মোহামেডান ০: ১ কক্স সিটি-মোহামেডানের কক্স সিটি-লজ্জা

মাত্রই আগের ম্যাচে তাদের ১০ গোলে হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। দলটিতে কোনো বিদেশি খেলোয়াড় নেই, চুক্তিবদ্ধ কোচও নেই। কক্সবাজারের কিছু উৎসাহী ক্রীড়াপ্রেমীর গঠন করা দলটির যাত্রাই শুরু দিন কয়েক আগে। এই কক্স সিটিই কাল তাদের ছোট্ট ইতিহাসে বিশাল এক অঘটন ঘটিয়ে ফেলল। হারিয়ে দিল ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানকে। কক্স সিটির যাত্রা শুরুর মাত্রই তৃতীয় ম্যাচে কমলাপুর স্টেডিয়ামে মোহামেডান-বধের নায়ক সাইফ উদ্দিন। ৪২ মিনিটে


জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন তিনি। সিরাজুলের ক্রস থেকে অরক্ষিত অবস্থায় হেড করে সাইফ ভেঙে দেন মোহামেডান সমর্থকদের বুক। বড় দলের বিপক্ষে এটিই তাঁর ক্যারিয়ারে প্রথম গোল। এই গোল খেয়ে ব্যথিত মোহামেডান শিবির হতবাকও কম নয়। আগের ম্যাচে গোল-বন্যায় ভেসে যাওয়া একটি দলই কি না তাদের জালে বল জড়াল আগে।
তবে ম্যাচে ফেরার জন্য বাকি ৪৮ মিনিট কাজে লাগাতে পারেনি মোহামেডান। দ্বিতীয়ার্ধে গোটা চারেক সুযোগ এলেও সবই নষ্ট হয়েছে তাদের স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায়।
এসব দেখে নিজেদের আর ঠিক রাখতে পারেনি মোহামেডানের কিছু সমর্থক। বিরতির সময় ২০-২৫ জন উত্তেজিত সমর্থক ভিআইপি গ্যালারি ছেড়ে উঠে আসে প্রেসবক্সে। সেখানে খেলা দেখছিলেন মোহামেডানের নতুন কমিটির কর্মকর্তারা। অবস্থা বেগতিক দেখে টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ছাইদ হাসান (কানন) আগেই নেমে যান নিচে। ঘেরাও হয়ে পড়েন ক্লাবটির অন্যতম পরিচালক সারোয়ার হোসেন। পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা গ্যালারি থেকে ডাগ-আউটে ছুড়তে থাকে পানির বোতল। সঙ্গে গালি-বৃষ্টি। শেষতক পুলিশ সামাল দেয় পরিস্থিতি। উত্তেজিত সমর্থকদের কথা, ‘আমরা এমন মোহামেডান দেখতে চাই না।’
প্রথমার্ধ শেষে ডাগ-আউটেই বসে থাকতে হয়েছে খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের। পুলিশ তাঁদের ড্রেসিংরুমে পাঠানোর ঝুঁকি নেয়নি। মূল প্রবেশদ্বারে লাগিয়ে দেওয়া হয় তালা। আগের ম্যাচ শেষে কোচ এমেকা ইউজিগো সমর্থকদের বলেছেন ‘ইডিয়ট’। এটা আগুনে ঘি ছিটিয়েছে আরও।
ম্যাচের প্রথমার্ধে মোহামেডানকে চিনতে হয়েছে জার্সি দেখে। নাইজেরিয়ান ফুটবলার চিবুইক, ডেভিড, উইলকক্স, ওচেনডোরাদের খেলা ছিল একেবারেই সাদামাটা। একটাই ছিল আক্রমণ। মাঝমাঠ ছিল অগোছালো। উল্টো ছোট ছোট পাসে কক্স সিটি ব্যতিব্যস্ত করে রাখে মোহামেডানকে।
তারই পুরস্কার এই জয়। গত মৌসুমে ফেনী সকারের হয়ে খেলা গোলদাতা সাইফের কাছেও অবিশ্বাস্য ঠেকেছে জয়টা, ‘আমরা কল্পনাও করিনি, মোহামেডানকে হারাব। এটা অবিশ্বাস্য। আমরা এখন কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন দেখছি।’
ওদিকে এমেকার কণ্ঠে হতাশা, ‘এই হারে খুবই হতাশ আমি। আপনারা জানেন ক্লাবে অনেক সমস্যা। আমি একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। এই দলটা আমি আসার অনেক আগেই গড়া হয়েছে। কর্মকর্তারা দল গড়ার চেয়ে সে সময় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আমার কী করার আছে?’

No comments

Powered by Blogger.