লক্ষ্মীপুরে বিএনপির মিছিলে যুবলীগের হামলা, নিহত ১

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পোদ্দার বাজারে গতকাল শনিবার রাতে বিএনপির মিছিলে হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় যুবলীগের কর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) নামের বিএনপির এক কর্মী।


এ ছাড়া গতকাল বাগেরহাট শহরে আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে হামলা চালিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল। ফরিদপুরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
লক্ষ্মীপুর: প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, হরতালের সমর্থনে রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার পোদ্দার বাজারে মিছিল বের করেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে মিছিলে হামলা চালান স্থানীয় যুবলীগের কর্মীরা। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন উপজেলার রশিদপুর গ্রামের মুকবুল আহমেদের ছেলে বিএনপির কর্মী জাহাঙ্গীর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। জামায়াতের আহত কর্মী মোস্তাফা কামালকে (৫০) গুরুতর অবস্থায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর পেশায় পল্লি চিকিৎসক। পোদ্দার বাজারে তাঁর দোকান রয়েছে।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাফিজ উল্লাহ দাবি করেন, ‘পোদ্দার বাজারে হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে দোকানদার (জাহাঙ্গীর) মারা গেছেন। এই ঘটনায় যুবলীগের কেউ জড়িত নন। হাফিজ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
যোগাযোগ করলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। পোদ্দার বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
বাগেরহাট: সদর মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, বিকেলে শহরের মুনিগঞ্জ এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের ওপর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুটি মিছিল মুখোমুখি হয়। উভয় মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের নয়টি গুলি ছোড়ে।
তবে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম বলেন, বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিএনপির কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে বের করা মিছিল থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা বিএনপির কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে কয়েকটি গুলি ছোড়ে এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। কার্যালয় চত্বরে থাকা অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার পর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হন বলে অভিযোগ করেন সালাম।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ মোজামেঞ্চল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মে দিবস পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ একটি মিছিল বের করে। পুলিশ পাহারায় মিছিলটি মুনিগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে বিএনপির কার্যালয় থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হয়।
ফরিদপুর: জেলার মধুখালীতে গতকাল পুলিশের বাধায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া গতকাল ফরিদপুর শহরের আলীপুরের বাড়ি থেকে শহর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মাহাবুবকে আটক করেছে পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.