সহজিয়া কড়চা-উদ্ধারকাজ: খালের ও খনির by সৈয়দ আবুল মকসুদ
দুটি উদ্ধারকাজ দেখলাম গত কয়েক দিনে। একটি বাংলার মাটিতে। মাটিতে বললে ভুল হবে—বাংলার পানিতে। আরেকটি চিলিতে। চিলির মাটিতেও নয়—মাটির নিচে। সোনা ও তামার খনিতে। একেবারে পাতালে। মাটির ওপর থেকে আধা কিলোমিটারেরও বেশি নিচে।
বাংলার মাটির উদ্ধারকাজটি আমাদের চ্যানেলগুলোয় দেখেছি। চিলির পাতালে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকাজ দেখেছি বিবিসিতে। তারা সরাসরি সম্প্রচার করেছে।
সালেহপুর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তুরাগ নদ। শীর্ণ তুরাগও নয়, তুরাগের একটি শাখাবিশেষ। কিন্তু টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মীদের সামনে মুখে খইফোটা আমাদের কর্মকর্তাদের বাচনে জানা গেল, তুরাগের শাখাটিই পৃথিবীর সবচেয়ে খরস্রোতা নদী। উত্তাল তার স্রোত। তুরাগের তুফানের কাছে আমাজান, আমু দরিয়া, হোয়াংহো তুচ্ছ। তুরাগের তরঙ্গের সামনে ম্লান হয়ে গেল আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, র্যাব, পুলিশ প্রভৃতি বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রতিভা। একটি হতভাগ্য বাস এবং হতভাগ্যতর প্রাণহীন যাত্রীদের দেহ পড়ে রইল পানিতে, ডাঙায় দাঁড়িয়ে শুধু পানির দিকে তাকিয়ে রইল হাজার হাজার কৌতূহলী মানুষ। যাঁদের মধ্যে ছিলেন হতভাগ্যদের প্রিয়জনেরাও।
সালেহপুর সেতুতে যা ঘটেছে, তা কোনো দুর্ঘটনা নয়—একটি রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক অভিযান। কোনো রকমে আমরা বাসের বডি বানাতে শিখেছি, ইঞ্জিন বানাতে পারি না। পারলে এমন শক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিন বানাতাম, যার গতি হতো ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার। আমরা বীরের জাতি। তাই কম গতির বাস চালকের পছন্দ নয়। অন্যের পেছনে যাওয়াও কোনো বীরের জাতির পক্ষে সম্ভব নয়। সামনের চাকা পাংচার হলো তো কী! তবুও আরেক বাসকে অতিক্রম করতে হবে। তা করতে গিয়ে ব্রিজের ওপর থেকে যদি চালককে ৫০ জন যাত্রী নিয়ে বাসটিসহ ৪০ ফুট পানিতে লাফিয়ে পড়তে হয়, তাতে দোষ কী?
তাই সালেহপুরের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের মেয়ে মনোয়ারা খাতুন তারা বাসের ভেতর থেকে নিজের শক্তিতে বেরিয়ে এসেও বাঁচতে পারল না। হয়তো সে ওই বাসের যাত্রী না হলেও এই সমাজে বাঁচতে পারত না। কোনো লম্পটের লালসার শিকার হয়ে একদিন ওকে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হতো। পানিতে হোক, ডাঙায় হোক—এ সমাজে নারী ও দুর্বল বাঁচতে পারে না।
অন্যদিকে বাঁচার অদম্য আকাঙ্ক্ষা দেখেছি চিলির মানুষের মধ্যে। অবশ্য সালেহপুর খাল থেকে সান হোসে খনি অনেক দূর। সান হোসে খনিতে ৩৩ জন শ্রমিক ৭০ দিন ধরে আটকে ছিলেন—শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা। বিশ্বব্যাপী মানুষ উদ্বেগে। আমাদের বড়পুকুরিয়ায় হলে অনেক আগেই হতভাগ্যদের চেহলাম অথবা আদ্যশ্রাদ্ধ করে ফেলতে হতো। জ্বালানিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে বাণী দিতেন। ৩৩ জনের বিনা খরচায় শেষকৃত্য হয়ে যেত।
প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে লাঠির মতো লম্বা দেশ চিলি। কোনো সাংঘাতিক উন্নত দেশ নয়। তার অতীত ও বর্তমান রাজনৈতিক ইতিহাস আমাদের মতোই বেদনাদায়ক। বাঙালি কবি-সাহিত্যিকদের কাছে পাবলো নেরুদার দেশ বলেই পরিচিত চিলি। চিলির সংবাদ সংস্থার সাবেক সম্পাদক ইউজেনিও অবলিতাজ আমার বন্ধু। হামবুর্গ ও বার্লিনে আমরা পাশাপাশি কামরায় অনেক দিন ছিলাম। তখন মার্কসবাদী সালভাদর আলেন্দেকে সরিয়ে অগাস্টো পিনোশে ক্ষমতা দখল করেছেন। অবলিতাজ ছিলেন পিনোশের মানুষ। ওর সঙ্গে কথা বলে বুঝতাম, নানা রকম গাভির একই রকম দুধ, জগৎ ঘুরে দেখা যাবে সব দেশের মধ্যশ্রেণীই একই রকম সুবিধাবাদী। তা সত্ত্বেও স্প্যানিশভাষী চিলির মানুষ স্বাজাত্যবোধে বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে অগ্রসর।
আমি যখন লেখাটি লিখছি, আমার সামনে টেলিভিশন খোলা। দেখছি শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকর্মীদের নৈপুণ্য ও দক্ষতা। বহুদিন ধরে তৈরি করা ৬২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গ দিয়ে ২১ বর্গ ইঞ্চি একটি ক্যাপসুল চলে যাচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে। ঝুঁকিপূর্ণ লিফটে চড়ে প্রথম যিনি উঠে এলেন, তাঁর নাম ফ্লোরেনসিও আভাতোজ। বয়স ৩১। ৭০ দিন পর দুনিয়ার আলো দেখলেন। সুড়ঙ্গের মুখের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল তাঁর ছয়-সাত বছরের ছেলে ও স্ত্রী মনিকা। এত দিন পর বাবাকে দেখে ছেলেটি ভীষণভাবে কাঁদতে লাগল। পৃথিবীর যেকোনো নারীর মতো মনিকার আবেগও একই রকম। দ্বিতীয় যে শ্রমিককে তোলা হলো, তাঁর নাম মারিও সেপালভেদা।
৩৩ জনের মধ্যে একজন বলিভিয়ার নাগরিক। সে জন্য উদ্ধারকাজ দেখতে ছুটে এসেছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। আভাতোজ উঠে আসার পর সংযত ভাষণ দিলেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা। নিজের কৃতিত্বের জন্য বড়াই করেননি। কথা বললেন বহুবচনে: ‘আমরা’।
চিলির চেয়ে আমরা চৌদ্দ গুণ বেশি মানুষ। উত্তাল তুফানের কারণে কচুরিপানা ভাসা খালের মধ্যে একটি বাস শনাক্ত করে তুলতে লাগল ৫৪ ঘণ্টা। ৩৯ বছরে সরকারি কোনো ক্ষেত্রে আমরা দক্ষ জনশক্তি ও বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে পারিনি। অথচ সব বিভাগে মানুষ গিজ গিজ করছে। বেতনভাতা দিয়ে পোষা হচ্ছে। মানি আমাদের কোনো প্রবলেম নয়। চাপিয়ে দেওয়া বৈদেশিক ঋণের টাকা বারোআনা খেয়ে ফেলেছি। বাকিটুকু দিয়ে কিনেছি অদরকারি ভোগ্যপণ্য, চেয়ার-টেবিল প্রভৃতি। কর্তাদের বিশাল চেয়ারখানির পেছনে বড় তোয়ালে মেলে দিয়েছি। চেয়ারের পেছনেই কোট-টাই ঝুলিয়ে রাখার স্ট্যান্ড বা আলনা দিয়েছি। মাথার চুল ঘন ঘন আঁচড়ানের জন্য দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়েছি আয়না। লাঞ্চ করার জন্য পার্টিশন দিয়ে ঘের দিয়েছি। দুপুরের পরে ভাতঘুমের জন্য কোনো কোনো আমলার ঘরে আছে বিশাল ইজি চেয়ার। ২০০১ থেকে অজুর বদনাও প্রত্যেকের ঘরে দেওয়া হয়েছে। বদনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পোয়াবারো। বাড়ি এবং গাড়ির কথা বলা নিষ্প্রয়োজন। একটি মাঝারি দুর্ঘটনার উদ্ধারকাজ চালানোর যন্ত্র আমাদের নেই।
সালেহপুরের হতভাগ্যদের জন্য শোক প্রকাশ করা ছাড়া করার কিছুই নেই। চিলির সান হোসের খনির পাতাল থেকে উদ্ধার করা শ্রমিকদের জন্য আমাদের গভীর আনন্দ। সুদক্ষ উদ্ধারকারীদের জানাই সশ্রদ্ধ অভিবাদন। চিলির সরকারকেও আমাদের অভিনন্দন।
সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
সালেহপুর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তুরাগ নদ। শীর্ণ তুরাগও নয়, তুরাগের একটি শাখাবিশেষ। কিন্তু টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মীদের সামনে মুখে খইফোটা আমাদের কর্মকর্তাদের বাচনে জানা গেল, তুরাগের শাখাটিই পৃথিবীর সবচেয়ে খরস্রোতা নদী। উত্তাল তার স্রোত। তুরাগের তুফানের কাছে আমাজান, আমু দরিয়া, হোয়াংহো তুচ্ছ। তুরাগের তরঙ্গের সামনে ম্লান হয়ে গেল আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, র্যাব, পুলিশ প্রভৃতি বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রতিভা। একটি হতভাগ্য বাস এবং হতভাগ্যতর প্রাণহীন যাত্রীদের দেহ পড়ে রইল পানিতে, ডাঙায় দাঁড়িয়ে শুধু পানির দিকে তাকিয়ে রইল হাজার হাজার কৌতূহলী মানুষ। যাঁদের মধ্যে ছিলেন হতভাগ্যদের প্রিয়জনেরাও।
সালেহপুর সেতুতে যা ঘটেছে, তা কোনো দুর্ঘটনা নয়—একটি রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক অভিযান। কোনো রকমে আমরা বাসের বডি বানাতে শিখেছি, ইঞ্জিন বানাতে পারি না। পারলে এমন শক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিন বানাতাম, যার গতি হতো ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার। আমরা বীরের জাতি। তাই কম গতির বাস চালকের পছন্দ নয়। অন্যের পেছনে যাওয়াও কোনো বীরের জাতির পক্ষে সম্ভব নয়। সামনের চাকা পাংচার হলো তো কী! তবুও আরেক বাসকে অতিক্রম করতে হবে। তা করতে গিয়ে ব্রিজের ওপর থেকে যদি চালককে ৫০ জন যাত্রী নিয়ে বাসটিসহ ৪০ ফুট পানিতে লাফিয়ে পড়তে হয়, তাতে দোষ কী?
তাই সালেহপুরের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের মেয়ে মনোয়ারা খাতুন তারা বাসের ভেতর থেকে নিজের শক্তিতে বেরিয়ে এসেও বাঁচতে পারল না। হয়তো সে ওই বাসের যাত্রী না হলেও এই সমাজে বাঁচতে পারত না। কোনো লম্পটের লালসার শিকার হয়ে একদিন ওকে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হতো। পানিতে হোক, ডাঙায় হোক—এ সমাজে নারী ও দুর্বল বাঁচতে পারে না।
অন্যদিকে বাঁচার অদম্য আকাঙ্ক্ষা দেখেছি চিলির মানুষের মধ্যে। অবশ্য সালেহপুর খাল থেকে সান হোসে খনি অনেক দূর। সান হোসে খনিতে ৩৩ জন শ্রমিক ৭০ দিন ধরে আটকে ছিলেন—শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা। বিশ্বব্যাপী মানুষ উদ্বেগে। আমাদের বড়পুকুরিয়ায় হলে অনেক আগেই হতভাগ্যদের চেহলাম অথবা আদ্যশ্রাদ্ধ করে ফেলতে হতো। জ্বালানিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে বাণী দিতেন। ৩৩ জনের বিনা খরচায় শেষকৃত্য হয়ে যেত।
প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে লাঠির মতো লম্বা দেশ চিলি। কোনো সাংঘাতিক উন্নত দেশ নয়। তার অতীত ও বর্তমান রাজনৈতিক ইতিহাস আমাদের মতোই বেদনাদায়ক। বাঙালি কবি-সাহিত্যিকদের কাছে পাবলো নেরুদার দেশ বলেই পরিচিত চিলি। চিলির সংবাদ সংস্থার সাবেক সম্পাদক ইউজেনিও অবলিতাজ আমার বন্ধু। হামবুর্গ ও বার্লিনে আমরা পাশাপাশি কামরায় অনেক দিন ছিলাম। তখন মার্কসবাদী সালভাদর আলেন্দেকে সরিয়ে অগাস্টো পিনোশে ক্ষমতা দখল করেছেন। অবলিতাজ ছিলেন পিনোশের মানুষ। ওর সঙ্গে কথা বলে বুঝতাম, নানা রকম গাভির একই রকম দুধ, জগৎ ঘুরে দেখা যাবে সব দেশের মধ্যশ্রেণীই একই রকম সুবিধাবাদী। তা সত্ত্বেও স্প্যানিশভাষী চিলির মানুষ স্বাজাত্যবোধে বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে অগ্রসর।
আমি যখন লেখাটি লিখছি, আমার সামনে টেলিভিশন খোলা। দেখছি শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকর্মীদের নৈপুণ্য ও দক্ষতা। বহুদিন ধরে তৈরি করা ৬২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গ দিয়ে ২১ বর্গ ইঞ্চি একটি ক্যাপসুল চলে যাচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে। ঝুঁকিপূর্ণ লিফটে চড়ে প্রথম যিনি উঠে এলেন, তাঁর নাম ফ্লোরেনসিও আভাতোজ। বয়স ৩১। ৭০ দিন পর দুনিয়ার আলো দেখলেন। সুড়ঙ্গের মুখের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল তাঁর ছয়-সাত বছরের ছেলে ও স্ত্রী মনিকা। এত দিন পর বাবাকে দেখে ছেলেটি ভীষণভাবে কাঁদতে লাগল। পৃথিবীর যেকোনো নারীর মতো মনিকার আবেগও একই রকম। দ্বিতীয় যে শ্রমিককে তোলা হলো, তাঁর নাম মারিও সেপালভেদা।
৩৩ জনের মধ্যে একজন বলিভিয়ার নাগরিক। সে জন্য উদ্ধারকাজ দেখতে ছুটে এসেছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। আভাতোজ উঠে আসার পর সংযত ভাষণ দিলেন চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা। নিজের কৃতিত্বের জন্য বড়াই করেননি। কথা বললেন বহুবচনে: ‘আমরা’।
চিলির চেয়ে আমরা চৌদ্দ গুণ বেশি মানুষ। উত্তাল তুফানের কারণে কচুরিপানা ভাসা খালের মধ্যে একটি বাস শনাক্ত করে তুলতে লাগল ৫৪ ঘণ্টা। ৩৯ বছরে সরকারি কোনো ক্ষেত্রে আমরা দক্ষ জনশক্তি ও বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে পারিনি। অথচ সব বিভাগে মানুষ গিজ গিজ করছে। বেতনভাতা দিয়ে পোষা হচ্ছে। মানি আমাদের কোনো প্রবলেম নয়। চাপিয়ে দেওয়া বৈদেশিক ঋণের টাকা বারোআনা খেয়ে ফেলেছি। বাকিটুকু দিয়ে কিনেছি অদরকারি ভোগ্যপণ্য, চেয়ার-টেবিল প্রভৃতি। কর্তাদের বিশাল চেয়ারখানির পেছনে বড় তোয়ালে মেলে দিয়েছি। চেয়ারের পেছনেই কোট-টাই ঝুলিয়ে রাখার স্ট্যান্ড বা আলনা দিয়েছি। মাথার চুল ঘন ঘন আঁচড়ানের জন্য দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়েছি আয়না। লাঞ্চ করার জন্য পার্টিশন দিয়ে ঘের দিয়েছি। দুপুরের পরে ভাতঘুমের জন্য কোনো কোনো আমলার ঘরে আছে বিশাল ইজি চেয়ার। ২০০১ থেকে অজুর বদনাও প্রত্যেকের ঘরে দেওয়া হয়েছে। বদনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পোয়াবারো। বাড়ি এবং গাড়ির কথা বলা নিষ্প্রয়োজন। একটি মাঝারি দুর্ঘটনার উদ্ধারকাজ চালানোর যন্ত্র আমাদের নেই।
সালেহপুরের হতভাগ্যদের জন্য শোক প্রকাশ করা ছাড়া করার কিছুই নেই। চিলির সান হোসের খনির পাতাল থেকে উদ্ধার করা শ্রমিকদের জন্য আমাদের গভীর আনন্দ। সুদক্ষ উদ্ধারকারীদের জানাই সশ্রদ্ধ অভিবাদন। চিলির সরকারকেও আমাদের অভিনন্দন।
সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
No comments