কর্ণফুলীর ঢেউয়ের তালে... by আশরাফ উল্লাহ
বিকেল শেষ হতে চলল। নীল আকাশে রক্তিম আভা। হেলে পড়ছে সূর্য। বিদায়ের সব আয়োজন পূর্ণ। শুধু ডুব দেওয়া বাকি। এর মধ্যে বেজে উঠল নৌযানের হুইসেল। নোঙর তুললেন নাবিক। কর্ণফুলীর বুক চিরে ছুটে চলল জলযান ‘ওয়েস্টার্ন ক্রুজ’।
বন্দর নগরে বিনোদনের এ এক নতুন মাধ্যম। সুর আর জাদুর মায়ায় নৌভ্রমণ।
কর্ণফুলীতে তখন ভাটার টান। মাথার ওপর গাঙচিলের ওড়াউড়ি। কল কল শব্দের ঢেউয়ের গুঞ্জন। সোনালি রোদে জলের খেলা। মোহনায় নোঙর করা ভিনদেশি জাহাজের সারি। মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে সাম্পানও। কিছুদূর যেতেই পাশ দিয়ে সিংহের দর্পে ছুটে গেল বিশাল জাহাজ। দুলে ওঠে তরী। আরও এগোতে বাড়ে ঢেউয়ের নাচন। উথাল-পাথাল ঢেউয়ের তালে চেনা কর্ণফুলী যেন মেলে ধরছে নতুন রূপ।
ভাবনায় ডুবে যাওয়া মনে ছেদ পড়ল জাদুকর রাজীব বসাকের ডাকে। ডেক থেকে নামতে নামতেই দ্বিতীয় তলার হল রুমের আসনগুলো ততক্ষণে ভরে গেছে। মন ভোলানো জাদুতে সবাই আচ্ছন্ন। বাচ্চারা তো মহাখুশি। এক একটা জাদু শেষ করার পর কমতি হচ্ছে না হাততালিতেও। জাদুপর্ব শেষে রুপালি গিটারের সুর তুললেন গায়ক আরিফ। সুরের খেয়ায় পর্যটকদের নিয়ে গেলেন অন্য রকম এক সন্ধ্যায়। গানে গানে সন্ধ্যা যে গড়িয়ে যাচ্ছে সে খেয়াল ছিল না। তড়িঘড়ি উঠে এলাম ডেকে। উজান থেকে তখন ভাটির পথ ধরেছে নৌযান।
ফেরার দৃশ্যটা অভাবনীয়। জাহাজের ছোট ছোট বিন্দু বাতি যেন ঘিরে রেখেছে কর্ণফুলী। আকাশের সব তারা আজ কর্ণফুলীর বুকে। কাফকো জেটি আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে তার অবস্থান। ওপাশে নেভাল একাডেমি। ধীরে ধীরে নৌযান এগিয়ে যাচ্ছে বন্দর জেটির দিকে। হলুদ বাতির আলোয় রাঙা জেটিতে তখনো কর্মব্যস্ততা। নোঙর করা জাহাজ থেকে নামছে কনটেইনার, পণ্য। জেটির রাঙা ছায়ায় বদলে গেল যেন কর্ণফুলীর পানির রংও। চারদিক হলুদ। পর্যটকদের প্রায় সবাই তখন ডেকে। হাওয়ায় দুলে উপভোগ করছেন রাতের রূপসী কর্ণফুলী। আগেও কয়েকবার নৌভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে সেগুলো ছিল সন্ধ্যার আগেই কূলে ফেরা। রাতের এ দৃশ্য একেবারেই নতুন, অন্য রকম।
জানা গেল, ২০০ জনের ধারণক্ষমতার ওয়েস্টার্ন মেরিন সার্ভিসের এ নৌযান পানিতে ভাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর থেকেই বেশ সাড়া পাচ্ছে তারা। এখানে সভা-সেমিনার, পার্টি করারও ব্যবস্থা রয়েছে।
চাইলে সারা দিনের জন্য ভাড়া নিতে পারেন এটি। তখন ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া জাহাজে রয়েছে গিফট শপ, কিডস্ কর্নার, ফুড জোন ও ম্যাজিক কর্নার। এত কিছু হবে আর তা ফ্রেমে বন্দী থাকবে না তা কি হয়? সে ব্যবস্থাও আছে। চাইলে ছবি তুলতে পারবেন পর্যটকেরা। অবশ্য এ জন্য আলাদা টাকা লাগবে।
ওয়েস্টার্ন ক্রুজের ব্যবস্থাপক ওসমান গণি বলেন, ‘কর্ণফুলী ভ্রমণে আধুনিক এ প্রমোদতরী এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। দিন দিন বাড়ছে আমাদের অতিথি। বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকেরা এলে তো অভিভূত হয়ে যান।’
ওসমান গণির সঙ্গে কথার ফাঁকে গড়িয়ে যায় সময়। ফেরার পথ ধরি আমরা। আবার বোট ক্লাবের জেটিতে নোঙর। তবে এবার ভ্রমণের ঝুলিতে অনেক সুখময় স্মৃতি আর মুগ্ধতার আবেশ ছড়ানো দৃশ্যপট।
জেনে নিন
ওয়েস্টার্ন ক্রুজে সপ্তাহে দুই দিন—শুক্র ও শনিবার নৌবিহারের ব্যবস্থা রয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে ছয়টার ভ্রমণে জনপ্রতি খরচ এক হাজার টাকা। এর সঙ্গে থাকবে হালকা নাশতা। আর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে নয়টার ভ্রমণে জনপ্রতি খরচ এক হাজার ৫০০ টাকা। সঙ্গে রাতের খাবার। তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য টিকিট লাগবে না। জাহাজে উঠতে হবে বিমানবন্দর সড়কের চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে।
যোগাযোগ : ০১৮৪১৭২৪৪৪৪
কর্ণফুলীতে তখন ভাটার টান। মাথার ওপর গাঙচিলের ওড়াউড়ি। কল কল শব্দের ঢেউয়ের গুঞ্জন। সোনালি রোদে জলের খেলা। মোহনায় নোঙর করা ভিনদেশি জাহাজের সারি। মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে সাম্পানও। কিছুদূর যেতেই পাশ দিয়ে সিংহের দর্পে ছুটে গেল বিশাল জাহাজ। দুলে ওঠে তরী। আরও এগোতে বাড়ে ঢেউয়ের নাচন। উথাল-পাথাল ঢেউয়ের তালে চেনা কর্ণফুলী যেন মেলে ধরছে নতুন রূপ।
ভাবনায় ডুবে যাওয়া মনে ছেদ পড়ল জাদুকর রাজীব বসাকের ডাকে। ডেক থেকে নামতে নামতেই দ্বিতীয় তলার হল রুমের আসনগুলো ততক্ষণে ভরে গেছে। মন ভোলানো জাদুতে সবাই আচ্ছন্ন। বাচ্চারা তো মহাখুশি। এক একটা জাদু শেষ করার পর কমতি হচ্ছে না হাততালিতেও। জাদুপর্ব শেষে রুপালি গিটারের সুর তুললেন গায়ক আরিফ। সুরের খেয়ায় পর্যটকদের নিয়ে গেলেন অন্য রকম এক সন্ধ্যায়। গানে গানে সন্ধ্যা যে গড়িয়ে যাচ্ছে সে খেয়াল ছিল না। তড়িঘড়ি উঠে এলাম ডেকে। উজান থেকে তখন ভাটির পথ ধরেছে নৌযান।
ফেরার দৃশ্যটা অভাবনীয়। জাহাজের ছোট ছোট বিন্দু বাতি যেন ঘিরে রেখেছে কর্ণফুলী। আকাশের সব তারা আজ কর্ণফুলীর বুকে। কাফকো জেটি আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে তার অবস্থান। ওপাশে নেভাল একাডেমি। ধীরে ধীরে নৌযান এগিয়ে যাচ্ছে বন্দর জেটির দিকে। হলুদ বাতির আলোয় রাঙা জেটিতে তখনো কর্মব্যস্ততা। নোঙর করা জাহাজ থেকে নামছে কনটেইনার, পণ্য। জেটির রাঙা ছায়ায় বদলে গেল যেন কর্ণফুলীর পানির রংও। চারদিক হলুদ। পর্যটকদের প্রায় সবাই তখন ডেকে। হাওয়ায় দুলে উপভোগ করছেন রাতের রূপসী কর্ণফুলী। আগেও কয়েকবার নৌভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে সেগুলো ছিল সন্ধ্যার আগেই কূলে ফেরা। রাতের এ দৃশ্য একেবারেই নতুন, অন্য রকম।
জানা গেল, ২০০ জনের ধারণক্ষমতার ওয়েস্টার্ন মেরিন সার্ভিসের এ নৌযান পানিতে ভাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর থেকেই বেশ সাড়া পাচ্ছে তারা। এখানে সভা-সেমিনার, পার্টি করারও ব্যবস্থা রয়েছে।
চাইলে সারা দিনের জন্য ভাড়া নিতে পারেন এটি। তখন ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া জাহাজে রয়েছে গিফট শপ, কিডস্ কর্নার, ফুড জোন ও ম্যাজিক কর্নার। এত কিছু হবে আর তা ফ্রেমে বন্দী থাকবে না তা কি হয়? সে ব্যবস্থাও আছে। চাইলে ছবি তুলতে পারবেন পর্যটকেরা। অবশ্য এ জন্য আলাদা টাকা লাগবে।
ওয়েস্টার্ন ক্রুজের ব্যবস্থাপক ওসমান গণি বলেন, ‘কর্ণফুলী ভ্রমণে আধুনিক এ প্রমোদতরী এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। দিন দিন বাড়ছে আমাদের অতিথি। বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকেরা এলে তো অভিভূত হয়ে যান।’
ওসমান গণির সঙ্গে কথার ফাঁকে গড়িয়ে যায় সময়। ফেরার পথ ধরি আমরা। আবার বোট ক্লাবের জেটিতে নোঙর। তবে এবার ভ্রমণের ঝুলিতে অনেক সুখময় স্মৃতি আর মুগ্ধতার আবেশ ছড়ানো দৃশ্যপট।
জেনে নিন
ওয়েস্টার্ন ক্রুজে সপ্তাহে দুই দিন—শুক্র ও শনিবার নৌবিহারের ব্যবস্থা রয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে ছয়টার ভ্রমণে জনপ্রতি খরচ এক হাজার টাকা। এর সঙ্গে থাকবে হালকা নাশতা। আর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে নয়টার ভ্রমণে জনপ্রতি খরচ এক হাজার ৫০০ টাকা। সঙ্গে রাতের খাবার। তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য টিকিট লাগবে না। জাহাজে উঠতে হবে বিমানবন্দর সড়কের চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে।
যোগাযোগ : ০১৮৪১৭২৪৪৪৪
No comments