সংবর্ধনা-সমাজবদলের সহযোগী হও

সমাজবদলের সহযোগী হতে হবে তোমাদের। পিতামাতা, শিক্ষকসহ বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি সব সময় শ্রদ্ধা থাকতে হবে। ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়ার জন্য নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে—এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গুণীজনেরা এসব কথা বলেন।


মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে মেধাবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তাঁরা।
প্রথম আলোর আয়োজনে ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবি) সহযোগিতায় গতকাল রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পটুয়াখালী জেলার কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন। অনুষ্ঠানের প্রচার সহযোগী মাছরাঙা টেলিভিশন, এবিসি রেডিও ও প্রথম আলো অনলাইন ডটকম।
ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: শহরের শহীদ সাটু হলে সকাল ১০টায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে অন্ধকার দূর করে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার ও সমাজবদলের সহযোগী হওয়ার শপথ নেয় জেলার সাত শতাধিক কৃতী শিক্ষার্থী।
স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন। গুণীজনদের পাশাপাশি বক্তব্য দেয় অদম্য মেধাবীরা। অনুষ্ঠানে জেলার প্রবীণ শিক্ষক হাসানুল মবিন বলেন, সব ভালো কাজের সঙ্গে মেধাবীদের জড়িত হতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে সারা দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গৌরব অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।
প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘মেধাবীদের আলোর পথের যাত্রী হতে হবে। সবাই সক্রিয় হলে আমরা সমাজকে বদলে দিতে পারব।’
হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানায় গোমস্তাপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে অদম্য মেধাবী জুয়েল রেজা। আরেক অদম্য মেধাবী আবদুর রাকিবের প্রত্যাশা, দেশের সব মেধাবী একদিন সোনার মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।
অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। একই সঙ্গে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে মেধাবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তাঁরা।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি রফিক হাসান। অনুষ্ঠানে হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফের হাতে জেলার সেরা বিদ্যালয়ের স্মারক তুলে দেওয়া হয়। আলোচনার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কৌতুক পরিবেশন করেন কৃতী শিক্ষার্থী শাকিলা বানু, বন্ধুসভার আবদুল কাদের ও জিয়াউল হক। এ ছাড়া গান গেয়ে শোনান বন্ধুসভার নাফিসা নুশরাত, আল-আমিন, বাবলুল হক ও ক্লোজআপ ওয়ান তারকা কিশোর।
পটুয়াখালী: সকাল নয়টার মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণ। সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর পটুয়াখালী প্রতিনিধি শংকর দাস।
অনুষ্ঠানে পটুয়াখালীর প্রায় ৪০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অতিথিদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. রবিউল হক কৃতী শিক্ষার্থীদের দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করার পরামর্শ দেন।
পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র শীল বলেন, ‘যে অবস্থাতেই তোমরা থাক না কেন, দেশের জন্য কাজ করার বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে।’ শিক্ষার্থীদের ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়তে এগিয়ে আসার কথা বলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নওয়াব আলী।
প্রথম আলোর সহকারী বার্তা সম্পাদক কাজী আলিম-উজ-জামান শিক্ষার্থীদের ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা পদক (ক্রেস্ট) তুলে দেওয়া হয় পটুয়াখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর কুমার পালের হাতে। তিনি শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা নিয়ে দেশকে সুন্দরের পথে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে কৃতী শিক্ষার্থী সায়মা আহমেদ, অনামিকা চ্যাটার্জি ও রাহিদ। এছাড়া দখিনা খেলাঘর পরিবেশন করে গীত নৃত্যনাট্য ‘সংগ্রামে ঐতিহ্যে বাঙালি’।

No comments

Powered by Blogger.