মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মডেল স্ক্যান্ডাল
মানবজমিন ডেস্ক: মঙ্গোলিয়ান সুন্দরী ফ্যাশন মডেল আলতানতিয়া শারিবুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, তাকে হত্যা করা, তার কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, ব্ল্যাকমেইল, বিশ্বাসঘাতকতা ও এসব ঘটনা রাজনৈতিকভাবে ধামাচাপা দেয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাকের বিরুদ্ধে। নির্বাচনের আগে এসব অভিযোগ ওঠায় তার বিজয় হাত ছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ২০০২ সালে নাজিব প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালে ২৮ বছর বয়সী মডেল ২শ’ কোটি ডলারের ফ্রান্স-স্পেনের তৈরি স্কোরপেন সাবমেরিন ক্রয়চুক্তির অনুবাদক হিসেবে কাজ করছিলেন। মালয়েশিয়ার একজন বিচ্ছিন্ন ব্যবসায়ী দীপক জেকিসানের দেয়া এমন অভিযোগ নিয়ে দেশটির ইন্টারনেটে ব্যাপক চাঞ্চল্য চলে আসছে। দীপক বর্তমান শাসক দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। দীপক দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল সুন্দরী মডেল আলতানতিয়ার। তবে ওই মডেলের সঙ্গে নিজের যে কোন সম্পর্ক থাকাকে ‘ভয়ঙ্কর মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দীপক। এ বিতর্কে আরেক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নীতি-নির্ধারণীবিষয়ক উপদেষ্টা আবদুল রাজাক বাগিন্দার জড়িত থাকারও অভিযোগ উঠেছে। বাগিন্দা সে সময় মালয়েশিয়ান স্ট্রাটেজিক সেন্টারের পরিচালক ছিলেন। বাগিন্দার নিয়োগ করা কোম্পানির বিরুদ্ধে ওই সাবমেরিন ক্রয় চুক্তি থেকে ১৬ কোটি ডলার কমিশন নেয়ার অভিযোগে বর্তমানে দুইজন ফরাসি ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করছেন।
বাগিন্দার সঙ্গে আলতানতিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল ও তারা এশিয়া-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন। তারপর বাগিন্দাকে ব্ল্যাকমেইল করার দায়ে মডেলকে জেলে দেয়ার ব্যবস্থা করেন বাগিন্দা। এসব দাবি তার মৃত্যুর পর পাওয়া এক চিঠিতে উঠে এসেছে। খবরে বলা হয়, চুক্তির বিভিন্ন ঘাপলা ও লেনদেনের বিষয়ে চুপ থাকার জন্য ৫ লাখ ডলার দাবি করেছিলেন আলতানতিয়া। ২০০৯ সালে তার দল ক্ষমতায় আসার পর বর্তমানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকা প্রধানমন্ত্রী নাজিব কখনও ওই মডেলের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তার সঙ্গে কোন ধরনের সম্পৃক্ততা থাকার কথাও অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারও সাব-মেরিন কেনায় কোন ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। তবে ১৯শে অক্টোবর ২০০৬ সালে অন্তঃসত্ত্বা মডেলকে খুনের সঙ্গে নাজিবের দুই দেহরক্ষীর জড়িত থাকার বিষয়ে একটি আদালতে সাক্ষ্য দেয়া হয়েছে। সে সময় অন্তঃসত্ত্বা আলতানতিয়া নিজের ও অনাগত সন্তানের জীবন ভিক্ষা চেয়েছিলেন খুনিদের কাছে। কিন্তু খুনিরা তার কাতর কণ্ঠে কান তো দেয়নি উল্টো তার গর্ভের অনাগত সন্তানের পিতার পরিচয় যেন কোনভাবে নিশ্চিত করা না যায় সে ব্যবস্থা করেছিলো। একইসঙ্গে তার মালয়েশিয়া প্রবেশের কাগজপত্রও ইমিগ্রেশন বিভাগ থেকে মুছে ফেলে খুনিচক্র। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব বিষয় আলোচনায় আসায় সামনের নির্বাচনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাক।
No comments