ইউরোপে পোশাক রপ্তানি-একটি সেমিনারের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ by আবুল কাশেম
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে চলমান একটি সেমিনার থেকে আসা সুপারিশের ওপর। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তা ও অগি্ননিরাপত্তা বিষয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এতে অংশ নিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউরোপের কর্তাব্যক্তিরা।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশই যায় ইউরোপের দেশগুলোতে। সম্প্রতি ইউরোপের আমদানিকারকরা বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছেন, শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন এবং যথেষ্ট অগি্ননিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই এমন কারখানার তৈরি পোশাক তাঁরা আমদানি করবেন না। বৃহৎ বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারও উদ্বিগ্ন।
এমনই বাস্তবতায় গতকাল সোমবার ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের চার দিনব্যাপী সেমিনার। সেমিনারে আলোচনার পর পার্লামেন্ট সুপারিশ পেশ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। এ সুপারিশের ওপর নির্ভর করছে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ভবিষ্যৎ। আর পার্লামেন্টের সুপারিশকে বরাবরই যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে ইইউভুক্ত দেশগুলো।
গেল অর্থবছরে ১৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর এককভাবে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাজার নিয়ে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তা কেবল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। এটি পুরো সরকার ও দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলো আন্তরিকভাবে পুরো সামর্থ্য দিয়ে দেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করছে।
মাহবুব আহমেদ বলেন, 'ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পোশাক খাতের শ্রমিক অধিকার রক্ষা ও অগি্ননিরাপত্তার বিষয় নিয়ে একটি প্ল্যানারি সেশন (সেমিনার) চলছে। সেখান থেকে ইইউয়ের কাছে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির বিষয়ে যেকোনো সুপারিশ বা নিন্দা প্রস্তাব যেতে পারে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনই কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বাংলাদেশকে আরেকটু সময় দেয়।'
সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে মাহবুব আহমেদ বলেন, 'মন্ত্রণালয় ১০ দিন আগেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান সেখানকার প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুই দিন আগেও সরকার ও ব্যবসায়ীদের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রতিবেদন আকারে ব্রাসেলসে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ যে উন্নতি করছে তার চিত্র তুলে ধরে ভবিষ্যতে আরো উন্নতির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা দরকার- এমনটি বোঝানোর চেষ্টা করছেন সেখানে থাকা আমাদের রাষ্ট্রদূত ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর।'
ওই সেমিনারে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহানের কাছে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগি্নকাণ্ডের পর সরকার ও বিজিএমইএর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসহ পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিষয়ে ওই সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশীয় প্রতিনিধিদের চেয়ারম্যান জিন ল্যাম্বার্ট। রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে ইউরোপের মনোভাব যাতে পরিবর্তন না হয় সে অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি তাঁকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, তাজরীন ফ্যাশনসে অগি্ন দুর্ঘটনার মতো ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই ঘটছে। এ অবস্থায় শুধু বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াটা মোটেই যৌক্তিক হবে না। বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন ঠেকাতে সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহারের অভিযোগও চিঠিতে নাকচ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর তপন কান্তি ঘোষ এক চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানান, ইউরোপের ফরেন ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক (ডিজি) জন ই ইগার্ড ও সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) লরেন্স বাগঝু গত ২০ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসে আসেন। তখন তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোতে শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। তাজরীনে অগি্নকাণ্ডের পর থেকেই ইউরোপের স্থানীয় ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিকারকদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। শ্রমিক অধিকার রক্ষা হয় না এমন কারখানাগুলোর পাশাপাশি নন-কমপ্লায়েন্স কারখানা থেকেও পোশাক আমদানি না করার জন্য ক্রেতারা চাপ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের ক্রেতাদের পক্ষে বাংলাদেশের নন-কমপ্লায়েন্স কারখানা থেকে পোশাক আমদানি করা সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশই যায় ইউরোপের দেশগুলোতে। সম্প্রতি ইউরোপের আমদানিকারকরা বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছেন, শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন এবং যথেষ্ট অগি্ননিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই এমন কারখানার তৈরি পোশাক তাঁরা আমদানি করবেন না। বৃহৎ বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারও উদ্বিগ্ন।
এমনই বাস্তবতায় গতকাল সোমবার ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের চার দিনব্যাপী সেমিনার। সেমিনারে আলোচনার পর পার্লামেন্ট সুপারিশ পেশ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। এ সুপারিশের ওপর নির্ভর করছে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ভবিষ্যৎ। আর পার্লামেন্টের সুপারিশকে বরাবরই যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে ইইউভুক্ত দেশগুলো।
গেল অর্থবছরে ১৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর এককভাবে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাজার নিয়ে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তা কেবল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। এটি পুরো সরকার ও দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলো আন্তরিকভাবে পুরো সামর্থ্য দিয়ে দেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করছে।
মাহবুব আহমেদ বলেন, 'ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পোশাক খাতের শ্রমিক অধিকার রক্ষা ও অগি্ননিরাপত্তার বিষয় নিয়ে একটি প্ল্যানারি সেশন (সেমিনার) চলছে। সেখান থেকে ইইউয়ের কাছে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির বিষয়ে যেকোনো সুপারিশ বা নিন্দা প্রস্তাব যেতে পারে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনই কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বাংলাদেশকে আরেকটু সময় দেয়।'
সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে মাহবুব আহমেদ বলেন, 'মন্ত্রণালয় ১০ দিন আগেই এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান সেখানকার প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুই দিন আগেও সরকার ও ব্যবসায়ীদের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রতিবেদন আকারে ব্রাসেলসে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ যে উন্নতি করছে তার চিত্র তুলে ধরে ভবিষ্যতে আরো উন্নতির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা দরকার- এমনটি বোঝানোর চেষ্টা করছেন সেখানে থাকা আমাদের রাষ্ট্রদূত ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর।'
ওই সেমিনারে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহানের কাছে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগি্নকাণ্ডের পর সরকার ও বিজিএমইএর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসহ পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিষয়ে ওই সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশীয় প্রতিনিধিদের চেয়ারম্যান জিন ল্যাম্বার্ট। রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে ইউরোপের মনোভাব যাতে পরিবর্তন না হয় সে অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি তাঁকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, তাজরীন ফ্যাশনসে অগি্ন দুর্ঘটনার মতো ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই ঘটছে। এ অবস্থায় শুধু বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াটা মোটেই যৌক্তিক হবে না। বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন ঠেকাতে সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহারের অভিযোগও চিঠিতে নাকচ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর তপন কান্তি ঘোষ এক চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানান, ইউরোপের ফরেন ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক (ডিজি) জন ই ইগার্ড ও সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) লরেন্স বাগঝু গত ২০ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসে আসেন। তখন তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোতে শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। তাজরীনে অগি্নকাণ্ডের পর থেকেই ইউরোপের স্থানীয় ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিকারকদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। শ্রমিক অধিকার রক্ষা হয় না এমন কারখানাগুলোর পাশাপাশি নন-কমপ্লায়েন্স কারখানা থেকেও পোশাক আমদানি না করার জন্য ক্রেতারা চাপ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের ক্রেতাদের পক্ষে বাংলাদেশের নন-কমপ্লায়েন্স কারখানা থেকে পোশাক আমদানি করা সম্ভব হবে না।
No comments