদিক, আবেদনকারী ও সুধীসমাজ সবাই আয়োজকদের কাণ্ডকীর্তি দেখে অবাক হন। কারণ, লটারি পাওয়া ব্যক্তিদের নাম একজন একজন করে ঘোষণা তো দেয়াই হয়নি, এমনকি কোনো তালিকাও টাঙ্গিয়ে দেয়নি তারা। লটারির আয়োজকরা কম্পিউটারে টুকটাক কি যেন করলেন, মুহূর্তের মধ্যে লটারি হয়ে গেল, কেউ কিছু বুঝল না। এমনকি দর্শক সারির মধ্য থেকে লটারিতে সহায়তার জন্য সংখ্যা তুলে দিতে আসা দর্শকরাও কিছু বুঝতে পারল না। লটারিতে প্লট পাওয়া ব্যক্তিদের সবার নাম একযোগে মুহূর্তের মধ্যে ডিসপ্লেতে কয়েক মিনিটের জন্য দেখানো হলো। কিন্তু সবার নাম একসঙ্গে দেখানোর কারণে লেখাগুলো এত ক্ষুদ্র ছিল যে কাছের মানুষের পক্ষেও বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকসহ সবার কাছ থেকে প্রতিমন্ত্রী ফটোকপির জন্য এক ঘণ্টা চেয়ে নেন। প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পরই পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যায়। রাজউকের কর্মকর্তারাও স্বাক্ষর নেয়ার কথা বলে সব কাগজপত্র নিয়ে সচিবালয়ে চলে যান। তিন ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে রাজউক কর্মকর্তারা ওসমানী মিলনায়তনে টানানোর জন্য একটি তালিকা নিয়ে আসেন। কিন্তু সাংবাদিকদের কোনো কপি সরবরাহ করা হয়নি। তাদের মন্ত্রণালয় থেকে বিজয়ীদের তালিকা সংগ্রহ করতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে যে লটারিগুলো করা হয়, এগুলোও ছিল বস্তুত লোক দেখানো। কারা প্লট পাবেন, কম্পিউটারে আগেই তা প্রোগ্রামিং করা ছিল। এমনভাবে প্রোগ্রাম করা ছিল, কী বোর্ডের যে বাটনই টেপা হোক ওই নামগুলোই আসবে। এভাবে কম্পিউটারের প্রোগ্রামিংয়ের মধ্য দিয়ে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে বুয়েটের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।’...
গুরুদেব স্ক্রিনে আরও দেখিলেন, উল্লিখিত প্রতিবেদনে ‘প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবৈধভাবে বাসা বরাদ্দ’, ‘প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের টেন্ডারবাজি’, ‘গণপূর্ত বিভাগে নিয়োগ-বদলি ব্যবসা’ ইত্যাদি উপ-শিরোনামে দুর্নীতির বিস্তারিত বিবরণ ও বর্ণনা রহিয়াছে।
শিষ্য একদৃষ্টে গুরুদেবের মুখের দিকে তাকাইয়াছিল। পাঠ শেষ হইলে গুরুদেব কহিলেন, কি আশ্চর্য! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নাই বলিয়া ঘোষণা দিয়াছেন। তিনি কি গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খানকে দেখিতে পান না?
কি করিয়া দেখিবেন? শিষ্য কুণ্ঠাভরে কহিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করিয়া মনে মনে ভাবিতেছেন, ‘নয়ন সম্মুখে তুমি নাই, নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই।’
লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক
ই-মেইল : mahbub_talukdar@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.