রেয়াজুদ্দিন বাজারসহ ৫০ মার্কেট অচল, ১৪৪ ধারা অব্যাহত- চট্টগ্রামে হকার-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে ইন্ধনদাতা দু'জামায়াত নেতা
চট্টগ্রাম অফিস চট্টগ্রামে গত বুধবারের হকার-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ, ভাংচুর ও অগি্নসংযোগের ঘটনার পর পুলিশের জারি করা ১৪৪ ধারা রবিবার পর্যনত্ম অব্যাহত রয়েছে।
ফলে নগরীর অন্যতম বৃহত্তম খুচরা ও পাইকারি পণ্যের বাজার রেয়াজুদ্দিন বাজার এবং এ বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আরও ৪৯টি মার্কেট গত ৫ দিন ধরে অচল হয়ে রয়েছে। ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় এসব মার্কেটের দোকান বন্ধ রয়েছে। এদিকে, জামায়াত সমর্থিত দুই ব্যবসায়ী নেতার বিরম্নদ্ধে ঘটনার নেপথ্যে ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রেৰিতে হকারদের পৰ থেকে এ দুই জামায়াতী নেতার বিরম্নদ্ধে থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে।এদিকে, রেয়াজুদ্দিন বাজারসহ প্রায় ৫০টি মার্কেটের মালিকরা হকার উচ্ছেদে নানা পরিকল্পনা বাসত্মবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মূলত হকারদের কাছে বিভিন্ন মার্কেটের সামনে থাকা ফুটপাথ ভাড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরম্নদ্ধে। হকারদের একটি সূত্র জানিয়েছে, আকস্মিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে হকারদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে ব্যবসায়ীরা। সিএমপির বেশকিছু উর্ধতন কর্মকর্তা হকারদের কাছ থেকে মাসোহারা নেয়ার অভিযোগও নতুন নয়। শুধু পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাই নয়, একই সঙ্গে যোগ দিয়েছে টহলরত পুলিশ সদস্যরাও এ বাণিজ্যে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম বিদু্যত ভবনের কর্ণধার থেকে শুরম্ন করে মিটার রিডার পর্যনত্ম প্রতিমাসে প্রায় ২০ হাজার অবৈধ বিদু্যত সংযোগ থেকে মাসোহারা আদায় করছে।
গত বুধবার থেকে রবিবার পর্যনত্ম হকার উচ্ছেদের ঘটনা নিয়ে চার দফায় সংবাদ সম্মেলনসহ সিএমপি ও সিটি মেয়র পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও শেষ পর্যনত্ম কোন সিদ্ধানত্মে আসতে পারেনি। ফলে রেয়াজুদ্দিন বাজারসহ সনি্নহিত এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ রেখেছে সিএমপি প্রশাসন। অপরদিকে, রবিবার বিকেলে তামাকুম-ি লেন বণিক সমিতির পৰ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করা হলেও শেষ পর্যনত্ম মেয়রের সঙ্গে অঘোষিত বৈঠকের সিদ্ধানত্মের কারণে তা আর হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ প্রায় ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে হকাররা চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট বিশেষ করে রেয়াজুদ্দিন বাজার ও নিউমার্কেট এলাকাকে ঘিরে ভাসমান বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময়ে সিএমপির পৰ থেকে হকার উচ্ছেদের সিদ্ধানত্ম দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মাসোহারার কারণে হকার উচ্ছেদের এসব সিদ্ধানত্ম শেষ পর্যনত্ম ভেসত্মে গেছে। সিএমপির উর্ধতন কর্মকর্তাদের এ অবাধ বাণিজ্য যখন স্থায়ীত্ব পেয়ে যায় তখন থেকেই হকাররা মাসোহারার বিনিময়ে নিশ্চিনত্মে ভাসমান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের এমন অবৈধ বাণিজ্যের কারণে ব্যবসায়ীরা শেষ পর্যনত্ম দোকানের সম্মুখস্থল হকারদের কাছে ভাড়া দিয়ে দীর্ঘ ৩০টি বছর পার করেছে। এরমধ্যে অনেক হকারই ইতোমধ্যে রেয়াজুদ্দিন বাজারসহ নিউমার্কেটেরও দোকান মালিক হয়েছে বলে হকারদের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার হকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অগি্নসংযোগের মাধ্যমে হকারদের ৫০ লাখ টাকার মালামাল বিনষ্ট করা হয়েছে। এরই প্রেৰিতে হকারদের পৰ থেকে কোতোয়ালি থানায় মামলার সূত্র ধরে তদনত্মকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ফুটেজ ও তাৎৰণিক বিভিন্ন মোবাইল থেকে কল করা লিস্ট ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে। এরই ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খুঁজে পেতে সহায়ক হবে বলে পুিলশ সূত্রে জানানো হয়।
No comments