প্রাণের গভীরে- বন্ধুর কাছে খোলা চিঠি...

বন্ধু,তুই কেমন আছিস? নিশ্চয় ভালো। তুই ভাল থাক এটা আশা করি। বন্ধু আজ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে! কেন জান, আমার এই মর্মান্তিক কাহিনী তোকে লিখতে হচ্ছে এ জন্য! আচ্ছা যদি আমার কষ্ট হয়, তোর কষ্ট হবে না? নিশ্চয় হবে? তাই তো আমার কষ্টের কথাগুলো আজ আমি কলমের ডগায় তুলে সাদা কাগজে গুজে দিয়ে ডি প্রজন্মের মাধ্যমে তোকে জানালাম
। আচ্ছা বন্ধ,ু তুই তো জানিস এখন আমার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। এখন শুধু অপেক্ষা জানুয়ারি মাস আসার। জানুয়ারিতে আমি আবার নতুন ক্লাসে উঠব এবং নতুন বই হাতে পাব। আর তখন মন দিয়ে লেখাপড়া করব। তাই না বন্ধু। এখন কি বাসায় একা পড়তে ইচ্ছা করবে, তুই বল? এখন কোন ছাত্রের কি ইচ্ছা হবে পড়ার? কারণ কেন জান এখন শীতকাল। প্রচ- শীত পড়ে। সূর্য উঠে অনেক দেরিতে। কারণ, কুয়াশার চাদর ভেদ করে আসতে হয়। গ্রামের সোনার ছেলেরা কাঁচা সবুজ কুয়াশাভেজা ঘাসে আলতু পায়ে এগিয়ে যায় দূর খেলার মাঠে। তারা খুব সুন্দর করে খেলে। তাই আমারও ইচ্ছা হয় তাদের মতো করে খেলতে। কিন্তু পারি না। কেন জান? সব আমার মেজো ভাইয়ার জন্য। বড় ভাইয়াটা খুব ভাল। তাই তো আমি তাকে বেশি ভালবাসি। মেজো ভাইয়া আমাকে প্রচ- মার দেয়। আর আমি গাধার ন্যায় তা হজম করি। তার আচরণের পাল্টা জবাব দেয়ার সাহস নেই। আমাকে মার দেয়া তার রুটিনের প্রথম কলামে আছে। আমি তাকে যমের মতো ভয় করি। আজ রাতে আমি অঙ্ক কষছিলাম। পড়ার টেবিলের এককোণে আমি, অন্য কোণে মেজো ভাইয়া। বাসাভর্তি মেহমান। আমার সম বয়সী কয়েকজনও আছে। আমার সহজ-সরল মন বার বার চায় একবার তাদের সঙ্গে বসে কথা বলতে! কিন্তু পারি না বন্ধু। কেন জান? মেঝ ভাইয়া! তার কড়া নির্দেশ আজ রাতে নাকি আমাকে গণিত বই ঢ়ধৎঃ ঃড় ষধংঃ করে দিতে হবে? আচ্ছা বন্ধু তা কি হয়? এক রাতে একটা বই কখনও শেষ করা যায়! তবু প্রাণের ভয়ে করছিলাম। কিন্তু বন্ধু কতক্ষণ আর করা যায় বল। রাত ১২টা পর্যন্ত করলাম। তারপর দু’চোখে নেমে আসল রাজ্যের ঘুম! এখন কি না-ঘুমিয়ে থাকা যায় বন্ধু! যায় না, তাইতো আমি ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু ঘুমানো হলো না। মেজো ভাইয়া আমাকে ঘুম হতে তুলে সে কি মার! তা আমি কলমের ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তুই অনুমান করে নিস। কান্নাকে সঙ্গী করে ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু ঘুম আসে না, বন্ধু। সকালে ঘুম হতে ওঠার পর আবার মারল। আমি কান্না করছিলাম। বুকে হাল্কা আঘাত পেলাম। বাঁ বাহু ফুলে গেল। শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেঁতলে গেলো। তবু নীরবে সহ্য করলাম। কাঁদতে ইচ্ছা করে উচ্চ স্বরে কিন্তু পারি না। কেন জান? আমার কাঁধে চেপে থাকা ভূতটা জোরে কাঁদতেও দেয় না। বন্ধ,ু হঠাৎ আমার চোখ পড়ল আমার সমবয়সী এক কিশোরীর ওপর। সে লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। সেকি আমার কষ্ট দেখে কাঁদছিল নাকি অন্য কোন কারণে কাঁদছিল, জানি না। ইচ্ছা ছিল তাকে জিজ্ঞেস করার; এই মেয়ে তুমি কাঁদছ কেন? তাকে আজো জিজ্ঞেস করা হয়নি, সে কি জন্য কাঁদছিল সেদিন। যদি কোন দিন তার দেখা পাই তখন তাকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নেবো এ জটিল প্রশ্নের উত্তরটা। বন্ধু, মেজো ভাইয়া আমাকে নানাভাবে মার দেয়। সে আমাকে লেখালেখি করতে দেয় না। বার বার নষ্ট করে দেয় আমার সুন্দর প্রতিভাকে! আমার খুব কষ্ট হয় এবং দুই নীল আঁখি থেকে অশ্রু পড়ে! কেন জান? আমার জীবনটা খুব কষ্টের। কিন্তু বন্ধ,ু আজ আমার কলম সে কষ্টের নোনাজল হতে খুঁজে একগুচ্ছ কষ্ট তোকে জানাতে চায়। কিন্তু বন্ধু, কষ্টের কারণে আমার কলমের ভাষা গোছালো হচ্ছে না।
বন্ধু, ভাবলাম পড়ালেখা ছেড়ে দেব। কিন্তু তবে কি করব? তা তুই বলতে পারবি। এখন নেশা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। খারাপ পথে পা বাড়াবার জন্য প্রস্তুত (অপমানে)। জীবনকে ধ্বংস করার জন্য আত্মহত্যা করতে চাই। কিন্তু পারি না। কেন জান, আত্মহত্যা নাকি মহাপাপ! বন্ধু, আমার জন্য কিছু র্ক? আমাকে সান্ত¡না দে? কারণ তুই পারবি আমাকে ভ্রান্তির পথ থেকে ফিরিয়ে কল্যাণের পথে আনতে। তুই পারবি আমার এই মরা গাছে সুন্দর ফুল ফুটাতে। বন্ধু, কথা দে! তুই পারবি না আমাকে পুণ্যের পথে আনতে? বল্ বল্ বল্ ব...বন্ধু... তুই ছাড়া আমার এই রূপবতী পৃথিবীতে আর কে আছে!
সোহাগ
০১৮২৯৪৫৪৮৪৯

No comments

Powered by Blogger.