'ও তখন রক্তে ভাসছে আর তর্কে ব্যস্ত পুলিশ'
ঠিক কী হয়েছিল ওই দিন? সে ব্যাপারে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন দিল্লিতে গণধর্ষণের ঘটনায় নিহত সেই তরুণীর বন্ধু। জি নিউজের স্টুডিওতে বসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ২৮ বছরের ওই তরুণ জানান, সংবাদমাধ্যমে কয়েক সপ্তাহ ধরে যা প্রকাশিত হয়েছে, তার বাইরেও অনেক কিছু ঘটেছে।
ওই তরুণ দাবি করেন, ওই দিনের ঘটনায় রীতিমতো ছক কষে এগিয়েছিল অভিযুক্তরা। বাসে চালক ও তার সহকারী ছাড়া বাকিরা যাত্রী সেজে বসেছিল। বাসে উঠে ২০ রুপি ভাড়াও দিয়েছিলেন তাঁরা। বাসে ওঠার কিছুক্ষণ পরই তাঁর বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে অভিযুক্তরা। শুরু হয় গোলমাল। তিনজনকে মেরেছিলেনও তিনি। এরপর কেউ লোহার রড দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। তা সত্ত্বেও বান্ধবী নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ লড়াই করেছিলেন। ধস্তাধস্তির সময় সাহায্য চেয়ে চিৎকারও করেন তাঁরা। তখনই বাসের আলো নিভিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। তার বান্ধবী পুলিশের নম্বরে ডায়াল করার চেষ্টা করলে ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোনসেট। পরে বান্ধবীকেও তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারান ওই যুবক।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বাসটি নিয়ে দিল্লির রাজপথে ঘুরেছিল অভিযুক্তরা। ততক্ষণে জ্ঞান এসেছে ওই তরুণের। কিন্তু তখনো তিনি জানতেও পারেননি বান্ধবীর ওপর কী অকথ্য অত্যাচার হয়েছে। অভিযুক্তরা তাঁদের কাছে থাকা সব কিছু কেড়ে নেয়। আলামত নষ্টের জন্য জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়ে দুজনকে চলন্ত বাস থেকে বাইরে ফেলে দেয়। তাঁদের চাপা দেওয়ারও চেষ্টা করে। কোনো রকমে বান্ধবীকে টেনে সরিয়ে আনতে পেরেছিলেন যুবকটি।
তরুণের ভাষ্যমতে, 'আমরা রাস্তা দিয়ে যাওয়া লোকজনকে ডেকে থামানোর চেষ্টা করি। কয়েকটি অটো গাড়ি ও বাইক গতি কমালেও থামেনি। প্রায় ২৫ মিনিট পর কেউ একজন পুলিশে খবর দেয়।' পুলিশ পৌঁছায় আরো ৪৫ মিনিট পর। তিনটি পুলিশের গাড়ি আসে। বান্ধবী তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বা পোশাকের ব্যবস্থা করার বদলে ঘটনাস্থল কোন থানার আওতায় পড়েছে, তা নিয়ে তর্ক শুরু করে পুলিশ। তাঁর ভাষায়, 'অনেক অনুনয়ের পর বান্ধবীর দেহ ঢাকতে একটি বিছানার চাদর দিয়েছিল কেউ। ওরা শুধু আমাদের দেখছিল। বান্ধবীকে নিজেই বয়ে গাড়িতে তুলি। পুলিশ কিংবা ততক্ষণে ভিড় জমানো জনতার কেউ সাহায্য করেনি। কাছের হাসপাতালে নয়, চিকিৎসার জন্য অনেক দূরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ তাঁদের। সেখানেও অনেক অনুনয়ের পর পোশাকের ব্যবস্থা হয়। ফোন করে নিজের আত্মীয়দের খবর দিই। আত্মীয়রা আসার পর চিকিৎসা শুরু হয়।'
বান্ধবীর সঙ্গে অভিযুক্তরা ঠিক কী আচরণ করেছিল, তা অনেক পরে জানতে পারেন যুবকটি। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া বান্ধবীর বয়ান শুনে তাঁর মনে হয়েছিল, পশুরা শিকারে বেরিয়েও এমন আচরণ করে না।
কখনো বান্ধবীর পাশ থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবেননি যুবক। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে শুয়ে তাঁর বান্ধবী কখনো মনোবল হারাননি। বাঁচতে চেয়েছিলেন।
ওই দিনের ঘটনার পর নিজেও অনেক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর অপেক্ষা করেছিলেন বান্ধবীর সুস্থ হয়ে ওঠার। কিন্তু তা আর হলো না। তাই এখন অপরাধীদের শাস্তির জন্য সাক্ষ্য দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের : ওই তরুণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি পুলিশ। গতকাল শনিবার পুলিশ এক বিবৃতিতে দাবি করে, পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রথম ফোন আসে রাত ১০টা ২২ মিনিটে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশের দুটি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ১০টা ৩১ মিনিটের পর ওই দুজনেক নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ। ১০টা ৫৫ মিনিটে তাঁদের দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না।
সূত্র : আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বাসটি নিয়ে দিল্লির রাজপথে ঘুরেছিল অভিযুক্তরা। ততক্ষণে জ্ঞান এসেছে ওই তরুণের। কিন্তু তখনো তিনি জানতেও পারেননি বান্ধবীর ওপর কী অকথ্য অত্যাচার হয়েছে। অভিযুক্তরা তাঁদের কাছে থাকা সব কিছু কেড়ে নেয়। আলামত নষ্টের জন্য জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়ে দুজনকে চলন্ত বাস থেকে বাইরে ফেলে দেয়। তাঁদের চাপা দেওয়ারও চেষ্টা করে। কোনো রকমে বান্ধবীকে টেনে সরিয়ে আনতে পেরেছিলেন যুবকটি।
তরুণের ভাষ্যমতে, 'আমরা রাস্তা দিয়ে যাওয়া লোকজনকে ডেকে থামানোর চেষ্টা করি। কয়েকটি অটো গাড়ি ও বাইক গতি কমালেও থামেনি। প্রায় ২৫ মিনিট পর কেউ একজন পুলিশে খবর দেয়।' পুলিশ পৌঁছায় আরো ৪৫ মিনিট পর। তিনটি পুলিশের গাড়ি আসে। বান্ধবী তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বা পোশাকের ব্যবস্থা করার বদলে ঘটনাস্থল কোন থানার আওতায় পড়েছে, তা নিয়ে তর্ক শুরু করে পুলিশ। তাঁর ভাষায়, 'অনেক অনুনয়ের পর বান্ধবীর দেহ ঢাকতে একটি বিছানার চাদর দিয়েছিল কেউ। ওরা শুধু আমাদের দেখছিল। বান্ধবীকে নিজেই বয়ে গাড়িতে তুলি। পুলিশ কিংবা ততক্ষণে ভিড় জমানো জনতার কেউ সাহায্য করেনি। কাছের হাসপাতালে নয়, চিকিৎসার জন্য অনেক দূরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ তাঁদের। সেখানেও অনেক অনুনয়ের পর পোশাকের ব্যবস্থা হয়। ফোন করে নিজের আত্মীয়দের খবর দিই। আত্মীয়রা আসার পর চিকিৎসা শুরু হয়।'
বান্ধবীর সঙ্গে অভিযুক্তরা ঠিক কী আচরণ করেছিল, তা অনেক পরে জানতে পারেন যুবকটি। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া বান্ধবীর বয়ান শুনে তাঁর মনে হয়েছিল, পশুরা শিকারে বেরিয়েও এমন আচরণ করে না।
কখনো বান্ধবীর পাশ থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবেননি যুবক। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে শুয়ে তাঁর বান্ধবী কখনো মনোবল হারাননি। বাঁচতে চেয়েছিলেন।
ওই দিনের ঘটনার পর নিজেও অনেক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর অপেক্ষা করেছিলেন বান্ধবীর সুস্থ হয়ে ওঠার। কিন্তু তা আর হলো না। তাই এখন অপরাধীদের শাস্তির জন্য সাক্ষ্য দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের : ওই তরুণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি পুলিশ। গতকাল শনিবার পুলিশ এক বিবৃতিতে দাবি করে, পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রথম ফোন আসে রাত ১০টা ২২ মিনিটে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশের দুটি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ১০টা ৩১ মিনিটের পর ওই দুজনেক নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ। ১০টা ৫৫ মিনিটে তাঁদের দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না।
সূত্র : আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
No comments