বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশ-দরিদ্র মানুষ কমেছে ১ কোটি ৬০ লাখ-সরকার ও প্রশাসনের কাঠামোয় পরিবর্তন দরকার : অর্থমন্ত্রী
১০ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশে দরিদ্র
মানুষের সংখ্যা এক কোটি ৬০ লাখ কমে এসেছে। ২০০০ সালে দেশে দরিদ্র মানুষের
সংখ্যা ছিল ছয় কোটি ৩০ লাখ। ২০১০ সালে তা নেমে আসে চার কোটি ৭০ লাখে। এই এক
দশকে দারিদ্র্য কমেছে ১.৭ শতাংশ হারে।
বিশ্বব্যাংকের এক
প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়ে বলা হয়, দারিদ্র্য বিমোচনে নির্ধারিত সময়ের দুই বছর
আগেই জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) পৌঁছে যাবে
বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার রূপসী বাংলা হোটেলে 'বাংলাদেশ পোভার্টি
অ্যাসেসমেন্ট' শিরোনামে বিশ্বব্যাংক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনের সাফল্য ধরে রাখতে হলে সরকার ও প্রশাসনের কাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। এ ছাড়া প্রশাসনকে ঢাকায় আবদ্ধ না রেখে স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। স্থানীয় শাসনব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করতে কঠোর সিদ্ধান্তে আসা দরকার বলেও অর্থমন্ত্রী মত দেন। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এ দেশে ১৫ কোটি মানুষ বাস করে। তাদের সবার জীবনের প্রতিটি বিষয় ঢাকা থেকে নির্ধারণ করা হয়। এটা অসম্ভব, দুর্নীতিপরায়ণ ও অদক্ষ।'
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এসব খাতে কোনো সফলতা পাচ্ছি না। এ জন্য আমাদের কয়েকটি বিশেষ বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে ব্যক্তির শিক্ষা ও যোগ্যতার উন্নয়ন করা, সরকার ও প্রশাসনের কাঠামোর (দুর্নীতিপরায়ণ, অদক্ষ ও অস্বচ্ছতা) পরিবর্তন করা প্রয়োজন।'
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাংকের দরিদ্র মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংক আমাদের টাকা দিয়ে সাহায্য করে। এর চেয়ে বড় সাহায্য করে বিভিন্ন প্রতিবেদন দিয়ে।' 'এটা অত্যন্ত মূল্যবান সমীক্ষা' মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত চার বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও এশিয়ার ১৪টি এবং আফ্রিকার ১০টি দেশ ৬ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে রয়েছে। এটা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দরিদ্রদের তিন ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে- যা ২০০০ সাল, ২০০৫ ও ২০১০ সালে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দেশের বিভাগগুলোর মধ্যে ছয়টির দারিদ্র্য বিশ্লেষণে দেখা যায়- বরিশাল বিভাগে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এর পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম।
২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে দরিদ্রের হার ৩৯.৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ৩৫.৬ শতাংশ, খুলনায় ৩২.১ শতংশ, ঢাকায় ৩০.৫ শতাংশ, সিলেটে ২৮.১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ২৬.২ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি ইয়োহানেস সুট উপস্থিত ছিলেন।
চরম দারিদ্র্য কমেছে : জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে চরম দরিদ্র জনসংখ্যা ১৬.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। সংখ্যার বিচারে এটি তিন কোটি ৭২ লাখ থেকে দুই কোটি ৫৩ লাখে নেমে এসেছে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছর আগেই বাংলাদেশ তা অর্জন করে এবং এ জন্য এফএও বাংলাদেশকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করে। এফএওর সদর দপ্তর রোমে গত ১৬ জুন সংস্থাটির ৩৮তম কনফারেন্সে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে খাদ্যমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এফএওর মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো ডি সিলভার কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। গতকাল তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে খাদ্যমন্ত্রী প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
খাদ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ২০০৯ সালে একজন দিনমজুর দিনের আয় দিয়ে সাড়ে চার কেজি চাল কিনতে পারত। এখন একজন দিনমজুর দিনের আয় দিয়ে প্রায় সাড়ে আট কেজি চাল কিনতে পারে। তিনি বলেন, সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খোলাবাজারে চাল বিক্রিসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করেছে। ফলে বাজারে চালের সরবরাহ যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনি দামও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা গেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনের সাফল্য ধরে রাখতে হলে সরকার ও প্রশাসনের কাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। এ ছাড়া প্রশাসনকে ঢাকায় আবদ্ধ না রেখে স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। স্থানীয় শাসনব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করতে কঠোর সিদ্ধান্তে আসা দরকার বলেও অর্থমন্ত্রী মত দেন। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এ দেশে ১৫ কোটি মানুষ বাস করে। তাদের সবার জীবনের প্রতিটি বিষয় ঢাকা থেকে নির্ধারণ করা হয়। এটা অসম্ভব, দুর্নীতিপরায়ণ ও অদক্ষ।'
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এসব খাতে কোনো সফলতা পাচ্ছি না। এ জন্য আমাদের কয়েকটি বিশেষ বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে ব্যক্তির শিক্ষা ও যোগ্যতার উন্নয়ন করা, সরকার ও প্রশাসনের কাঠামোর (দুর্নীতিপরায়ণ, অদক্ষ ও অস্বচ্ছতা) পরিবর্তন করা প্রয়োজন।'
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাংকের দরিদ্র মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংক আমাদের টাকা দিয়ে সাহায্য করে। এর চেয়ে বড় সাহায্য করে বিভিন্ন প্রতিবেদন দিয়ে।' 'এটা অত্যন্ত মূল্যবান সমীক্ষা' মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত চার বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও এশিয়ার ১৪টি এবং আফ্রিকার ১০টি দেশ ৬ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে রয়েছে। এটা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দরিদ্রদের তিন ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে- যা ২০০০ সাল, ২০০৫ ও ২০১০ সালে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দেশের বিভাগগুলোর মধ্যে ছয়টির দারিদ্র্য বিশ্লেষণে দেখা যায়- বরিশাল বিভাগে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এর পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম।
২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে দরিদ্রের হার ৩৯.৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ৩৫.৬ শতাংশ, খুলনায় ৩২.১ শতংশ, ঢাকায় ৩০.৫ শতাংশ, সিলেটে ২৮.১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ২৬.২ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি ইয়োহানেস সুট উপস্থিত ছিলেন।
চরম দারিদ্র্য কমেছে : জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে চরম দরিদ্র জনসংখ্যা ১৬.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। সংখ্যার বিচারে এটি তিন কোটি ৭২ লাখ থেকে দুই কোটি ৫৩ লাখে নেমে এসেছে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছর আগেই বাংলাদেশ তা অর্জন করে এবং এ জন্য এফএও বাংলাদেশকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করে। এফএওর সদর দপ্তর রোমে গত ১৬ জুন সংস্থাটির ৩৮তম কনফারেন্সে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে খাদ্যমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এফএওর মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো ডি সিলভার কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। গতকাল তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে খাদ্যমন্ত্রী প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
খাদ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ২০০৯ সালে একজন দিনমজুর দিনের আয় দিয়ে সাড়ে চার কেজি চাল কিনতে পারত। এখন একজন দিনমজুর দিনের আয় দিয়ে প্রায় সাড়ে আট কেজি চাল কিনতে পারে। তিনি বলেন, সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খোলাবাজারে চাল বিক্রিসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার করেছে। ফলে বাজারে চালের সরবরাহ যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনি দামও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা গেছে।
No comments