একজন বিএনপি নেতার মূল্যায়ন-কিছু সাফল্য থাকলেও ব্যর্থতা বেশি by লোটন একরাম
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের তিন বছরের শাসনামলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য রয়েছে। তবে অনেক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। কৃষি ক্ষেত্রে সরকার সাফল্য অর্জন করলেও কৃষি উপকরণের মূল্য অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার মতে, সরকারের সবচেয়ে বড়
ব্যর্থতা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, আইন-শৃঙ্খলার অবনতিসহ সামগ্রিক ক্ষেত্রে সরকারের কার্যক্রম পুরো রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সংঘাতময় করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেন ড. ফারুক।
আজ শুক্রবার মহাজোট সরকারের তিন বছরপূর্তি উপলক্ষে সাফল্য ও ব্যর্থতা মূল্যায়ন করে গতকাল একান্ত সাক্ষাৎকারে সমকালকে এসব কথা বলেন ড. ওসমান ফারুক। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, সরকার তিন বছরের কার্যক্রম সম্পর্কে আত্মোপলব্ধি করবে। বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে দেশে সৃষ্ট জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শুধু নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত হবে না। সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ অন্যান্য জাতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন সাবেক এই মন্ত্রী।
সামষ্টিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দাবি করে বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, দেশের অর্থনীতি সুনির্দিষ্ট পথে চলছে না। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পরস্পরবিরোধী। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি বেশি হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে। বৈদেশিক অর্থ সাহায্য না আসা, রফতানি হ্রাস এবং আমদানি ব্যয় বহুলাংশে বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে দেশ। যার ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যমান কমে যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। সরকার মূল্যস্ফীতি কিছুতেই সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারছে না। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ, এমনকি ভারত ও শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। পরপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে ফসল ভালো হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকার সাফল্য লাভ করেছে। তবে সার, ডিজেলসহ অন্যান্য কৃষি উপাদানের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সে অনুপাতে কৃষিপণ্যের মূল্য বাড়েনি। এ পরিস্থিতিতে ধান, পাট, আলুসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে কৃষকদের স্বল্প মুনাফা অথবা লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহাজোট সরকার ২৯০০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে বলে দাবি করছে। এর মধ্যে ৯৫০ মেগাওয়াট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের প্রকল্প। ফলে এ সরকারের আমলে নতুন ১৯৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৬০০-৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। তার মানে, এ সরকারের আমলে নিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াট। এর বেশিরভাগই টেন্ডারবিহীন রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হয়েছে। এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কেননা এ কেন্দ্রগুলো জ্বালানি তেলভিত্তিক। পিডিবির কেন্দ্রগুলো চেয়ে রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে ৬ গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। জাতীয় বাজেটের ঘাটতির এটি অন্যতম প্রধান কারণ। সামগ্রিকভাবে সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি অর্থনৈতিকভাবে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মনে করেন তিনি।
শেয়ারবাজার ধস মহাজোট সরকারের নৈতিক ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেন ড. ফারুক। তিনি বলেন, তিন বছরে শেয়ারবাজারে প্রায় ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সর্বহারা হয়েছে। সরকারের নিজস্ব তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যাদের দায়ী করা হয়েছে_ তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে মহাজোট সরকার বিগত বিএনপি সরকারের মূল কার্যক্রমগুলোকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ ও নকলবিহীন পাবলিক পরীক্ষা তাদের সরকারের কার্যক্রম ছিল। লিঙ্গ সমতা, প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তি এবং অন্যান্য মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের উদ্দেশ্যগুলো তাদের সরকারের সময়ই অর্জিত হয়েছিল। ভারত থেকে পাঠ্যপুস্তক আমদানি করা_ এ দেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের অনেক সংকট সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সহিংস কার্যকলাপ এই সরকার কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করতে পারেনি।
অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির ব্যাপারটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে দাবি করে ড. ফারুক বলেন, এই প্রথমবারের মতো সরকারি দুর্নীতির কারণে দাতা গোষ্ঠীগুলো কয়েকটি প্রকল্পের সহায়তা স্থগিত করেছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে বাংলাদেশ সবচেয়ে 'ঘুষপরায়ণ' দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা, প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব করতে যাচ্ছে। ট্রানজিট নিয়ে দেশবাসী এখনও বিক্ষুব্ধ। আখাউড়া বন্দর দিয়ে ভারতীয় মালামাল পারাপারের জন্য তিতাস নদী এবং জলপথে বাঁধ দিয়ে সড়ক নির্মাণ করার ফলে কৃষিকাজ, সেচ, মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দরিদ্র জনগণ দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা ভারতের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই_ কিন্তু এ সরকারের ব্যর্থ নীতির কারণে ভারতের সঙ্গে এ দেশের জনগণের তিক্ততা বাড়িয়ে দিচ্ছে_ এটি কোনোমতেই কাম্য নয়।
মহাজোট সরকারের তিন বছরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক মন্ত্রী ড. ফারুক। তিনি বলেন, বর্তমানে গুপ্ত হত্যা, খুন, গুম বেড়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরকারি প্রশাসন অব্যবহার প্রকট হয়ে উঠছে। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কার্যকলাপে প্রশাসন দিয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৪৩ বার ১৪৪ ধারা জারি করায় বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
সরকার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচনগুলো সুসম্পন্ন করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা। তবে তিনি এও বলেন, সম্প্রতি ৬১ জেলা পরিষদে অনির্বাচিত দলীয় প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করেছে সরকার। রাজনৈতিক বিবেচনায় ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দু'ভাগ করা দূরদর্শিতাপূর্ণ নয়।
যুদ্ধাপরাধ বিচার ইস্যুতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী কার্যকলাপের বিচারকে পূর্ণভাবে সমর্থন করেন। তবে এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হওয়া উচিত নয়। বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
আজ শুক্রবার মহাজোট সরকারের তিন বছরপূর্তি উপলক্ষে সাফল্য ও ব্যর্থতা মূল্যায়ন করে গতকাল একান্ত সাক্ষাৎকারে সমকালকে এসব কথা বলেন ড. ওসমান ফারুক। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, সরকার তিন বছরের কার্যক্রম সম্পর্কে আত্মোপলব্ধি করবে। বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে দেশে সৃষ্ট জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শুধু নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত হবে না। সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ অন্যান্য জাতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন সাবেক এই মন্ত্রী।
সামষ্টিক অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দাবি করে বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, দেশের অর্থনীতি সুনির্দিষ্ট পথে চলছে না। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পরস্পরবিরোধী। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি বেশি হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে। বৈদেশিক অর্থ সাহায্য না আসা, রফতানি হ্রাস এবং আমদানি ব্যয় বহুলাংশে বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে দেশ। যার ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যমান কমে যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। সরকার মূল্যস্ফীতি কিছুতেই সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারছে না। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ, এমনকি ভারত ও শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। পরপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে ফসল ভালো হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকার সাফল্য লাভ করেছে। তবে সার, ডিজেলসহ অন্যান্য কৃষি উপাদানের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সে অনুপাতে কৃষিপণ্যের মূল্য বাড়েনি। এ পরিস্থিতিতে ধান, পাট, আলুসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে কৃষকদের স্বল্প মুনাফা অথবা লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহাজোট সরকার ২৯০০ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে বলে দাবি করছে। এর মধ্যে ৯৫০ মেগাওয়াট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের প্রকল্প। ফলে এ সরকারের আমলে নতুন ১৯৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৬০০-৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। তার মানে, এ সরকারের আমলে নিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াট। এর বেশিরভাগই টেন্ডারবিহীন রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে হয়েছে। এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কেননা এ কেন্দ্রগুলো জ্বালানি তেলভিত্তিক। পিডিবির কেন্দ্রগুলো চেয়ে রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে ৬ গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। জাতীয় বাজেটের ঘাটতির এটি অন্যতম প্রধান কারণ। সামগ্রিকভাবে সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি অর্থনৈতিকভাবে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মনে করেন তিনি।
শেয়ারবাজার ধস মহাজোট সরকারের নৈতিক ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেন ড. ফারুক। তিনি বলেন, তিন বছরে শেয়ারবাজারে প্রায় ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সর্বহারা হয়েছে। সরকারের নিজস্ব তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যাদের দায়ী করা হয়েছে_ তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে মহাজোট সরকার বিগত বিএনপি সরকারের মূল কার্যক্রমগুলোকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ ও নকলবিহীন পাবলিক পরীক্ষা তাদের সরকারের কার্যক্রম ছিল। লিঙ্গ সমতা, প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তি এবং অন্যান্য মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের উদ্দেশ্যগুলো তাদের সরকারের সময়ই অর্জিত হয়েছিল। ভারত থেকে পাঠ্যপুস্তক আমদানি করা_ এ দেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের অনেক সংকট সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সহিংস কার্যকলাপ এই সরকার কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করতে পারেনি।
অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির ব্যাপারটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে দাবি করে ড. ফারুক বলেন, এই প্রথমবারের মতো সরকারি দুর্নীতির কারণে দাতা গোষ্ঠীগুলো কয়েকটি প্রকল্পের সহায়তা স্থগিত করেছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে বাংলাদেশ সবচেয়ে 'ঘুষপরায়ণ' দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা, প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব করতে যাচ্ছে। ট্রানজিট নিয়ে দেশবাসী এখনও বিক্ষুব্ধ। আখাউড়া বন্দর দিয়ে ভারতীয় মালামাল পারাপারের জন্য তিতাস নদী এবং জলপথে বাঁধ দিয়ে সড়ক নির্মাণ করার ফলে কৃষিকাজ, সেচ, মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দরিদ্র জনগণ দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা ভারতের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই_ কিন্তু এ সরকারের ব্যর্থ নীতির কারণে ভারতের সঙ্গে এ দেশের জনগণের তিক্ততা বাড়িয়ে দিচ্ছে_ এটি কোনোমতেই কাম্য নয়।
মহাজোট সরকারের তিন বছরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক মন্ত্রী ড. ফারুক। তিনি বলেন, বর্তমানে গুপ্ত হত্যা, খুন, গুম বেড়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরকারি প্রশাসন অব্যবহার প্রকট হয়ে উঠছে। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কার্যকলাপে প্রশাসন দিয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৪৩ বার ১৪৪ ধারা জারি করায় বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
সরকার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচনগুলো সুসম্পন্ন করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা। তবে তিনি এও বলেন, সম্প্রতি ৬১ জেলা পরিষদে অনির্বাচিত দলীয় প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করেছে সরকার। রাজনৈতিক বিবেচনায় ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দু'ভাগ করা দূরদর্শিতাপূর্ণ নয়।
যুদ্ধাপরাধ বিচার ইস্যুতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী কার্যকলাপের বিচারকে পূর্ণভাবে সমর্থন করেন। তবে এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হওয়া উচিত নয়। বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
No comments