সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড-তদন্তে নতুন মোড় by ওমর ফারুক
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা ঘটনার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে। এত দিন ধারণা ছিল, প্রথমে খুন করা হয় মেহেরুন রুনিকে, পরে খুন করা হয় সাগর সরওয়ারকে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো প্রতিবেদন বলছে, প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় সাগরকে, পরে আঘাত করা হয় রুনিকে। সাগরের চেয়ে রক্তক্ষরণ বেশি হওয়ার কারণে রুনি আগে মারা যান। হত্যাকাণ্ডে দুই ব্যক্তি জড়িত ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাব থেকে আসা প্রতিবেদনে এমন কথাই লেখা রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, ডিবির ব্যর্থতার পর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তদন্তে নেমেই সাগর-রুনির লাশ কবর থেকে তুলে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তিনটি রক্তমাখা ছুরি, টি-শার্ট, ভিডিও ক্লিপ, স্টিল ফটোগ্রাফ, সাগর সরওয়ারের হাত-পা বাঁধার জন্য ব্যবহৃত কাপড়সহ আরো কিছু আলামত টেস্টের জন্য পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে টেস্টের মাধ্যমে দুই ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। তারাই হত্যাকারী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ওই দুজনকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তাদের চিহ্নিত করতে ১৩ জনের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছিল; কিন্তু ডিএনএ ম্যাচিং হয়নি। আরো সাতজনের ডিএনএ নমুনা শিগগিরই পাঠানো হবে।
অন্যান্য আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা হত্যাকারী কতজন, সাগর-রুনি কিভাবে মারা গেছেন- সেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন। র্যাবের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েকটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে। কতজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত, কে আগে এবং কে পরে মারা গেছেন- এসব প্রশ্নও ছিল। সব প্রশ্নের উত্তরসহ ৩০ পৃষ্ঠারও বেশি ভলিউমের একটি প্রতিবেদন র্যাবের কাছে পাঠানো হয় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে।
সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুজন খুনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে আঘাত করা হয় সাগর সরওয়ারকে, পরে আঘাত করা হয় মেহেরুন রুনিকে। তবে রক্তক্ষরণ বেশি হওয়ায় রুনি আগে মারা যান। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ছুরিকাঘাতের কারণে রুনির ডান দিকের মূল ধমনি (আর্টারি) কেটে যায়। ওই ধমনি কেটে গেলে রক্তক্ষরণ হয়ে একজন মানুষ ২০ মিনিটের মধ্যে মারা যেতে পারে বলে জানান মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক এ এস এম মাহমুদুজ্জামান।
র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছি। যাদের সন্দেহ হচ্ছে, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রাপ্ত নমুনা ডিএনএ ল্যাবে দীর্ঘদিন রাখা যাবে।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিএনএ ল্যাবে নমুনা যত্ন করে রাখলে দীর্ঘদিন রাখা সম্ভব।
সূত্র জানায়, দুই খুনির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়ার পর দেশ থেকে সন্দেহভাজন ১৩ জনের ডিএনএ নমুনা দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। তাদের সবার মুখের লালা থেকে ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁদের কারোর সঙ্গেই ওই দুজনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়নি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে আরো সাতজন সন্দেহভাজনের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান।
র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, নিহত দম্পতির ছেলে মেঘের প্রথম যে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল, তাতে দুজনের কথা বলা হয়েছিল। মেঘ বলেছিল, দুজন তার মা-বাবাকে খুন করেছে। ওই কর্মকর্তার মতে, মেঘের ভাষ্য ও প্রতিবেদনের ভাষ্য এক হওয়ায় তাঁরাও এখন নিশ্চিত খুনি দুজনই ছিল। সেই দুজন কারা, তা-ই এখন তদন্তের বিষয়। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমেই খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, বাড়ির দারোয়ান হুমায়ুন কবির অন্যতম সন্দেহভাজন। সন্দেহভাজন অন্য সবাইকে পাওয়া গেলেও হুমায়ুন এখনো পলাতক। তাঁর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তিনি। তাঁর বাবা র্যাবকে জানিয়েছেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন হুমায়ুন। ভালো হওয়ার জন্য তাঁকে চিল্লায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মসজিদ থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে দারোয়ানের কাজ নেন। হুমায়ুনকে পাওয়া তদন্তের স্বার্থেই খুব জরুরি বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। প্রথমে ডিবি পুলিশ মামলার তদন্ত করে। কিছুদিন তদন্ত করে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে তারা। পরে উচ্চ আদালত মামলাটি র্যাবকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দেন। র্যাব এ পর্যন্ত ১১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সূত্র জানায়, ডিবির ব্যর্থতার পর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তদন্তে নেমেই সাগর-রুনির লাশ কবর থেকে তুলে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তিনটি রক্তমাখা ছুরি, টি-শার্ট, ভিডিও ক্লিপ, স্টিল ফটোগ্রাফ, সাগর সরওয়ারের হাত-পা বাঁধার জন্য ব্যবহৃত কাপড়সহ আরো কিছু আলামত টেস্টের জন্য পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে টেস্টের মাধ্যমে দুই ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। তারাই হত্যাকারী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ওই দুজনকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তাদের চিহ্নিত করতে ১৩ জনের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছিল; কিন্তু ডিএনএ ম্যাচিং হয়নি। আরো সাতজনের ডিএনএ নমুনা শিগগিরই পাঠানো হবে।
অন্যান্য আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা হত্যাকারী কতজন, সাগর-রুনি কিভাবে মারা গেছেন- সেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন। র্যাবের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েকটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে। কতজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত, কে আগে এবং কে পরে মারা গেছেন- এসব প্রশ্নও ছিল। সব প্রশ্নের উত্তরসহ ৩০ পৃষ্ঠারও বেশি ভলিউমের একটি প্রতিবেদন র্যাবের কাছে পাঠানো হয় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে।
সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুজন খুনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে আঘাত করা হয় সাগর সরওয়ারকে, পরে আঘাত করা হয় মেহেরুন রুনিকে। তবে রক্তক্ষরণ বেশি হওয়ায় রুনি আগে মারা যান। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ছুরিকাঘাতের কারণে রুনির ডান দিকের মূল ধমনি (আর্টারি) কেটে যায়। ওই ধমনি কেটে গেলে রক্তক্ষরণ হয়ে একজন মানুষ ২০ মিনিটের মধ্যে মারা যেতে পারে বলে জানান মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক এ এস এম মাহমুদুজ্জামান।
র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছি। যাদের সন্দেহ হচ্ছে, তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রাপ্ত নমুনা ডিএনএ ল্যাবে দীর্ঘদিন রাখা যাবে।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিএনএ ল্যাবে নমুনা যত্ন করে রাখলে দীর্ঘদিন রাখা সম্ভব।
সূত্র জানায়, দুই খুনির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়ার পর দেশ থেকে সন্দেহভাজন ১৩ জনের ডিএনএ নমুনা দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। তাদের সবার মুখের লালা থেকে ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁদের কারোর সঙ্গেই ওই দুজনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়নি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে আরো সাতজন সন্দেহভাজনের ডিএনএ নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান।
র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, নিহত দম্পতির ছেলে মেঘের প্রথম যে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল, তাতে দুজনের কথা বলা হয়েছিল। মেঘ বলেছিল, দুজন তার মা-বাবাকে খুন করেছে। ওই কর্মকর্তার মতে, মেঘের ভাষ্য ও প্রতিবেদনের ভাষ্য এক হওয়ায় তাঁরাও এখন নিশ্চিত খুনি দুজনই ছিল। সেই দুজন কারা, তা-ই এখন তদন্তের বিষয়। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমেই খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, বাড়ির দারোয়ান হুমায়ুন কবির অন্যতম সন্দেহভাজন। সন্দেহভাজন অন্য সবাইকে পাওয়া গেলেও হুমায়ুন এখনো পলাতক। তাঁর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তিনি। তাঁর বাবা র্যাবকে জানিয়েছেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন হুমায়ুন। ভালো হওয়ার জন্য তাঁকে চিল্লায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মসজিদ থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে দারোয়ানের কাজ নেন। হুমায়ুনকে পাওয়া তদন্তের স্বার্থেই খুব জরুরি বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। প্রথমে ডিবি পুলিশ মামলার তদন্ত করে। কিছুদিন তদন্ত করে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে তারা। পরে উচ্চ আদালত মামলাটি র্যাবকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দেন। র্যাব এ পর্যন্ত ১১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
No comments