৩২ নম্বরে এসে আবেগাপ্লুত হাসিনা রেহানা
যে স্থানটিতে মানুষরূপী নরপিশাচরা হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে, ৩২ নম্বর ধানম-ির ঐতিহাসিক বাড়িটির সেই সিঁড়িতে এখনও লেগে আছে জাতির জনকের রক্তের দাগ। সেখানে দাঁড়িয়ে সোমবার অঝোর ধারায় কাঁদলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
প্রায় দু'ঘণ্টা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া এই দু'বোন হাতড়িয়ে বেরিয়েছেন মা-বাবা, ভাইদের সঙ্গে তাঁদের শৈশব-যৌবনের হাসি-কান্নার স্মৃতিবহ নানা ঘটনা। দীর্ঘ প্রায় ৩৪ বছর পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকরের মাধ্যমে জাতি কলঙ্কমুক্ত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর এই দুই কন্যা সোমবার প্রথম গেলেন স্মৃতিবহ ধানম-ির বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। রায় কার্যকরের পরের দিন লন্ডন থেকে দেশে আসেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। একুশের বইমেলার উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে মাগরিবের নামাজের কিছু আগে যান ধানম-ির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। যেখানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘৃণ্য ঘাতকচক্র সপরিবারে হত্যা করেন জাতির পিতাকে।ওই বাড়িতে প্রবেশ করেই এক অন্যরকম আবেগে জড়িয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। বাড়িতে ঢুকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁরা। এরপর হেঁটে যান বাড়ির দোতলার সিঁড়িতে যেখানে ঘাতকরা হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে, এখনও সেখানে লেগে আছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালীর রক্তের দাগ। সেখানে দাঁড়িয়েই দু'বোন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বেশ কিছু সময় সেখানে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটির পর বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। প্রায় দু'ঘণ্টা অবস্থানকালে মা-বাবা, ভাইসহ স্মৃতিবহ এই বাড়িটির প্রতিটি কৰে ঘুরে ঘুরে ব্যথাতুর চিত্তে স্মৃতিরোমন্থন করেন। ৩৪ বছর ধরে সব হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণা, আর বিচার পাওয়ার দায়মুক্তির আনন্দ_এই দু'রকম অনুভূতি নিয়েই দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অবস্থান শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোটবোনকে নিয়ে রাত ৮টায় ফিরে যান তাঁর সরকারী বাসভবন যমুনাতে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জনকণ্ঠকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা বঙ্গবন্ধুর ধানম-ির বাসভবনে প্রায় দু'ঘণ্টা অবস্থান করেন। তাঁরা সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। এছাড়া যে স্থানটিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল ঘৃণ্য ঘাতকরা, সেই সিঁড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা নীরবে বেশকিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন এবং মোনাজাত করেন। এ সময় তাঁরা ছিলেন শোকে মুহ্যমান।
No comments