ফুকুশিমার ভূগর্ভস্থ পানিতে বিপজ্জনক তেজস্ক্রিয় পদার্থ
জাপানের দুর্ঘটনাকবলিত ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের ভূগর্ভস্থ পানিতে ক্যানসার ঘটায় এমন তেজস্ক্রিয় পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। পারমাণবিক কেন্দ্রটির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বুধবার এ কথা জানিয়েছে। এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ যাতে সমুদ্রের পানিতে না ছড়ায় সেই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, পরীক্ষায় উচ্চমাত্রার বিষাক্ত স্ট্রোনটিয়াম-৯০-এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এটা পারমাণবিক বিভাজনের একটি উপজাত দ্রব্য। এতে দূষিত পানি পান করা হলে তা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের ভূগর্ভস্থ পানিতে এটা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৩০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। টেপকো আরও জানিয়েছে, স্ট্রোনটিয়াম-৯০-এর পাশাপাশি ট্রিটিয়ামের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে। এটা হাইড্রোজেনের একটি তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ যা অন্ধকারে আলো দেওয়া ঘড়িতে ব্যবহার করা হয়। এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে আট গুণ বেশি পাওয়া গেছে। সংবাদ সম্মেলনে টেপকোর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ পানির সংগৃহীত নমুনায় আমরা প্রতি লিটারে পাঁচ লাখ বেকুয়ারেল ট্রিটিয়াম শনাক্ত করেছি, যা খুবই উচ্চমাত্রার। ২০১১ সালের মার্চ মাসে জাপানে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্প ও তা থেকে থেকে সৃষ্ট সুনামিতে ফুকুশিমা পারমাণবিক প্রকল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন এসব তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে। মাটি এগুলো শুষে না নেওয়ায় তা ভূগর্ভস্থ পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। ভূগর্ভস্থ পানি সাধারণত সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। তার মানে এই দুই ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্বাভাবিকভাবেই অদূরে থাকা সমুদ্রের পানিতে পৌঁছে যেতে পারে। এতে করে সামুদ্রিক জীবনচক্র প্রভাবিত হতে পারে। এতে দূষিত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক খাদ্য খেলে মানুষের ওপরও তার প্রভাব পড়তে পারে। টেপকোর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সমুদ্রের পানির নমুনা পরীক্ষা করে ওই দুই ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা যায়নি। তাঁদের কোম্পানির বিশ্বাস, পারমাণবিক কেন্দ্রটির ভূগর্ভস্থ পানির বেশির ভাগই কংক্রিট নির্মিত ভিত্তি এবং লোহার আস্তর দিয়ে ঘেরা আছে। এএফপি।
No comments