জলদস্যুরা তৎপর- জেলেদের নিরাপত্তা দিন
ভোলার মেঘনা ও সাগর মোহনায় জলদস্যুরা গত
এক সপ্তাহে অন্তত ৯টি ট্রলারে হামলা চালিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কয়েকজন
জেলেকে অপহরণ করেছে। দস্যুরা কয়েকটি ট্রলার আর জালও ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
অপহৃত
৯ জেলে মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার হলেও দু'জনের কোনো খোঁজ বুধবার পর্যন্ত
মেলেনি। বৃহস্পতিবার সমকালে 'ইলিশ মৌসুমের শুরুতেই অপহরণ আতঙ্কে জেলেরা'
শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, কোস্টগার্ডের তৎপরতা সত্ত্বেও চিহ্নিত
জলদস্যুরা হামলা ও অপহরণ বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারছে। এ কারণে স্থানীয় থানা
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। পুলিশ প্রশাসন জলদস্যুদের হাত থেকে
ট্রলার, জাল ও জেলেদের রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে কি? এটা জানা যে,
ইলিশ মৌসুমে বা মাছ ধরার মৌসুমে আমাদের নদীগুলোর মোহনা ও সমুদ্রে
জলদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত
হয় না, বাণিজ্যিক নৌযান লুট করতেও ছাড়ে না। তাই জেলেদের নিরাপত্তা বিধান
করা ছাড়াও নদী ও সমুদ্রের মোহনায় বাণিজ্যিক নৌযান চলাচলে জলদস্যুর
আতঙ্কমুক্ত করা জরুরি। আমরা ইতিপূর্বেও নদীপথে নিরাপত্তা জোরদার করার
আহ্বান জানিয়েছিলাম। প্রশাসন নিরাপত্তা জোরদারে কতিপয় পদক্ষেপও গ্রহণ
করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে জলদস্যুদের বেশ ক'টি আস্তানা ধ্বংস ও
কয়েকটি জলদস্যু গ্রুপের বেশ কিছু সদস্য হতাহত ও আটক হয়েছে। এর ফলে নদী ও
সমুদ্রে নিরাপত্তা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সার্বক্ষণিক জোরদার নিরাপত্তা
তৎপরতা বহাল না থাকার ফলে জলদস্যুরা সুযোগ বুঝে পুনরায় হামলা চালাতে সক্ষম
হচ্ছে। কোস্টগার্ডের একার পক্ষে জলদস্যুদের নির্মূল করা সম্ভব নয়। কারণ
তারা জলপথে দস্যুতা চালালেও তাদের বাস কিন্তু সনি্নহিত এলাকায়। সে কারণে
থানা পুলিশকে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেই হবে। তাদের আস্তানার
খোঁজও পুলিশের কাছে বেশি থাকে। তাই কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌপুলিশের সমন্বিত
ব্যবস্থার মাধ্যমে জলদস্যু পাকড়াও অভিযান চালানো হলে অধিক সাফল্য পাওয়া
যাবে। আর জলপথের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি একটি
নিরাপত্তা ছক আঁকাও প্রয়োজন। এই নতুন ব্যবস্থায় জলপথে দস্যুতাসহ সব ধরনের
অপরাধ মোকাবেলা করা যাবে। আমরা আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে ত্বরিত কার্যকর
ব্যবস্থা নিয়ে জলপথের নিরাপত্তা বিধানে এগিয়ে আসবে।
No comments