মূল্যস্ফীতি চলে যাচ্ছে ॥ বিপজ্জনক মাত্রায়- বোরো ফলনে সমস্যা হলে পরিস্থিতির অবনতি, নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দুর্ভোগ বাড়বে by কাওসার রহমান
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্যে দীর্ঘ
১৬ মাস পর মূল্যস্ফীতি বিপজ্জনক মাত্রায় চলে যাচ্ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর
জানুয়ারি মাসের হিসাবেই এ মূল্যস্ফীতি ঝুঁকিপূর্ণ সীমা অতিক্রম করে গেছে।
বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বিপজ্জনক মাত্রায় চলে গেছে। ফলে সাধারণ
মানুষের ওপর সৃষ্টি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি প্রচণ্ড চাপ। বোরো ফলনে সমস্যা দেখা
দিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। ফলে এখন থেকেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব না হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। অর্থনীতিবিদরা এ ব্যাপারে
সরকারকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব না হলে দেশে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হবে। মানুষের ক্রয় ৰমতা কমে গিয়ে
অর্থনীতিকে স্থবিরতার সৃষ্টি হবে।
পণ্য মূল্যের উর্ধগতিতে জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি দীর্ঘ ১৬ মাস পর নয় শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটা সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। সাধারণ মূল্যস্ফীতি ডবল ডিজিটের পথে অগ্রসর হলেও, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে দুই অঙ্কের ঘর অতিক্রম করে গেছে। জানুয়ারি মাসে এসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা গত ডিসেম্বর '০৯ মাসে ছিল নয় দশমিক পাঁচ শতাংশ, যা গরিব এবং নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে আঘাত করছে। এটা সবচেয়ে বেশি আঘাত করছে শহর এলাকার সীমিত আয়ের মানুষকে। কারণ শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ অতিক্রম করে গেছে। যা ডিসেম্বর মাসে ছিল ১১ শতাংশের কিছু বেশি। তবে গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ডবল ডিজিটের নিচে অবস্থান করছে। জানুয়ারি মাসে গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৮১ শতাংশ। তবে অন্যান্য পণ্য ও সেবার মূল্য স্থিতিশীল থাকায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বরং হ্রাস পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে তা ছয় দশমিক ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা ডিসেম্বর মাসে ছিল সাত শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেশে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিনিয়োগহীনতা। ব্যাংকগুলোতে বিপুল পরিমাণ তারল্য জমে থাকলেও বিনিয়োগ হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই রিজার্ভ কোন কাজে না লাগলেও প্রবাসী আয় বাজারে এসে বৃদ্ধি করছে মূল্যস্ফীতির চাপ। আর এই চাপ পড়ছে গিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ওপর। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। খরচের হিসাব মেলাতে গিয়ে পণ্যের পরিমাণ কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডক্টর জায়েদ বখ্ত বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি করেছে। দেশে নিত্যপ্র্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদে ঘাটতি নেই। কিন্তু ব্যবসায়ীরা পণ্যের সরবরাহে লাগাম টেনে ধরছে। ফলে পণ্য মূল্য বেড়ে গিয়ে এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরো জানুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতি প্রস্তুত করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জানুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৯৯ শতাংশে। যা ডিসেম্বরে ছিল আট দশমিক ৫১ শতাংশ। নবেম্বরে এ হার ছিল সাত দশমিক ২৪ শতাংশ। অক্টোবর ছিল ছয় দশমিক ৭১ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে চার দশমিক ৬০ শতাংশ, আগস্টে চার দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং জুলাইয়ে ছিল তিন দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ওই হার কমতে কমতে জুনে তা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দুই দশমিক ২৫ শতাংশে নেমে এসেছিল।
ইতোপূর্বে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের কোটা অতিক্রম করেছিল। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ছয় শতাংশ।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে 'ঝুঁকিপূর্ণ সীমা' অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি আট শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় সতর্ক হতে হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্ক (ডবল ডিজিট) ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে মূল্যস্ফীতি আবার ডবল ডিজিটে চলে যাওয়ায় তারা এটা নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করছে। কারণ এই মূল্যস্ফীতি গণঅসন্তোষের সৃষ্টি করতে পারে।
মন্দা কেটে যাওয়ার প্রভাবে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্যে উর্ধমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই দাম বাড়ার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়তে শুরু করেছে। কারণ ভোগ্য পণ্যের বড় অংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি তৈরি হচ্ছে।
উচ্চ মূল্যের কারণে সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে সঙ্কটে পড়েছে। বাড়তি দাম দিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্যের সংস্থান করতে গিয়ে আয়ের সিংহভাগই চলে যাচ্ছে। ফলে অন্য কাজে ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং বাজারে পণ্য অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণ করে আগামী দিনগুলোর সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। সামনে রোজা আসছে। তাই এখন থেকেও পরিকল্পনা করে পর্যাপ্ত প্রস্তৃতি গ্রহণ করা না হলে, ওই সময় বাজার আরও বেসামাল হয়ে পড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক অর্থনীতিবিদ ডক্টর জায়েদ বখ্ত বলেন, মূল্যস্ফীতির উর্ধগতির চিত্রটি আশান্বিত হওয়ার মতো নয়। তাই এখন থেকেই সরকারকে মূল্য নিয়ন্ত্রণে তৎপর হতে হবে। আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি করে মজুদ গড়ে তুলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সময়ে তা বাজারে ছাড়তে হবে। যাতে মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি হতে না পারে।
তিনি বলেন, পণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। তাই বোরো ফসল যাতে ঠিকমতো হয়, সে জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। বোরোতে সমস্যা দেখা দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। দেশে এমনিতেই বিনিয়োগ কম। মূল্যস্ফীতি বাড়লে বিনিয়োগ আরও কমে যাবে। কমবে মানুষের ক্রয় ৰমতা। যা অর্থনীতিতে সৃষ্টি করবে স্থবিরতা।
পণ্য মূল্যের উর্ধগতিতে জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি দীর্ঘ ১৬ মাস পর নয় শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটা সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। সাধারণ মূল্যস্ফীতি ডবল ডিজিটের পথে অগ্রসর হলেও, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে দুই অঙ্কের ঘর অতিক্রম করে গেছে। জানুয়ারি মাসে এসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা গত ডিসেম্বর '০৯ মাসে ছিল নয় দশমিক পাঁচ শতাংশ, যা গরিব এবং নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে আঘাত করছে। এটা সবচেয়ে বেশি আঘাত করছে শহর এলাকার সীমিত আয়ের মানুষকে। কারণ শহর এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ অতিক্রম করে গেছে। যা ডিসেম্বর মাসে ছিল ১১ শতাংশের কিছু বেশি। তবে গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ডবল ডিজিটের নিচে অবস্থান করছে। জানুয়ারি মাসে গ্রাম এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৮১ শতাংশ। তবে অন্যান্য পণ্য ও সেবার মূল্য স্থিতিশীল থাকায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বরং হ্রাস পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে তা ছয় দশমিক ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা ডিসেম্বর মাসে ছিল সাত শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেশে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিনিয়োগহীনতা। ব্যাংকগুলোতে বিপুল পরিমাণ তারল্য জমে থাকলেও বিনিয়োগ হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই রিজার্ভ কোন কাজে না লাগলেও প্রবাসী আয় বাজারে এসে বৃদ্ধি করছে মূল্যস্ফীতির চাপ। আর এই চাপ পড়ছে গিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ওপর। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। খরচের হিসাব মেলাতে গিয়ে পণ্যের পরিমাণ কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডক্টর জায়েদ বখ্ত বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি করেছে। দেশে নিত্যপ্র্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদে ঘাটতি নেই। কিন্তু ব্যবসায়ীরা পণ্যের সরবরাহে লাগাম টেনে ধরছে। ফলে পণ্য মূল্য বেড়ে গিয়ে এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরো জানুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতি প্রস্তুত করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জানুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৯৯ শতাংশে। যা ডিসেম্বরে ছিল আট দশমিক ৫১ শতাংশ। নবেম্বরে এ হার ছিল সাত দশমিক ২৪ শতাংশ। অক্টোবর ছিল ছয় দশমিক ৭১ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে চার দশমিক ৬০ শতাংশ, আগস্টে চার দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং জুলাইয়ে ছিল তিন দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ওই হার কমতে কমতে জুনে তা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দুই দশমিক ২৫ শতাংশে নেমে এসেছিল।
ইতোপূর্বে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের কোটা অতিক্রম করেছিল। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ছয় শতাংশ।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে 'ঝুঁকিপূর্ণ সীমা' অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি আট শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় সতর্ক হতে হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্ক (ডবল ডিজিট) ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে মূল্যস্ফীতি আবার ডবল ডিজিটে চলে যাওয়ায় তারা এটা নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করছে। কারণ এই মূল্যস্ফীতি গণঅসন্তোষের সৃষ্টি করতে পারে।
মন্দা কেটে যাওয়ার প্রভাবে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্যে উর্ধমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই দাম বাড়ার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়তে শুরু করেছে। কারণ ভোগ্য পণ্যের বড় অংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি তৈরি হচ্ছে।
উচ্চ মূল্যের কারণে সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে সঙ্কটে পড়েছে। বাড়তি দাম দিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্যের সংস্থান করতে গিয়ে আয়ের সিংহভাগই চলে যাচ্ছে। ফলে অন্য কাজে ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং বাজারে পণ্য অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণ করে আগামী দিনগুলোর সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। সামনে রোজা আসছে। তাই এখন থেকেও পরিকল্পনা করে পর্যাপ্ত প্রস্তৃতি গ্রহণ করা না হলে, ওই সময় বাজার আরও বেসামাল হয়ে পড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক অর্থনীতিবিদ ডক্টর জায়েদ বখ্ত বলেন, মূল্যস্ফীতির উর্ধগতির চিত্রটি আশান্বিত হওয়ার মতো নয়। তাই এখন থেকেই সরকারকে মূল্য নিয়ন্ত্রণে তৎপর হতে হবে। আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি করে মজুদ গড়ে তুলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সময়ে তা বাজারে ছাড়তে হবে। যাতে মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি হতে না পারে।
তিনি বলেন, পণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। তাই বোরো ফসল যাতে ঠিকমতো হয়, সে জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। বোরোতে সমস্যা দেখা দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। দেশে এমনিতেই বিনিয়োগ কম। মূল্যস্ফীতি বাড়লে বিনিয়োগ আরও কমে যাবে। কমবে মানুষের ক্রয় ৰমতা। যা অর্থনীতিতে সৃষ্টি করবে স্থবিরতা।
No comments