ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-৮০ কোটি টাকা জলে by মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত দেশে সড়ক পরিস্থিতি নিয়ে হৈচৈ শুরু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জোড়াতালি দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এ জন্য চার লেন প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়োগ করা হয় ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই মাসের মধ্যে ৮০ কোটি টাকার কাজও হয়। অর্থ সংকটে বাকি কাজ আর হয়নি।
কিন্তু ওই দুই মাসে দেওয়া জোড়াতালিও একপর্যায়ে ছিঁড়ে যায়। ফলে ৮০ কোটি টাকাই জলে গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই সময়কার মেরামতের কাজ বিফলে যাওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড় দারোগাহাট এলাকায় প্রায় দিনই যানবাহন বিকল হয়। প্রতি মুহূর্তে উভয় পাশে কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার যানজট লেগে থাকে। বাড়বকুণ্ড, সীতাকুণ্ড, বারইয়ারহাট পৌরসদরসহ আরো কয়েকটি স্থানেরও একই রকম অবস্থা। যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ ২৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কে চট্টগ্রাম জোনের প্রায় ৭০ কিলোমিটার যেন গলার কাঁটা।
এদিকে বর্ষায় সড়কের ভগ্নদশায় গত বছরের মতো এবারও যেন মহাদুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই দাবি সড়ক পরিবহন নেতা, চালক ও যাত্রীদের।
তবে মহাসড়কের বর্তমান তত্ত্বাবধানকারী কর্তৃপক্ষ চার লেন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দাবি, প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে অনেক কাজ থমকে আছে। গত বছরের শেষদিকে শুরু হওয়া মেরামত কাজের জন্য বরাদ্দ করা ১০০ কোটি টাকার মধ্যে এক টাকাও পাওয়া যায়নি সরকারের তরফ থেকে। ফলে যেসব স্থান এখনো মেরামত হয়নি, সেই স্থানগুলোতে আসন্ন ভরা বর্ষায় আদৌ জোড়াতালি লাগবে কি না সে নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
গর্তে আটকে বিকল হয় গাড়ি : চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে বার আউলিয়া পর্যন্ত রাস্তা প্রায় সমতল; কিন্তু কুমিরা থেকে বাড়বকুণ্ড পর্যন্ত মূল সড়কে কোথাও কোথাও গর্ত চোখে পড়ে। সড়ক থেকে শোল্ডারের (পাশের কাঁচা রাস্তা) দূরত্ব হয়ে গেছে এক থেকে দেড় ফুট। বাড়বকুণ্ড বাজারে পুরো সড়কে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। সীতাকুণ্ড বাইপাসের পুরোটাই বেহাল।
গত বৃহস্পতিবার সকালে বড় দারোগাহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি কাভার্ডভ্যান বিকল হয়ে আছে। চালক আবদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছি কাল (বুধবার) রাতে। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চালালেও হঠাৎ একটি গর্তে আটকে যাই।'
আবদুর রহমানের মতো অনেক চালকই প্রতিদিন এ রকম বিপদে পড়েন। কিন্তু দীর্ঘ সাত মাসেও এখানকার বড় গর্তগুলো ভরাট করা হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে এখানে 'ভালো মানের' জোড়াতালি দিয়েছিল চার লেন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। কিন্তু তাদের মেরামত পদ্ধতি এ সড়কের জন্য উপযুক্ত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার নাথ।
গত বছরের অক্টোবরে বড় দারোগাহাটে মেরামত প্রসঙ্গে সিনোহাইড্রো করপোরেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মি. পেংক কালের কণ্ঠকে বলেছিলেন, 'এবার মাটি পরিবর্তন করে ভালো মানের মেরামত করা হচ্ছে। আশা করি অনেক দিন টিকবে।'
চার লেন প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদাররা গত বছর মেরামত করেছিলেন বারইয়ারহাট, মিঠাছরা, মিরসরাই সদর, বড়তাকিয়া, হাদি ফকিরহাট, নিজামপুর, বড় দারোগাহাট, ছোট দারোগাহাট, সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড, কুমিরা, বার আউলিয়াসহ বিভিন্ন বাজারসংলগ্ন সড়কে। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগেরই অবস্থা নাজুক, সেখানে পুনরায় মেরামতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
আলাপকালে বড় দারোগারহাটের কথা বারবার উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রউফ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই একটি স্থানের কারণে প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশকে ধকল পোহাতে হচ্ছে, সবাই কষ্ট করছে।'
নিজামপুর কলেজ ও মিরসরাই সদরে কিছুটা উন্নতি লক্ষ করা গেলেও ভাঙনের নমুনা পাওয়া গেছে হাদি ফকিরহাট এবং মিঠাছরা বাইপাস এলাকায়। বারইয়ারহাট পৌরসদরের অবস্থাও বড় দারোগাহাটের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ফেনীর মুহুরীগঞ্জ এলাকায় সড়ক কিছুটা দেবে গেছে, উঁচু-নিচু অবস্থা তৈরি হয়েছে। মহিপাল এলাকায় রাস্তা খসে গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত বছর অনেক কষ্ট করেছি। এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা দুর্ভোগ কাটিয়ে। পথে পথে গর্তে আটকে গাড়ি বিকল হয়েছে। কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে, অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। এবার বর্ষায় সেই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে চাই।'
এদিকে বর্ষায় সড়কের ভগ্নদশায় গত বছরের মতো এবারও যেন মহাদুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই দাবি সড়ক পরিবহন নেতা, চালক ও যাত্রীদের।
তবে মহাসড়কের বর্তমান তত্ত্বাবধানকারী কর্তৃপক্ষ চার লেন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দাবি, প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে অনেক কাজ থমকে আছে। গত বছরের শেষদিকে শুরু হওয়া মেরামত কাজের জন্য বরাদ্দ করা ১০০ কোটি টাকার মধ্যে এক টাকাও পাওয়া যায়নি সরকারের তরফ থেকে। ফলে যেসব স্থান এখনো মেরামত হয়নি, সেই স্থানগুলোতে আসন্ন ভরা বর্ষায় আদৌ জোড়াতালি লাগবে কি না সে নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
গর্তে আটকে বিকল হয় গাড়ি : চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে বার আউলিয়া পর্যন্ত রাস্তা প্রায় সমতল; কিন্তু কুমিরা থেকে বাড়বকুণ্ড পর্যন্ত মূল সড়কে কোথাও কোথাও গর্ত চোখে পড়ে। সড়ক থেকে শোল্ডারের (পাশের কাঁচা রাস্তা) দূরত্ব হয়ে গেছে এক থেকে দেড় ফুট। বাড়বকুণ্ড বাজারে পুরো সড়কে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। সীতাকুণ্ড বাইপাসের পুরোটাই বেহাল।
গত বৃহস্পতিবার সকালে বড় দারোগাহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি কাভার্ডভ্যান বিকল হয়ে আছে। চালক আবদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছি কাল (বুধবার) রাতে। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চালালেও হঠাৎ একটি গর্তে আটকে যাই।'
আবদুর রহমানের মতো অনেক চালকই প্রতিদিন এ রকম বিপদে পড়েন। কিন্তু দীর্ঘ সাত মাসেও এখানকার বড় গর্তগুলো ভরাট করা হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে এখানে 'ভালো মানের' জোড়াতালি দিয়েছিল চার লেন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। কিন্তু তাদের মেরামত পদ্ধতি এ সড়কের জন্য উপযুক্ত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার নাথ।
গত বছরের অক্টোবরে বড় দারোগাহাটে মেরামত প্রসঙ্গে সিনোহাইড্রো করপোরেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মি. পেংক কালের কণ্ঠকে বলেছিলেন, 'এবার মাটি পরিবর্তন করে ভালো মানের মেরামত করা হচ্ছে। আশা করি অনেক দিন টিকবে।'
চার লেন প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদাররা গত বছর মেরামত করেছিলেন বারইয়ারহাট, মিঠাছরা, মিরসরাই সদর, বড়তাকিয়া, হাদি ফকিরহাট, নিজামপুর, বড় দারোগাহাট, ছোট দারোগাহাট, সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড, কুমিরা, বার আউলিয়াসহ বিভিন্ন বাজারসংলগ্ন সড়কে। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগেরই অবস্থা নাজুক, সেখানে পুনরায় মেরামতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
আলাপকালে বড় দারোগারহাটের কথা বারবার উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রউফ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই একটি স্থানের কারণে প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশকে ধকল পোহাতে হচ্ছে, সবাই কষ্ট করছে।'
নিজামপুর কলেজ ও মিরসরাই সদরে কিছুটা উন্নতি লক্ষ করা গেলেও ভাঙনের নমুনা পাওয়া গেছে হাদি ফকিরহাট এবং মিঠাছরা বাইপাস এলাকায়। বারইয়ারহাট পৌরসদরের অবস্থাও বড় দারোগাহাটের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ফেনীর মুহুরীগঞ্জ এলাকায় সড়ক কিছুটা দেবে গেছে, উঁচু-নিচু অবস্থা তৈরি হয়েছে। মহিপাল এলাকায় রাস্তা খসে গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত বছর অনেক কষ্ট করেছি। এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা দুর্ভোগ কাটিয়ে। পথে পথে গর্তে আটকে গাড়ি বিকল হয়েছে। কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে, অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। এবার বর্ষায় সেই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে চাই।'
No comments