জবিতে উন্নয়ন ফি নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

লতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ধার্যকৃত উন্নয়ন ফি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারী প্রগতিশীল ছাত্রজোট মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্দোলনের তৃতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু'পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে যে আন্দোলন হচ্ছে, তা অযৌক্তিক। তাই এ আন্দোলন বন্ধ করা না হলে কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে কঠোর


পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা বলছে, তাদের দাবি যৌক্তিক। তাই অবিলম্বে ধার্যকৃত এ উন্নয়ন ফি বাতিল করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ৫ হাজার টাকা উন্নয়ন ফি বাতিল দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি মিছিল নিয়ে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
সহকর্মীদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালনের জন্য ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন শতাধিক শিক্ষক। এ সময় ছাত্রজোট তাদের সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে কয়েক দফা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে। দু'পক্ষই সমাবেশে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে দু'পক্ষের এ কর্মসূচি চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করলেও তাদের নীরব থাকতে দেখা গেছে।
শিক্ষকদের সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নয়ন ফি বাতিল দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে যে আন্দোলন হচ্ছে, তা অযৌক্তিক। আন্দোলনের নামে একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এ কারণে তারা শিক্ষকদের ওপর হাত তুলেছে, লাঞ্ছিত করেছে। আন্দোলনের নামে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে বিনষ্ট করার এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
অন্যদিকে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমাবেশে বক্তারা বলেন, তাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ অপচেষ্টা করছে। উন্নয়ন ফি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা উন্নয়ন ফি প্রত্যাহারের জোরালো দাবি তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, সরকার থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের ১৬ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করতে হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ১শ' কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ টাকা ছাড় করাতে হলে ১৬ কোটি টাকার প্রয়োজন। এ জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উন্নয়ন ফি নেওয়া ছাড়া আপাতত বিকল্প কোনো পথ নেই বলে জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.