বিশিষ্টজনের প্রতিক্রিয়া : বিএনপির ওপর পদ্মা সেতুর দুর্নীতির দায় চাপানো হাস্যকর by রকিবুল হক
বিএনপির দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। গতকাল আমার দেশকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য একদিকে হাস্যকর, অন্যদিকে জাতির জন্য চরম লজ্জার বিষয়। কারণ পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বর্তমান সরকারের সময়ে। দুর্নীতি হলে তাদের সময়েই হয়েছে, যে কারণে বিশ্বব্যাংক ওই প্রকল্পের অর্থছাড় স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
কিন্তু এই দুর্নীতির দায় পাঁচ বছর আগে ক্ষমতা ছাড়া বিএনপির ওপর চাপানো হাস্যকর ব্যাপার। পদ্মা সেতুসম্পর্কিত দুর্নীতি বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে জনমতের বিপরীতে দাঁড়াতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের অসত্য বক্তব্য দেয়া জাতির জন্য চরম লজ্জার। তারা বলেন, এ ধরনের উক্তিতে শুধু শেখ হাসিনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, ভবিষ্যত্ রাজনীতিতে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বুধবার পাটগ্রাম জসিমউদ্দিন সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির দুর্নীতির জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কাছে ডকুমেন্ট চেয়েছিলাম। তারা দুটি ডকুমেন্ট দিয়েছে, সে দুটিই বিএনপির যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য হাস্যকর মনে হয়েছে। কারণ বিএনপির সময় তো পদ্মা সেতু প্রকল্পই ছিল না, তাহলে কীভাবে বিএনপির আমলে দুর্নীতি হয়েছে? আমি ও অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য টেলিভিশনে শুনেছি। সবাই হাসাহাসি করেছেন। তবে রাজনীতিকরা এ ধরনের কথা বলতে পারেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াও কথা বলেছেন। তবে আমরা জনগণ জানি, কাদের দুর্নীতির কারণে এই অবস্থা হয়েছে।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হবে যে, বিএনপির আমলের দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে কোনো প্রমাণ ছাড়াই তিনি এমন কথা বলবেন, যা সত্য নয়। এটা জাতির জন্য লজ্জার ব্যাপার। পদ্মা সেতুর ব্যাপারে বিএনপির দুর্নীতি প্রমাণে ব্যর্থ হলে জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অসত্য ভাষণে কতটা পারদর্শী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহ্বুবউল্লাহ্ বলেন, বিএনপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক এখন কেন ব্যবস্থা নেবে? তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এ সরকারের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে যখন টাকা ছাড় হচ্ছে না তখন বিএনপির দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, এটা তো হাস্যকর।
বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের যে আপত্তিগুলো প্রকাশিত হয়েছে, তার একটা বড় সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মাধ্যমে এই প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে দাঁড়াতে চেয়েছেন। বিএনপিকে দোষারোপ করে তিনি তার নিজের দুর্নীতির ঘটনা ঢাকতে চেয়েছেন। আমাদের গ্রামদেশে একটা কথা আছে— ‘অন্যে যদি ময়লা খায়, তুমিও কি খাবা?’ প্রধানমন্ত্রীর কথা অনেকটা সেরকম। এর আগে বিএনপি দুর্নীতি করেছে বলে আমিও করব—এটা একজন প্রধানমন্ত্রীসুলভ মন্তব্য হয়নি।
বিশিষ্ট রাজনীতিক ও জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, রুচিহীন ও বেহায়া প্রকৃতির মানুষ ছাড়া কেউ এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে না। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হলো এ আমলে, আর দায় চাপানো হচ্ছে আগের আমলের সরকারের ওপর। একটি প্রবাদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কোনো বাহানায় মেষশাবককে হত্যা করার মতো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। এই আমলের চুরি-চামারির দায় বিএনপির ওপর চাপালেন, অর্থাত্ ‘তুই না করলে তোর বাপ করেছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য দুঃখজনক। এর মাধ্যমে রাজনীতিকে মিথ্যাচারের ওপর দাঁড় করানো হচ্ছে। এতে শুধু শেখ হাসিনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, ভবিষ্যতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি শুধু শেখ হাসিনাকে নয়, গোটা রাজনীতি ও রাজনীতিকদের দায়িত্বশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। প্রধানমন্ত্রী ও রাজনীতিক হিসেবে শেখ হাসিনার সতর্ক হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার পাটগ্রাম জসিমউদ্দিন সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির দুর্নীতির জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কাছে ডকুমেন্ট চেয়েছিলাম। তারা দুটি ডকুমেন্ট দিয়েছে, সে দুটিই বিএনপির যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য হাস্যকর মনে হয়েছে। কারণ বিএনপির সময় তো পদ্মা সেতু প্রকল্পই ছিল না, তাহলে কীভাবে বিএনপির আমলে দুর্নীতি হয়েছে? আমি ও অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য টেলিভিশনে শুনেছি। সবাই হাসাহাসি করেছেন। তবে রাজনীতিকরা এ ধরনের কথা বলতে পারেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াও কথা বলেছেন। তবে আমরা জনগণ জানি, কাদের দুর্নীতির কারণে এই অবস্থা হয়েছে।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হবে যে, বিএনপির আমলের দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে কোনো প্রমাণ ছাড়াই তিনি এমন কথা বলবেন, যা সত্য নয়। এটা জাতির জন্য লজ্জার ব্যাপার। পদ্মা সেতুর ব্যাপারে বিএনপির দুর্নীতি প্রমাণে ব্যর্থ হলে জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অসত্য ভাষণে কতটা পারদর্শী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহ্বুবউল্লাহ্ বলেন, বিএনপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক এখন কেন ব্যবস্থা নেবে? তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এ সরকারের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে যখন টাকা ছাড় হচ্ছে না তখন বিএনপির দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, এটা তো হাস্যকর।
বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের যে আপত্তিগুলো প্রকাশিত হয়েছে, তার একটা বড় সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মাধ্যমে এই প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে দাঁড়াতে চেয়েছেন। বিএনপিকে দোষারোপ করে তিনি তার নিজের দুর্নীতির ঘটনা ঢাকতে চেয়েছেন। আমাদের গ্রামদেশে একটা কথা আছে— ‘অন্যে যদি ময়লা খায়, তুমিও কি খাবা?’ প্রধানমন্ত্রীর কথা অনেকটা সেরকম। এর আগে বিএনপি দুর্নীতি করেছে বলে আমিও করব—এটা একজন প্রধানমন্ত্রীসুলভ মন্তব্য হয়নি।
বিশিষ্ট রাজনীতিক ও জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, রুচিহীন ও বেহায়া প্রকৃতির মানুষ ছাড়া কেউ এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে না। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হলো এ আমলে, আর দায় চাপানো হচ্ছে আগের আমলের সরকারের ওপর। একটি প্রবাদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কোনো বাহানায় মেষশাবককে হত্যা করার মতো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। এই আমলের চুরি-চামারির দায় বিএনপির ওপর চাপালেন, অর্থাত্ ‘তুই না করলে তোর বাপ করেছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য দুঃখজনক। এর মাধ্যমে রাজনীতিকে মিথ্যাচারের ওপর দাঁড় করানো হচ্ছে। এতে শুধু শেখ হাসিনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, ভবিষ্যতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি শুধু শেখ হাসিনাকে নয়, গোটা রাজনীতি ও রাজনীতিকদের দায়িত্বশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। প্রধানমন্ত্রী ও রাজনীতিক হিসেবে শেখ হাসিনার সতর্ক হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
No comments