পকেটমার! by আনোয়ার হোসেন
মঙ্গলবার সমকালের 'অন্যদৃষ্টি' কলামে লেখা হয় :বাংলাদেশে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে যাদের মধ্যে ফটকাবাজির ঝোঁক রয়েছে তারা ভারতের রফতানি নীতিনির্ধারকদের হাজারবার সালাম জানাতেই পারে। তাদের এক সিদ্ধান্তে কয়েকদিনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ তারা আমাদের ক্রেতাদের পকেট থেকে প্রায় বিনা শ্রমে ও মূলধনে কেটে নিতে পেরেছেন।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা একটু হিন্দি স্টাইলে বলেই ফেলুন না, 'বেঁচে থাক বাছারা!'
ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে কত দ্রুত পড়ে, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকব। মাত্র সপ্তাহখানেক এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে কারও এলসি খোলার কথা নয়। কারণ ভারত রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল। দেশের বাজারে যা মজুদ ছিল, তা থেকেই এ কয়েকটি দিন কেনাবেচা হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম ঝাঁজ ছড়াচ্ছিল। রান্নার জন্য অপরিহার্য এ দ্রব্য নিয়ে কয়েকটি দিন রমরমা ব্যবসা চলে। যেসব ব্যবসায়ী এ থেকে ভালো মুনাফা লুটেছে তারা এখন ভারত সরকারকে এ বলে দুষতে পারে যে, আরও কয়েকটি দিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখলে কী এমন ক্ষতি হতো? তবে এক মওকা হাতছাড়া হলে নতুন কিছু দ্রুত ধরতে আমাদের ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট পারঙ্গম। নব্বইয়ের দশকে ভারতে প্লেগ রোগ দেখা দিয়েছিল একটি এলাকায়। তখন কিছু পণ্য ভারত থেকে আমদানির ওপর বাংলাদেশ সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু এখানের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ এমন প্রচার শুরু করে যেন ভারত থেকে সবকিছু আমদানিই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
কথায় বলে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। বাজারে আরও কয়েকটি দিন পেঁয়াজ চড়া দামেই কিনতে হবে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা যুক্তি দেখাবেন, দাম যখন বেশি ছিল তখন আমরা কিনে রেখেছি। কাজেই ভারত থেকে আমদানির সুযোগ মিললেও আমরা দাম কমাতে পারব না।
প্রকৃতপক্ষে দেশের অনেক পণ্যের বাজারই চলে গেছে ফটকা খেলায় অভ্যস্ত কিছু লোকের নিয়ন্ত্রণে। তারা দারুণ ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছে। কেউ তাদের টিকিটিও ধরতে পারে না। সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। বাস্তবে এর অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু তা ভাঙার জন্য সরকারের মধ্যে যে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার, তা অনুপস্থিত। পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কিছু লোক। তাদের দেখাদেখি খুচরা বিক্রেতারাও ভাবে_ আমরাও কেন সুযোগ নিই না। এ কারণে দেখা যায় এক বাজার থেকে আরেক বাজারে পণ্যের দামে হেরফের। এমনকি এক বাজারেও দোকানে দোকানে পার্থক্য। কয়েকদিন আগে মিল্ক ভিটার দুধ কিনতে গেলে দাম চাইল এক লিটার ৬০ টাকা। নির্ধারিত দামের চেয়ে আট টাকা কেন বেশি দেব, এ প্রশ্ন করায় সঙ্গে সঙ্গে উত্তর_ ঠিক আছে ৫৫ টাকা দেন। এটা ঘটেছে খুচরা দোকানে। দোকানি মনে করেছে, কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। যে ক্রেতা প্রশ্ন করে তাকে দোকানে যত কম সময় রাখা যায় ততই ভালো। পাইকারি ও খুচরা বাজারের এসব অনিয়ম সরকারের দেখার কথা। কিন্তু মনে হয়, ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ অবস্থানের কারণে তারাও অসহায়। তা ছাড়া সরকারের ভেতরেও যে রয়েছে ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী লবি। অনেক বড় ব্যবসায়ী জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। বিএনপিতেও রয়েছেন অনেক বড় ব্যবসায়ী। অনেকে বলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপিতে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অবস্থান আরও জোরালো। আওয়ামী লীগ সরকার অসাধু ব্যবসায়ীদের শায়েস্তা করতে না পারলে তাদের মওকা আরও বেশি হয়। এমনিতে দুই দলের মধ্যে মিল প্রায় নেই। কিন্তু দুই দলে যেসব ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা জনগণের পকেট কাটায় একাট্টা।
পেঁয়াজ থেকে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কত পকেট কেটেছেন তার হিসাব কেউ কি দেবে?
ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে কত দ্রুত পড়ে, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকব। মাত্র সপ্তাহখানেক এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে কারও এলসি খোলার কথা নয়। কারণ ভারত রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল। দেশের বাজারে যা মজুদ ছিল, তা থেকেই এ কয়েকটি দিন কেনাবেচা হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম ঝাঁজ ছড়াচ্ছিল। রান্নার জন্য অপরিহার্য এ দ্রব্য নিয়ে কয়েকটি দিন রমরমা ব্যবসা চলে। যেসব ব্যবসায়ী এ থেকে ভালো মুনাফা লুটেছে তারা এখন ভারত সরকারকে এ বলে দুষতে পারে যে, আরও কয়েকটি দিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখলে কী এমন ক্ষতি হতো? তবে এক মওকা হাতছাড়া হলে নতুন কিছু দ্রুত ধরতে আমাদের ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট পারঙ্গম। নব্বইয়ের দশকে ভারতে প্লেগ রোগ দেখা দিয়েছিল একটি এলাকায়। তখন কিছু পণ্য ভারত থেকে আমদানির ওপর বাংলাদেশ সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু এখানের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ এমন প্রচার শুরু করে যেন ভারত থেকে সবকিছু আমদানিই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
কথায় বলে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। বাজারে আরও কয়েকটি দিন পেঁয়াজ চড়া দামেই কিনতে হবে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা যুক্তি দেখাবেন, দাম যখন বেশি ছিল তখন আমরা কিনে রেখেছি। কাজেই ভারত থেকে আমদানির সুযোগ মিললেও আমরা দাম কমাতে পারব না।
প্রকৃতপক্ষে দেশের অনেক পণ্যের বাজারই চলে গেছে ফটকা খেলায় অভ্যস্ত কিছু লোকের নিয়ন্ত্রণে। তারা দারুণ ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছে। কেউ তাদের টিকিটিও ধরতে পারে না। সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। বাস্তবে এর অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু তা ভাঙার জন্য সরকারের মধ্যে যে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার, তা অনুপস্থিত। পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কিছু লোক। তাদের দেখাদেখি খুচরা বিক্রেতারাও ভাবে_ আমরাও কেন সুযোগ নিই না। এ কারণে দেখা যায় এক বাজার থেকে আরেক বাজারে পণ্যের দামে হেরফের। এমনকি এক বাজারেও দোকানে দোকানে পার্থক্য। কয়েকদিন আগে মিল্ক ভিটার দুধ কিনতে গেলে দাম চাইল এক লিটার ৬০ টাকা। নির্ধারিত দামের চেয়ে আট টাকা কেন বেশি দেব, এ প্রশ্ন করায় সঙ্গে সঙ্গে উত্তর_ ঠিক আছে ৫৫ টাকা দেন। এটা ঘটেছে খুচরা দোকানে। দোকানি মনে করেছে, কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। যে ক্রেতা প্রশ্ন করে তাকে দোকানে যত কম সময় রাখা যায় ততই ভালো। পাইকারি ও খুচরা বাজারের এসব অনিয়ম সরকারের দেখার কথা। কিন্তু মনে হয়, ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ অবস্থানের কারণে তারাও অসহায়। তা ছাড়া সরকারের ভেতরেও যে রয়েছে ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী লবি। অনেক বড় ব্যবসায়ী জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। বিএনপিতেও রয়েছেন অনেক বড় ব্যবসায়ী। অনেকে বলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপিতে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অবস্থান আরও জোরালো। আওয়ামী লীগ সরকার অসাধু ব্যবসায়ীদের শায়েস্তা করতে না পারলে তাদের মওকা আরও বেশি হয়। এমনিতে দুই দলের মধ্যে মিল প্রায় নেই। কিন্তু দুই দলে যেসব ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা জনগণের পকেট কাটায় একাট্টা।
পেঁয়াজ থেকে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কত পকেট কেটেছেন তার হিসাব কেউ কি দেবে?
No comments