পাঠকের মন্তব্য-পোশাকশিল্প ধ্বংস হয়ে গেলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?

প্রথম আলোর অনলাইনে (prothom-alo.com) প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পাঠকের মতামত প্রকাশিত হয়। তাঁদের এই মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।


কাল থেকে আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধ
পোশাকশিল্পের মালিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা গত শনিবার প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত হয়। এ সম্পর্কে মাসুদ রানা লিখেছেন: শেষে পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওরা সফল হয়েছে। দেশের জন্য কি ভালো হলো? সরকার সামলাতে পারেনি।
ইমতিয়াজ: গার্মেন্টসগুলো বন্ধ হলে মালিকদের কোনো ক্ষতি হবে না। এতে শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বেশি। এটা তাঁদের কে বোঝাবে?
জাকির হোসেন: প্রবাসী-আয়ের প্রবাহ দিন দিন কমছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ গত সাড়ে তিন বছর থেকেই শূন্যের কোঠায়। সবকিছু ছাপিয়ে গার্মেন্টস-শিল্পই আমাদের বারবার আশার আলো দেখিয়ে আসছিল। এই কিছুদিন আগে আমরা লন্ডন অলিম্পিকের অনেক দেশের পোশাক তৈরির বড় অর্ডার পেয়েছিলাম। পেয়েছিলাম ব্রিটিশ সেনাদের ইউনিফর্ম তৈরির অর্ডার। ঠিক সেই সময়ে তৈরি পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা শুরু করেছে দেশের শত্রুরা। তৈরি পোশাকশিল্প ধ্বংস হয়ে গেলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?

অসহায় মা, অসহায় শিশু
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দুরবস্থা ও তাদের এ দেশে ঢুকতে না দিতে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর ‘সাদাসিধে কথা’ কলামে এক আবেগস্পর্শী লেখা লিখেছেন। এ সম্পর্কে অনেক পাঠক তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন মতামত জানিয়েছেন।
ফারদীন ফেরদৌস: আমাদের মানবিক বোধগুলো নিশ্চিত মৃতপ্রায়। মানুষের জন্য নয়, কেবল ক্ষুদ্র স্বার্থের কাছেই আমরা পদানত হচ্ছি। নানা রকম কৌশলে ব্যক্তিস্বার্থের জয়গান চলছে নিরন্তর। আমরা যেন মানুষ নই মোটেও ...!
মো. মহসীন: মানুষের মনের কোণে অনেক বেদনা থাকে। সেটাকে লুকিয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, আগামী দিনের স্বপ্ন দেখে মানুষ বাঁচে। কিন্তু কখনো যদি সে বেদনার কথা হঠাৎ ঝড়ের বেগে দমকা হাওয়ার মতো মনে এসে আছড়ে পড়ে, তখন নিজেকে সামলানো সত্যিই খুব কঠিন। রোহিঙ্গাদের ছবি আর স্যারের লেখা পড়ে আমারও দুই দফা ঝড়ের কবলে পড়তে হলো। ফলে এত দিন আটকে রাখা চোখের পানি আর বাঁধ মানল না।
আসিফুল বাসার: স্যার, আপনার সাথে আমি একমত। কিন্তু একবার ভাবুন, বাংলাদেশ কোনো ধনী দেশ না। এ দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। ১৪ কোটি জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ একটা দেশ। এ দেশের পক্ষে কি বাড়তি বোঝা টানা সম্ভব? তার ওপর রোহিঙ্গারা গত দুই দশক বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের বাইরে যে ধরনের অপরাধকর্ম করেছে, তার পরও কি আমরা তাদের এ দেশে স্বাগত জানাব?
১৭৫ আসন শুধু ৭৫ হতে কতক্ষণ?
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশে করে সোহরাব হাসান তাঁর ‘কালের পুরাণ’ কলামে এই প্রশ্ন তুলেছেন। এ সম্পর্কে এস এম বিল্লাহ লিখেছেন: ২৩০ থেকে ১৭৫-এ নামতে সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছে। এখন ১৭৫ থেকে শুধু ৭৫-এর ফারাক খুব বেশি নয়। জনগণের রায়ই শেষ কথা। আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে না হয় একধরনের ধারণা পাওয়া গেল, কিন্তু বিএনপির ভবিষ্যৎ কী? সর্বোপরি, জনগণের ভবিষ্যৎটা কী!
মো. শফিকুল ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী ১৭৫ আসনের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ কতটি আসন পাবে, সেটা সবাই আন্দাজ করতে পারলেও প্রধানমন্ত্রী তা পারবেন না।
নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং নিষিদ্ধ
সরকারের এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রথম আলোর অনলাইন পাঠক বেশ ইতিবাচক কথাই বলেছেন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে কি না, সে সম্পর্কে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ফয়সাল লিখেছেন: চমৎকার সিদ্ধান্ত। কিন্তু এসব সিদ্ধান্ত না মানলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা সবাইকে জানানো দরকার।
ইফতেখার: এ ধরনের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। একই সঙ্গে নোংরা দলীয় রাজনীতির বিভক্তি থেকে শিক্ষক-সমাজকে বের করে আনার জন্য জরুরি পদক্ষেপ কামনা করছি।
সুবর্ণ সাথী চৌধুরী: প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে কোনো স্কুল কর্তৃপক্ষ বা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা যদি এ নীতিমালা অনুসরণ না করেন, তবে কীভাবে অভিভাবকেরা এর প্রতিকার পাবেন, তা জানানো প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষ যাতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়, এর জন্য যোগাযোগের ঠিকানা থাকা দরকার।
মো. ইমতিয়াজ হোসেন: বেতন ৬,৫০০, বাড়িভাড়া ১০,০০০ টাকা। বাড়িভাড়া কীভাবে দেবেন শিক্ষকেরা? খাবেন কী?

এ মাসেই ঢাকায় বলিউডের ছবি!
গত বুধবার প্রথম আলোর অনলাইনে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এ সম্পর্কে সাইফুল ইসলাম: খুবই খারাপ খবর। এমনিতেই হিন্দি সিরিয়াল দেশটাকে ডোবাচ্ছে। তার ওপর আবার হিন্দি সিনেমা!
এ আর সুমন: স্বাগত জানাই, টিকতে চাইলে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকুক আমাদের চলচ্চিত্র। এ দেশের ৯৯ শতাংশ চলচ্চিত্রই কুরুচিসম্পন্ন। ভালো ছবি তৈরি হলে এমনিতেই টিকে যাবে। এই প্রতিযোগিতা শুরু না হলে আমাদের চলচ্চিত্রনির্মাতারা মেধাশূন্য হয়ে যাবেন।
দীন ইসলাম মামুন: ভারতীয় পণ্য যেভাবে আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে, ভারতীয় সিনেমা, সিরিয়াল যেখানে অহরহই দেখছি টিভিতে, সিডিতে বা ডিভিডিতে, সেখানে ভারতীয় সিনেমা আমদানি করে এ দেশের সিনেমা হলে দেখালে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে? সিনেমাটাও একটা পণ্য আর আমদানিকারকেরা যথাবিহিত নিয়মকানুন মেনেই আমদানি করছেন। আমাদের দেশপ্রেমিকদের যদি সম্মানে লাগে, তাহলে ভারতীয় সিনেমাকে মোকাবিলা করার মতো ভালো সিনেমা বানান। জনগণ নিজ থেকেই ভারতীয় সিনেমা বর্জন করবে।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.