জাহানারার ‘মৃত্যুদণ্ড’ প্রত্যাহার! by মাহমুদ মেনন
জাহানারা জব্বার। বয়স ১০। এই বয়সেই তার ওপর জারি হয়েছিলো ‘মৃত্যুদণ্ড’। বাংলাদেশি এই ছোট্ট মেয়েটির ওপর সর্বোচ্চ দণ্ড জারি করে অস্ট্রেলীয় সরকার। গত ৭ বছর ধরেই জাহানারার বাস অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। সেখানেই উদরের বাইরে নাড়িভুড়ির একাঙশ নিয়ে জীবনের পথ পারি দিচ্ছে জাহানারা।
রোগটা এমন যার কোনো চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। তাই জন্মভূমে ফেরত পাঠানো হলে জাহানারার মৃত্যুর পথে হাঁটা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। এ অভিমত বিশ্বের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। তাদের মতে, এমন নির্দেশ হবে জাহানারার জন্য মৃত্যুদণ্ডের সামিল।
জাহানারাকে দেশে ফেরত পাঠাবার মতো কঠোর সিদ্ধান্তই নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দেশটির সরকারের অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিভাগ সাফ বলে দেয়, জাহানারার পক্ষে সেখানে থাকা অসম্ভব। তবে সম্প্রতি মত পাল্টেছে অস্ট্রেলিয়া। ছোট্ট জাহানারাকে তার বাবা-মা ও ছোট বোনকে নিয়ে সেদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর হাসি ফুটেছে জাহানারার মুখে। হাসি দেখা যায় তার মা পপির মুখেও। পপি জানান, অভিবাসন মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন নিজেই বিষয়টি দেখার দায়িত্ব নেন এবং শেষ পর্যন্ত জাহানারাকে নিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়া থেকে যাওয়ার অনুমতি দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন আমরা অনেক স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারবো।’
পপি জানান, জাহানারার জন্ম হয় এক্সমফালোজ নিয়ে। অর্থাৎ তার উদরের কিছু অংশ শরীরের বাইরে নিয়েই তার জন্ম। বিশ্বে যা বিরল। এমন ক্ষেত্রে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা সেবা ও বিশেষজ্ঞের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান, বাংলাদেশে যা পাওয়া যাবে না। এ অবস্থায় পরিচিতরা জাহানারার চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
২০০৪ এ তিন বছর বয়সে মেডিকেল ভিসায় জাহানারাকে সিডনি নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরপরই তার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তখন থেকেই নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছে জাহানারা। শারিরিক অসুস্থতার কারণে মুখে হাসি ফোটে না ছোট্ট শিশুটির। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সিডনির চিলড্রেন্স হসপিটাল ইন র্যান্ডউইক-এ চলছে তার চিকিৎসা। গত সাত বছরে তার ছয়টি বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে। এবং সবশেষ বড় অস্ত্রোপচারের পর গত দুই বছর ধরে তরল খাবারে বেঁচে আছে জাহানারা। স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। এবং চিকিৎসকদের মতে শিগগিরই হয়তো জাহানারার পেটে আরো একবার অস্ত্রোপচার করতে হবে।
র্যান্ডউইকে চিকিৎসকরা যখন জাহানারাকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে ব্যস্ত তখনই অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিভাগ জব্বার পরিবারকে জানিয়ে দেয় কঠিন সেই বাণী- তাদের পক্ষে আর অস্ট্রেলিয়া থাকা সম্ভব নয়, ফিরতে হবে বাংলাদেশে।
কিন্তু এ অবস্থায় জাহানারার পাশে দাঁড়ান সিডনির অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী অ্যানি ও’ডোনেফ ও তার সহকর্মীরা। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন তারা। জাহানারার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিশ্বের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতামত যোগাড়ে সচেষ্ট হন এবং সফল হন।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জাহানারাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তকে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড জারি করারই নামান্তর বলে ঘোষণা করেন।
শেষ পর্যন্ত অভিবাসনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জাহানারার জয় হয়। এখন অস্ট্রেলিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে- জাহানারা তার বাবা-মা ও ছোটবোন জেসমিনকে নিয়ে সিডনিতে স্থায়ীভাবে বাস করবে। বোনটির জন্মও হয় সিডনিতে।
ও’ডোনেফ বলেন, জাহানারার জন্য আমরা আমাদের সাধ্যের সবটুকু করার চেষ্টা করেছি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, আমাদের ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই। কারণ এটি জাহানারার জীবন মরণের প্রশ্ন। আমাদের হার একটি বড় ট্রাজেডিরই জন্ম দিতো।
জাহানারা জব্বার তার বাবা-মা ও বোনের সঙ্গে নিউটাউনে বাস করে। সেখানে তাদের পারিবারিক একটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা চলছে। এদিকে জাহানারাও যেদিন তার শরীর ভালো থাকে সেদিন মার্কভিল ওয়েস্ট প্রাইমারি স্কুলে যায়। চিকিৎসা সেবা নিয়েই একটি সুন্দর জীবনের স্বপ্ন এখন জাহানারার বাবা-মায়ের। আর জাহানারার মুখেও ফুটেছে নির্মল হাসি।
জাহানারাকে দেশে ফেরত পাঠাবার মতো কঠোর সিদ্ধান্তই নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দেশটির সরকারের অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিভাগ সাফ বলে দেয়, জাহানারার পক্ষে সেখানে থাকা অসম্ভব। তবে সম্প্রতি মত পাল্টেছে অস্ট্রেলিয়া। ছোট্ট জাহানারাকে তার বাবা-মা ও ছোট বোনকে নিয়ে সেদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর হাসি ফুটেছে জাহানারার মুখে। হাসি দেখা যায় তার মা পপির মুখেও। পপি জানান, অভিবাসন মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন নিজেই বিষয়টি দেখার দায়িত্ব নেন এবং শেষ পর্যন্ত জাহানারাকে নিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়া থেকে যাওয়ার অনুমতি দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন আমরা অনেক স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারবো।’
পপি জানান, জাহানারার জন্ম হয় এক্সমফালোজ নিয়ে। অর্থাৎ তার উদরের কিছু অংশ শরীরের বাইরে নিয়েই তার জন্ম। বিশ্বে যা বিরল। এমন ক্ষেত্রে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা সেবা ও বিশেষজ্ঞের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান, বাংলাদেশে যা পাওয়া যাবে না। এ অবস্থায় পরিচিতরা জাহানারার চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
২০০৪ এ তিন বছর বয়সে মেডিকেল ভিসায় জাহানারাকে সিডনি নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরপরই তার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তখন থেকেই নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছে জাহানারা। শারিরিক অসুস্থতার কারণে মুখে হাসি ফোটে না ছোট্ট শিশুটির। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সিডনির চিলড্রেন্স হসপিটাল ইন র্যান্ডউইক-এ চলছে তার চিকিৎসা। গত সাত বছরে তার ছয়টি বড় অস্ত্রোপচার হয়েছে। এবং সবশেষ বড় অস্ত্রোপচারের পর গত দুই বছর ধরে তরল খাবারে বেঁচে আছে জাহানারা। স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। এবং চিকিৎসকদের মতে শিগগিরই হয়তো জাহানারার পেটে আরো একবার অস্ত্রোপচার করতে হবে।
র্যান্ডউইকে চিকিৎসকরা যখন জাহানারাকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে ব্যস্ত তখনই অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিভাগ জব্বার পরিবারকে জানিয়ে দেয় কঠিন সেই বাণী- তাদের পক্ষে আর অস্ট্রেলিয়া থাকা সম্ভব নয়, ফিরতে হবে বাংলাদেশে।
কিন্তু এ অবস্থায় জাহানারার পাশে দাঁড়ান সিডনির অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী অ্যানি ও’ডোনেফ ও তার সহকর্মীরা। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন তারা। জাহানারার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিশ্বের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতামত যোগাড়ে সচেষ্ট হন এবং সফল হন।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জাহানারাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তকে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড জারি করারই নামান্তর বলে ঘোষণা করেন।
শেষ পর্যন্ত অভিবাসনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জাহানারার জয় হয়। এখন অস্ট্রেলিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে- জাহানারা তার বাবা-মা ও ছোটবোন জেসমিনকে নিয়ে সিডনিতে স্থায়ীভাবে বাস করবে। বোনটির জন্মও হয় সিডনিতে।
ও’ডোনেফ বলেন, জাহানারার জন্য আমরা আমাদের সাধ্যের সবটুকু করার চেষ্টা করেছি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, আমাদের ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই। কারণ এটি জাহানারার জীবন মরণের প্রশ্ন। আমাদের হার একটি বড় ট্রাজেডিরই জন্ম দিতো।
জাহানারা জব্বার তার বাবা-মা ও বোনের সঙ্গে নিউটাউনে বাস করে। সেখানে তাদের পারিবারিক একটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা চলছে। এদিকে জাহানারাও যেদিন তার শরীর ভালো থাকে সেদিন মার্কভিল ওয়েস্ট প্রাইমারি স্কুলে যায়। চিকিৎসা সেবা নিয়েই একটি সুন্দর জীবনের স্বপ্ন এখন জাহানারার বাবা-মায়ের। আর জাহানারার মুখেও ফুটেছে নির্মল হাসি।
No comments