সংবর্ধনা বনাম পরীক্ষা by একরামুল হক শামীম
প্রভাবশালী নেতা, মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনার নামে স্কুল বন্ধ রাখা কিংবা পরীক্ষা স্থগিত রাখার ধারা নিয়ে অনেক ধরনের সমালোচনা হয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের রোদের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে সংবর্ধনা দেওয়া রীতি কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার।
বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। টক শোর আয়োজনেও আলোচকরা সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সংবর্ধনা দেওয়ার রীতি পাল্টায়নি। এখনও সেই পুরনো ধারায় সংবর্ধনা দেওয়া চলছে। ধুলোময় রাস্তার দু'ধারে শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কখন সেই কাঙ্ক্ষিত ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি আসবেন, আর কখন ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে সংবর্ধনা জানানো হবে তারই জন্য অপেক্ষা চলে। কখনও কখনও সকাল পেরিয়ে বিকেল হয়ে যায়। হয়তো কোনো কারণে ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি পেঁৗছাতে দেরি করছেন, তাই বলে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার প্রস্তুতিতে দেরি করা চলবে না। রাস্তার দু'ধারে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে তাদের। লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে একটু সমস্যা হলেই শিক্ষকের কাছ থেকে বকা শুনতে হবে। এই যখন অবস্থা তখন নানামুখী সমালোচনার পরে, অভিভাবক মহলের দাবির মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সংবর্ধনা বা পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। তাছাড়া সংবর্ধিত বা পরিদর্শনকারী ব্যক্তির প্রতি সম্মান দেখাতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানোও যাবে না। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই প্রজ্ঞাপন কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকছে, প্রয়োগের মুখ দেখছে না। প্রজ্ঞাপন অমান্য করে স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার লাইনে দাঁড় করিয়ে দিলে কী হবে, দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা স্পষ্ট নয়। ফলে ক্ষমতাবানদের সংবর্ধনা দেওয়ার ইঁদুর দৌড় চলছেই।
সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবর্ধনার খবর বেশ আলোচনায় এসেছে। এবার কেবল স্কুল বন্ধ রেখেই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়নি, বরঞ্চ সংবর্ধনার স্বার্থে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের যখন প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা, তখন তাদের সাজগোজ করে একজন প্রতিমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এভাবে শিক্ষার্থীরা রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে থেকে সংবর্ধনা প্রদান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রাঙ্গাবালীতে। সেখানে ১১টি স্কুল-মাদ্রাসার দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষা চলছিল। স্কুলে বাংলা দ্বিতীয়পত্র আর মাদ্রাসায় আরবি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সংবর্ধনার দিনে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার বদলে দিলেন সংবর্ধনা। বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় গুণীজনকে সংবর্ধনা জানিয়ে 'মানপত্র' লেখার প্রশ্ন আসে। সে ক্ষেত্রে প্রতিমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে কেউ কেউ বলতে পারেন, শিক্ষার্থীরা এতে করে ব্যবহারিক জ্ঞান পেল। এ কথার উল্টোপিঠে এও বলা সম্ভব, শিক্ষার্থীরা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে হাসিমুখে সংবর্ধনা দেওয়া শিখেছে। কিন্তু ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ক্ষমতাবানদের জন্য সংবর্ধনা আয়োজন করা কোনোভাবেই সুখকর বিবেচনা হতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা এই ধরনের সংবর্ধনা আয়োজনের ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী থাকে। এসব অতি উৎসাহী নেতাদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি যে ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি সংবর্ধনা নিতে যাচ্ছেন তারও সচেতন হওয়া উচিত।
সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবর্ধনার খবর বেশ আলোচনায় এসেছে। এবার কেবল স্কুল বন্ধ রেখেই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়নি, বরঞ্চ সংবর্ধনার স্বার্থে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের যখন প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা, তখন তাদের সাজগোজ করে একজন প্রতিমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এভাবে শিক্ষার্থীরা রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে থেকে সংবর্ধনা প্রদান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রাঙ্গাবালীতে। সেখানে ১১টি স্কুল-মাদ্রাসার দ্বিতীয় সাময়িকী পরীক্ষা চলছিল। স্কুলে বাংলা দ্বিতীয়পত্র আর মাদ্রাসায় আরবি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সংবর্ধনার দিনে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার বদলে দিলেন সংবর্ধনা। বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় গুণীজনকে সংবর্ধনা জানিয়ে 'মানপত্র' লেখার প্রশ্ন আসে। সে ক্ষেত্রে প্রতিমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে কেউ কেউ বলতে পারেন, শিক্ষার্থীরা এতে করে ব্যবহারিক জ্ঞান পেল। এ কথার উল্টোপিঠে এও বলা সম্ভব, শিক্ষার্থীরা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে হাসিমুখে সংবর্ধনা দেওয়া শিখেছে। কিন্তু ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ক্ষমতাবানদের জন্য সংবর্ধনা আয়োজন করা কোনোভাবেই সুখকর বিবেচনা হতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা এই ধরনের সংবর্ধনা আয়োজনের ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী থাকে। এসব অতি উৎসাহী নেতাদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি যে ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি সংবর্ধনা নিতে যাচ্ছেন তারও সচেতন হওয়া উচিত।
No comments