সাদা করার পক্ষে আবারও বললেন অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিব-কালোটাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞ সৃষ্টি হবে!
কালোটাকা সাদা করার পক্ষে আবারও সাফাই গাইলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক। অর্থমন্ত্রী জানান, অর্থ পাচার বন্ধ, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও বিনিয়োগ বাড়াতে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর অর্থসচিবের মতে, বিশাল কর্মযজ্ঞ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার বেসরকারি টিভি চ্যানেল দেশ টিভি ও প্রাইম ব্যাংক আয়োজিত ‘বাজেট ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংলাপে অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিব এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এই সংলাপ হয়। অনুষ্ঠানটি দেশ টিভি সরাসরি সম্প্রচার করে। এতে সভাপতিত্ব করেন দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর। সংলাপে অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
অর্থমন্ত্রীর মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪২ থেকে ৮২ শতাংশ পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে কালোটাকা রয়েছে। বড় ধরনের সম্পদ এভাবেই আছে। সরকারের চেষ্টা থাকা উচিত এসব সম্পদ করের আওতায় আনা। এটা শুধু বিনিয়োগ নয়, দেশের জন্যও ভালো।
কিছু মানুষের মধ্যে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার ভাবলাম, অপ্রদর্শিত আয়কে ঘোষণার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি না। যার যা কর হবে, তার ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া “অন্যরা” এসব ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে চাইলে সেই সুযোগ তো রয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি, রাজনৈতিক মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। তবে বাজেটে যেসব প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য।
অন্যদিকে অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ‘কালো অর্থনীতি’ নেই। ওই অর্থনীতির মানে হলো, ওই সম্পদের ওপর কর দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, ভারত ৫০ বছর ধরে এ ধরনের অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার চেষ্টা করছে।
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার সমালোচনা করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘সাধারণ আইনে কালোটাকা উদ্ঘাটিত হলে শাস্তি দিয়ে সাদা করার সুযোগ রয়েছে। মামলা-মোকদ্দমার কারণে কালোটাকা উপার্জনকারীর পরিচয় জনসম্মুখে প্রকাশ পেত, যা একধরনের শাস্তি। কিন্তু এখন “আমি আর আপনি” মিলে চুপিচুপি কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো।’
বাজেটে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এবারের অগ্রাধিকার হচ্ছে মানুষের মঙ্গল। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি। তাঁর মতে, কর ফাঁকি মানুষের অভ্যাসের অংশ। এ জন্য বিভিন্ন খাতে অগ্রিম কর নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিদেশি সহায়তা ব্যবহারের অনীহা দূর করতে একটি বিশেষ সমন্বয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), পরিকল্পনা কমিশন, উন্নয়ন সহযোগী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা প্রতি দু-তিন মাসে প্রকল্প সহায়তার অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করবেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, গত দুই বছরে বিনিয়োগ খুব বেশি না বাড়লেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এর মানে দক্ষতা বেড়েছে, উৎপাদন বেড়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, কারিগরি শিক্ষা প্রতিবারের মতো এবারও অবহেলিত রয়েছে। আর গবেষণার জন্য অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষা উন্নয়ন হোঁচট খাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার কোথায়?’
এসিআইয়ের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা বলেন, গত তিন বছরেও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) নীতিমালা তৈরি হয়নি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রপ্তানিকারকদের ওপর উৎসে করের প্রথা বাতিলের দাবি করে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। আর জ্বালানি-সংকট আগামী পাঁচ বছরে মিটবে কি না, জানি না।’
নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘এবার ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে সরকার কম ঋণ নেবে, এমন আস্থার কথা অর্থমন্ত্রীর কাছে পাইনি।’ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, এবার কৃষি খাতের উৎপাদন সঠিকভাবে প্রাক্কলন করা হলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ হবে বলে তিনি মনে করেন।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ অর্থমন্ত্রীর কাছে তিনটি প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বেশি বাড়াতে গেলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। আবার মূল্যস্ফীতি বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। এমন অবস্থায় অর্থমন্ত্রী কোনটি বেছে নেবেন? ধনী-গরিবের ব্যবধান কমাতে সম্পদশালীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না। পাইপলাইনে থাকা বিদেশি সহায়তা ছাড় করতে কী ব্যবস্থা নেবেন? রঙের কাঁচামাল আমদানির ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ) শামসুল আলম, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ম তামিম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, নারীনেত্রী শিরীন আখতার প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রীর মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪২ থেকে ৮২ শতাংশ পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে কালোটাকা রয়েছে। বড় ধরনের সম্পদ এভাবেই আছে। সরকারের চেষ্টা থাকা উচিত এসব সম্পদ করের আওতায় আনা। এটা শুধু বিনিয়োগ নয়, দেশের জন্যও ভালো।
কিছু মানুষের মধ্যে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার ভাবলাম, অপ্রদর্শিত আয়কে ঘোষণার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি না। যার যা কর হবে, তার ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া “অন্যরা” এসব ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে চাইলে সেই সুযোগ তো রয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি, রাজনৈতিক মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। তবে বাজেটে যেসব প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য।
অন্যদিকে অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ‘কালো অর্থনীতি’ নেই। ওই অর্থনীতির মানে হলো, ওই সম্পদের ওপর কর দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, ভারত ৫০ বছর ধরে এ ধরনের অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনার চেষ্টা করছে।
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার সমালোচনা করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘সাধারণ আইনে কালোটাকা উদ্ঘাটিত হলে শাস্তি দিয়ে সাদা করার সুযোগ রয়েছে। মামলা-মোকদ্দমার কারণে কালোটাকা উপার্জনকারীর পরিচয় জনসম্মুখে প্রকাশ পেত, যা একধরনের শাস্তি। কিন্তু এখন “আমি আর আপনি” মিলে চুপিচুপি কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো।’
বাজেটে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এবারের অগ্রাধিকার হচ্ছে মানুষের মঙ্গল। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি। তাঁর মতে, কর ফাঁকি মানুষের অভ্যাসের অংশ। এ জন্য বিভিন্ন খাতে অগ্রিম কর নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিদেশি সহায়তা ব্যবহারের অনীহা দূর করতে একটি বিশেষ সমন্বয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), পরিকল্পনা কমিশন, উন্নয়ন সহযোগী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা প্রতি দু-তিন মাসে প্রকল্প সহায়তার অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করবেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, গত দুই বছরে বিনিয়োগ খুব বেশি না বাড়লেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এর মানে দক্ষতা বেড়েছে, উৎপাদন বেড়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, কারিগরি শিক্ষা প্রতিবারের মতো এবারও অবহেলিত রয়েছে। আর গবেষণার জন্য অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষা উন্নয়ন হোঁচট খাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রাধিকার কোথায়?’
এসিআইয়ের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা বলেন, গত তিন বছরেও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) নীতিমালা তৈরি হয়নি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রপ্তানিকারকদের ওপর উৎসে করের প্রথা বাতিলের দাবি করে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। আর জ্বালানি-সংকট আগামী পাঁচ বছরে মিটবে কি না, জানি না।’
নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘এবার ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে সরকার কম ঋণ নেবে, এমন আস্থার কথা অর্থমন্ত্রীর কাছে পাইনি।’ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, এবার কৃষি খাতের উৎপাদন সঠিকভাবে প্রাক্কলন করা হলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ হবে বলে তিনি মনে করেন।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ অর্থমন্ত্রীর কাছে তিনটি প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বেশি বাড়াতে গেলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। আবার মূল্যস্ফীতি বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। এমন অবস্থায় অর্থমন্ত্রী কোনটি বেছে নেবেন? ধনী-গরিবের ব্যবধান কমাতে সম্পদশালীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না। পাইপলাইনে থাকা বিদেশি সহায়তা ছাড় করতে কী ব্যবস্থা নেবেন? রঙের কাঁচামাল আমদানির ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ) শামসুল আলম, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ম তামিম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, নারীনেত্রী শিরীন আখতার প্রমুখ।
No comments