সংগ্রামী বেবির নতুন স্বপ্ন by আবু হেনা
বেবি খাতুনের মাথার বোঝাটা এবার একটু হালকা হবে। ২০ হাজার টাকা ঋণ আর তার চড়া সুদ বোঝার মতো চেপে ছিল বেবির ওপর। তাই গত ঈদটা যেমনই কাটুক না কেন, সামনের কোরবানির ঈদটা হয়তো দুই ছেলেকে নিয়ে একটু ভালো কাটবে। জীবনের চলার চাকাটা হয়তো একটু মসৃণ হবে।
কারণ, পুরান ঢাকার ভ্যানচালক বেবি খাতুনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রথম আলোর এক পাঠক। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘দুই ছেলেকে মানুষ করার জন্যই সংগ্রাম’ শিরোনামে বেবি খাতুনের ছবিসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গত ২৯ জুন। বেবির ছবিগুলো তুলে এনেছিলেন প্রথম আলোর গ্রাফিকস ডিজাইনার জয়দেব সরকার। ভ্যানচালক বেবি প্রথম আলোর পাঠকদের শুনিয়েছিলেন তাঁর সংগ্রামের কাহিনি।
বেবি খাতুন ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠেছেন অন্যের আশ্রয়ে। অল্প বয়সে বিয়ে। পরপর দুই সন্তান আলম (৮) ও আল আমিন (৩)। সংসারের সুখও তাঁর বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বছর তিনেক হলো স্বামী আলমগীর ছেড়ে যান তাঁদের।
এরপর ঢাকার গেন্ডারিয়ার ঘুণ্টিঘর এলাকার বস্তিতে বসে জীবন চালানোর কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না বেবি। বস্তির ঘর ভাড়া মাসে দুই হাজার টাকা, সন্তানদের ভরণপোষণ—এতসব চিন্তায় বিপর্যস্ত বেবি বেছে নেন ভ্যানচালানোর মতো কঠিন জীবন। ভ্যানের প্যাডেলে পা রেখে জীবনকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তাঁর কাজ ইসলামপুর ও পাটুয়াটুলীর বিভিন্ন দোকানদারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের জন্য দুপুরের খাবার সংগ্রহ করা। তারপর সেই খাবার নির্দিষ্ট দোকানে পৌঁছে দেওয়া। এ কাজে সঙ্গে নেন দুই ছেলেকে। বেলা ১১টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে বেলা দুইটা পর্যন্ত চলে এ কাজ। দোকানিদের খাওয়া শেষ হলে আবারও খাবারের পাত্রগুলো সংগ্রহ করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। এরপর ছুটি।
খাবারের বাটিগুলোতে যতটুকু খাবার অবশিষ্ট থাকে, তা একত্র করে দুই ছেলেকে খাওয়ান এই মা। এ কাজ করে তাঁর মাসে আয় হয় সাত হাজার টাকা। তা দিয়ে কোনোমতো চলে তিনজনের সংসার।
বেবির জীবন-সংগ্রামের গল্প প্রকাশ হওয়ার পর নিউইয়র্ক থেকে যোগাযোগ করেন প্রথম আলোর একজন পাঠক। তিনি আর্থিক সাহায্য করতে চান বেবি খাতুনকে। তিনি জানান, ছোট দুটি মেয়ে বেবির কাহিনি শুনে তাঁদের জন্য স্কুল থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে। এই অর্থের সঙ্গে তিনি আরও ৭০০ মার্কিন ডলার যোগ করে মোট এক হাজার ডলার ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন জয়দেব সরকারের কাছে। আজ শুক্রবার সকালে বেবির হাতে তুলে দেওয়া হয় এই টাকা।
তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন, সেই সূত্রে সাহায্য—এসবের অনেক কিছুই ঘটে গেছে বেবির অজ্ঞাতে। তাই একসঙ্গে এত টাকা হাতে পাওয়াটা ছিল তাঁর কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাই মনের রাশ আলগা করে তাঁর ঝুপড়ি ঘরের মেঝেতে বসে বলতে থাকেন এই টাকা দিয়ে কী করবেন।
ঋণ এখন সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এখান থেকে আগে শোধ দিয়ে দেবেন সেটা। তারপর যা থাকে সেখান থেকে কিছু টাকা বিশ্বস্ত কারও কাছে জমা রাখবেন দুই ছেলের পড়ার জন্য। নিজে পড়াশোনা করতে পারেননি, এই দুঃখ তাঁর যায় না। বেবি জানান, এবার ঈদে তেমন কিছু কিনতে পারেননি। তাই আসছে ঈদে দুই ছেলেকে কিছু কিনে দেবেন। দুই ছেলে নিয়ে একাই চলবেন তিনি।
এরপর ঢাকার গেন্ডারিয়ার ঘুণ্টিঘর এলাকার বস্তিতে বসে জীবন চালানোর কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না বেবি। বস্তির ঘর ভাড়া মাসে দুই হাজার টাকা, সন্তানদের ভরণপোষণ—এতসব চিন্তায় বিপর্যস্ত বেবি বেছে নেন ভ্যানচালানোর মতো কঠিন জীবন। ভ্যানের প্যাডেলে পা রেখে জীবনকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তাঁর কাজ ইসলামপুর ও পাটুয়াটুলীর বিভিন্ন দোকানদারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের জন্য দুপুরের খাবার সংগ্রহ করা। তারপর সেই খাবার নির্দিষ্ট দোকানে পৌঁছে দেওয়া। এ কাজে সঙ্গে নেন দুই ছেলেকে। বেলা ১১টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে বেলা দুইটা পর্যন্ত চলে এ কাজ। দোকানিদের খাওয়া শেষ হলে আবারও খাবারের পাত্রগুলো সংগ্রহ করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। এরপর ছুটি।
খাবারের বাটিগুলোতে যতটুকু খাবার অবশিষ্ট থাকে, তা একত্র করে দুই ছেলেকে খাওয়ান এই মা। এ কাজ করে তাঁর মাসে আয় হয় সাত হাজার টাকা। তা দিয়ে কোনোমতো চলে তিনজনের সংসার।
বেবির জীবন-সংগ্রামের গল্প প্রকাশ হওয়ার পর নিউইয়র্ক থেকে যোগাযোগ করেন প্রথম আলোর একজন পাঠক। তিনি আর্থিক সাহায্য করতে চান বেবি খাতুনকে। তিনি জানান, ছোট দুটি মেয়ে বেবির কাহিনি শুনে তাঁদের জন্য স্কুল থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে। এই অর্থের সঙ্গে তিনি আরও ৭০০ মার্কিন ডলার যোগ করে মোট এক হাজার ডলার ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন জয়দেব সরকারের কাছে। আজ শুক্রবার সকালে বেবির হাতে তুলে দেওয়া হয় এই টাকা।
তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন, সেই সূত্রে সাহায্য—এসবের অনেক কিছুই ঘটে গেছে বেবির অজ্ঞাতে। তাই একসঙ্গে এত টাকা হাতে পাওয়াটা ছিল তাঁর কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাই মনের রাশ আলগা করে তাঁর ঝুপড়ি ঘরের মেঝেতে বসে বলতে থাকেন এই টাকা দিয়ে কী করবেন।
ঋণ এখন সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এখান থেকে আগে শোধ দিয়ে দেবেন সেটা। তারপর যা থাকে সেখান থেকে কিছু টাকা বিশ্বস্ত কারও কাছে জমা রাখবেন দুই ছেলের পড়ার জন্য। নিজে পড়াশোনা করতে পারেননি, এই দুঃখ তাঁর যায় না। বেবি জানান, এবার ঈদে তেমন কিছু কিনতে পারেননি। তাই আসছে ঈদে দুই ছেলেকে কিছু কিনে দেবেন। দুই ছেলে নিয়ে একাই চলবেন তিনি।
No comments