গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতা-মালিক-শ্রমিক উভয়কেই দায়িত্বশীল হতে হবে
বেতন বাড়ানোর দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন সাভার-আশুলিয়ার পর কাঁচপুর-ডেমরা এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে রাস্তা দখল করে আন্দোলন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং যথেচ্ছ গাড়ি ভাঙচুরের ফলে সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও কার্যত অচল হয়ে পড়ছে।
গত কয়েক দিনে সারা দেশের হাজার হাজার মানুষকে যানবাহনের অভাবে চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সরকার গার্মেন্ট মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা তৈরির যে চেষ্টা চালাচ্ছিল, তাও সফলতার মুখ দেখেনি। মালিকদের সমিতি বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে আশুলিয়া এলাকার সব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কারখানা বন্ধ রাখা হলেও আন্দোলন থামেনি। গতকাল রবিবারও সাভার-আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিকরা রাস্তা দখল করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে এবং বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, গার্মেন্ট মালিক ও শ্রমিকরা কার্যত মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে। আর তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সারা দেশের মানুষকে। এর শেষ কোথায়?
দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের অর্থনীতির জন্য নিঃসন্দেহে এক অশুভ বার্তা বহন করছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী কে? একদিকে চলছে আন্দোলনের নামে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নৈরাজ্য, অন্যদিকে রয়েছে মালিকদের অনমনীয়তা- এর কোনোটাই আমাদের কাম্য নয়। অভিযোগ রয়েছে, দেশি ও বিদেশি কিছু গোষ্ঠী আমাদের গার্মেন্ট শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে এবং তারাই বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের অযৌক্তিক ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা সেই অভিযোগ অস্বীকার করছি না। কিন্তু এটাও কি সত্য নয় যে আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকরা গার্মেন্ট রপ্তানিকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে? আর যদি কোনো ষড়যন্ত্র থেকেও থাকে, তাহলে যৌক্তিকভাবেই তার মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষকেই যৌক্তিক অবস্থানে থাকতে হবে। দাবি জানানো এবং দাবি আদায়ের চেনা পথগুলো দিয়েই শ্রমিকদের হাঁটতে হবে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তারা শুধু মালিকদের নয়, একসময় দেশবাসীরও ক্ষোভ-বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আবার মালিকদেরও কারখানায় স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তা ধরে রাখার ক্ষেত্রে আরো বেশি যত্নবান হতে হবে। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও কোনো দাবি মানা হবে না কিংবা অন্য কোনো রকম একগুঁয়েমি প্রদর্শন করা এবং নিজের কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যাওয়া- কোনো পক্ষের জন্যই শুভ হবে না। দেশে এখনো গার্মেন্ট শ্রমিকদের সঠিক প্রতিনিধিত্ব করে এমন কোনো শ্রমিক সংগঠন নেই। ফলে কার্যকর দরকষাকষির সুযোগও কম। এটিও বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। গার্মেন্ট খাতে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারকে আরো দক্ষতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। 'ষড়যন্ত্র হচ্ছে'- এ ধরনের কথা কেবল মুখে বললে হবে না, কাজেও প্রমাণ দিতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মালিক-শ্রমিক উভয়ের স্বার্থ বিবেচনা করেই গার্মেন্ট শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি জনস্বার্থ কিংবা জনদুর্ভোগের দিকগুলোকেও বিবেচনায় রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, তিন দশকে আমাদের গার্মেন্ট শিল্প অনেক দূর এগিয়ে গেলেও এর প্রায় পুরোটাই হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। বিশাল পরিধির এই শিল্প এখনো যদি সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই এগোতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই শিল্পের অবস্থা আরো নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। আমরা চাই, গার্মেন্ট শিল্পের বর্তমান সমস্যা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলো মূল্যায়ন করে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা তৈরি করা হোক এবং সে অনুযায়ী এই শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া হোক।
দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের অর্থনীতির জন্য নিঃসন্দেহে এক অশুভ বার্তা বহন করছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী কে? একদিকে চলছে আন্দোলনের নামে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নৈরাজ্য, অন্যদিকে রয়েছে মালিকদের অনমনীয়তা- এর কোনোটাই আমাদের কাম্য নয়। অভিযোগ রয়েছে, দেশি ও বিদেশি কিছু গোষ্ঠী আমাদের গার্মেন্ট শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে এবং তারাই বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের অযৌক্তিক ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা সেই অভিযোগ অস্বীকার করছি না। কিন্তু এটাও কি সত্য নয় যে আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকরা গার্মেন্ট রপ্তানিকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে? আর যদি কোনো ষড়যন্ত্র থেকেও থাকে, তাহলে যৌক্তিকভাবেই তার মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষকেই যৌক্তিক অবস্থানে থাকতে হবে। দাবি জানানো এবং দাবি আদায়ের চেনা পথগুলো দিয়েই শ্রমিকদের হাঁটতে হবে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তারা শুধু মালিকদের নয়, একসময় দেশবাসীরও ক্ষোভ-বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আবার মালিকদেরও কারখানায় স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তা ধরে রাখার ক্ষেত্রে আরো বেশি যত্নবান হতে হবে। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও কোনো দাবি মানা হবে না কিংবা অন্য কোনো রকম একগুঁয়েমি প্রদর্শন করা এবং নিজের কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যাওয়া- কোনো পক্ষের জন্যই শুভ হবে না। দেশে এখনো গার্মেন্ট শ্রমিকদের সঠিক প্রতিনিধিত্ব করে এমন কোনো শ্রমিক সংগঠন নেই। ফলে কার্যকর দরকষাকষির সুযোগও কম। এটিও বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। গার্মেন্ট খাতে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারকে আরো দক্ষতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। 'ষড়যন্ত্র হচ্ছে'- এ ধরনের কথা কেবল মুখে বললে হবে না, কাজেও প্রমাণ দিতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মালিক-শ্রমিক উভয়ের স্বার্থ বিবেচনা করেই গার্মেন্ট শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি জনস্বার্থ কিংবা জনদুর্ভোগের দিকগুলোকেও বিবেচনায় রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, তিন দশকে আমাদের গার্মেন্ট শিল্প অনেক দূর এগিয়ে গেলেও এর প্রায় পুরোটাই হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। বিশাল পরিধির এই শিল্প এখনো যদি সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই এগোতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই শিল্পের অবস্থা আরো নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। আমরা চাই, গার্মেন্ট শিল্পের বর্তমান সমস্যা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলো মূল্যায়ন করে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা তৈরি করা হোক এবং সে অনুযায়ী এই শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া হোক।
No comments