কেরোসিন ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করল পাষণ্ড স্বামী!
মুন্সীগঞ্জ রুমা আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধূকে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় ঘাতক স্বামী আঃ মালেক (৩২) ও তার ভাই মানিক, মুক্তার ও সেলিম এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার রাতে অনিন্দ্য সুন্দরী রুমা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ময়নাতদনত্মের পর শনিবার বাবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মসদগাঁয়ের মালিরঅঙ্ক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি স্বামী তার ভাইদের সহযোগিতায় রম্নমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। স্বামীর বাড়ি ঢাকার আশুলিয়ার আউকপাড়া গ্রামের এই নির্মম ঘটনায় ১৫ জানুয়ারি আশুলিয়া থানায় মামলা হয়। মামলাটির তদনত্মকারী কর্মকর্তা দারোগা আব্দুর ছাত্তার রবিবার রাতে জানান, রম্নমার ভাই লৌহজংয়ের দরিদ্র চা বিক্রেতা সুজন দেওয়ান ছুটে এসে বোনের চিকিৎসার পাশাপাশি থানায় মামলা রম্নজু করে। কিন্তু চার আসামিই হাইকোর্ট থেকে মৃতু্যর আগেই জামিনে মুক্ত হয়েগেছে বলে তিনি জানান।রম্নমার শোকাহত ভাই সুজন দেওয়ান (৩০) জানান, এক বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সাধ্যমতো যৌতুক দেয়া হয়। কিন্তু গেল ডিসেম্বরে বোনকে নিয়ে মালেক মসদগাঁও শ্বশুরালয়ে আসে। ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এই টাকা না দিতে পারায় ৰুব্ধ হয়ে ফিরে যায়। এরপরই রম্নমার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। কিন্তু কোনভাবেই টাকার ব্যবস্থা করা যায়নি। পরে পরিকল্পিতভাবে রম্নমার গায়ে আগুন দেয়া হয়। এক প্রতিবেশী জানান, রম্নমার করম্নণ আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে এসে স্থানীয় রাবেয়া কিনিকে ভর্তি করে। পরে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মৃতু্যর আগেও ঘাতক স্বামীর নির্যাতনের নানা কাহিনী বর্ণনা করে গেছেন রম্নমা। মসদগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল আলী দেওয়ানের তিনপুত্র ও ২ কন্যার মধ্যে রম্নমা দ্বিতীয়।
আশুলিয়া থানার আউকপাড়া গ্রামের মোসত্মাফিজুর রহমানের পুত্র আব্দুল মালেকের সঙ্গে রম্নমার বিয়ের পর থেকেই লোভী স্বামী নানাভাবে পিতৃহীন রম্নমাকে যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল। আশুলিয়া থানা জানায়, এই লোমহর্ষক ঘটনায় চার আসামিই ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পাওয়ায় এখন তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় অসহায় রম্নমার শোকাহত পরিবারটি এখন এক রকম নির্বাক। তাঁরা এই নিষ্ঠুর ঘটনার বিচারের জন্য দেশের হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন। যোগাযোগ করেও এ ব্যাপারে আসামি পৰের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে রম্নমার এমন মৃতু্যতে লৌহজংয়ের মসদগাঁও গ্রামের শোকের ছায়া নেমে আসে।
No comments