সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বেকায়দায় জারদারি
মানবজমিন ডেস্ক: পাকিস্তানে দুর্নীতি মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে সুপ্রিমকোর্ট সরকারকে শেষবারের মতো চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এতে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিসহ অসংখ্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, রাজনীতিক। সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার দেয়া এক রায়ে আগামী ১০ই জানুয়ারির মধ্যে ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন অর্ডিন্যান্স (এনআরও) বাস্তবায়ন করতে সরকারকে শেষবারের মতো সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, এরপর আর কোন নির্দেশ জারি করা হবে না। কেবল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিচারপতি আসিফ সাঈদ খানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ বেঞ্চ এক রায়ে বলেছেন, এনআরও বাতিল করার জন্য সরকারকে শেষবারের মতো সময় দেয়া হয়েছে। সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ ২০০৭ সালে এক ঘোষণার মাধ্যমে এ অর্ডিন্যান্স জারি করেছিলেন। এ অর্ডিন্যান্সের ফলে আসিফ আলী জারদারির নামে দুর্নীতির মামলা থাকলেও তিনি সাধারণ ক্ষমার আওতায় আসেন। একই সুবিধা পান বহু রাজনীতিক ও কর্মকর্তা। ওই অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো থেকে তাদের রেহাই দেয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার কোর্টের বেঞ্চ তার রায়ে বলেছেন, কর্তৃপক্ষ যদি সুপ্রিম কোর্টের এ নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আদালত বাধ্য হয়ে কর্তব্যবিমুখ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং এর বিরুদ্ধে নির্দেশ জারি করবে। মঙ্গলবার দেয়া সুপ্রিম কোর্টের এ রায় জারদারি এবং সরকারকে বেশ চাপের মধ্যে ফেলেছে। সরকার ইতিমধ্যেই মেমোগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তের সম্মুখীন হয়েছে। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট এনআরও’কে আমলে নেয়ার পর থেকেই দুর্নীতি মামলাগুলোকে আবার চালু করার জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারকে চাপ দিচ্ছে। সুইজারল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দায়ের করা অর্থ পাচারের মামলাও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সরকার এ ব্যাপারেও কোন পদক্ষেপ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সরকার বলছে, জারদারির বর্তমান পদমর্যাদার কারণে তাকে বিচারের সম্মুখীন করা যাবে না। বেঞ্চ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো চেয়ারম্যান ফাসিহ বুখারি এবং প্রসিকিউটর জেনারেল করিম খান আগাকে আদালতে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে কি ধরনের ব্যবস্থা নিতে চান তা লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ২৪শে নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি বেঞ্চ এনআরও বাতিলের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের আবেদনও নাকচ করে দিয়েছে।
No comments