ইভিএমে আস্থা বাড়ছে-জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের প্রস্তুতি by নিয়াজ মোর্শেদ
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে আতঙ্ক কেটে গেছে ভোটারদের মন থেকে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছে এবং ৭৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন শেষে ভোটার, মেয়র হিসেবে নির্বাচিত বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরাজিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আফজল খান ইভিএম নিয়ে কোনো অভিযোগ জানাননি। ইভিএমের ত্রুটি দেখাতে পারেননি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার এবং নির্বাচন
পর্যবেক্ষকরা। স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমের কার্যকারিতা পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তী সব নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে।
বিজয়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু গতকাল শুক্রবার সমকালকে বলেন, ইভিএমে ফল কারচুপির আশঙ্কা থাকলেও তা হয়নি। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন এবং পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিতে পেরেছেন। তিনি নিজেও নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন বলে জানান। ইভিএমের যাত্রা শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের জামালখান থেকে। এরপর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ব্যবহৃত হয়। এবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। আগামীতে নরসিংদী পৌর মেয়র উপনির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কুসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে আধঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রভিত্তিক ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম ব্যবহারের কারণে একটি কেন্দ্রেও ব্যালট পেপার বা ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি, ভোটারদের একটি ভোটও নষ্ট হয়নি। কুসিক সাফল্যের পর নির্বাচন কমিশন এবং সুশীল সমাজ মনে করছে, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে সব দ্বিধা-সংশয় দূর হবে।
গত বছর ৭ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের আগে স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে এর কার্যকারিতা প্রমাণ করতে মত দেয়। কুসিক
নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সমকালকে বলেন, ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষের ভোট দেওয়া, নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি না হওয়া, সব বয়সের ও নারী-পুরুষ সবার ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত ইভিএম ব্যবহার সফল হয়েছে। মানুষ এ প্রযুক্তিকে গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ফল দেরিতে ঘোষণার নামে ফল পাল্টানো বা বারবার ভোটগণনার নামে সময় পার করার সুযোগ ইভিএমে নেই।
ইভিএমের দেখভালকারী বুয়েটের আইআইসিটি পরিচালক অধ্যাপক লুৎফুল কবীর বলেন, কুসিক নির্বাচনে বৃদ্ধ এবং নারী ছাড়া আর কারও ভোট দিতে অসুবিধা হয়নি। মূল নির্বাচনের আগে কিছু প্রশিক্ষণ ভোটের আয়োজন করলে সে সমস্যাও দূর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দূরের কেন্দ্রে ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইসি কর্মকর্তাদের ল্যাপটপের মাধ্যমে বা কয়েকটি কেন্দ্রের জন্য একটি উপকেন্দ্রে ল্যাপটপে ইন্টারনেটের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অল্প সময়েই প্রাথমিক ফল পেঁৗছে দেওয়া সম্ভব। এটা হলে আরও দ্রুত ফল ঘোষণা করা যাবে। কুমিল্লায় ইভিএম সফল হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যবহারের পথ সুগম হবে বলে মনে করেন তিনি। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে ইভিএমে ফল পাল্টে দেওয়া সম্ভব_ এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি মেশিন আলাদা। একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো সংযোগ নেই। এটি চলে ব্যাটারির মাধ্যমে। তাই কোনোভাবেই ফল পাল্টে দেওয়া সম্ভব নয়।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সমকালকে বলেন, এটা প্রমাণিত, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফল ঘোষণা করা যায়। ইভিএম নিয়ে বিএনপির বিরোধিতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কুসিক নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীসহ সবাই বলেছেন, ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপি বা অনিয়ম করা সম্ভব নয়। তাই আর বিতর্কের সুযোগ নেই। নির্বাচনকে সহজ করতে যেমন প্রয়োজন ছবিসহ ভোটার তালিকা, তেমনি এই ইভিএম। আগামী নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমেই হবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার সমকালকে বলেন, ইভিএমকে মানুষ নেতিবাচক হিসেবে নেয়নি। সবাই উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে এটি আরও ব্যবহার করা যায়। তবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যবহারের আগে ঐকমত্য প্রয়োজন। কেননা সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও রাজনৈতিক দলগুলো বলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি। সেক্ষেত্রে ইভিএম তাদের জন্য একটা হাতিয়ার হতে পারে। তিনি বলেন, যারা ইভিএম নিয়ে বিরোধিতা করছেন তারা চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অসুবিধা এবং এর দুর্বলতা চিহ্নিত করে দেখাতে পারেননি। ইভিএম নিয়ে বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করলে হবে না।
কুসিক নির্বাচনে শতভাগ সফলতার পর এবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি আরও জোরশোরে নেওয়া যায় বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না নিয়ে পরবর্তী কমিশনের ওপর সে ভার দেওয়ার পক্ষে বর্তমান কমিশন। তবে নতুন কমিশন ইভিএমের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে ইভিএম তৈরিতে সময়ের অভাব যেন বিঘ্ন ঘটাতে না পারে তাই আগে থেকেই প্রায় আড়াই লাখ ইভিএম তৈরি করে রাখতে চান কমিশনাররা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে ইভিএম তৈরি করা হচ্ছে। ইসি তাদের দ্রুত ইভিএম তৈরির কার্যাদেশ দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তা তৈরি করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রামে মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মনজুর আর কুমিল্লায় হলেন সাক্কু। তাদের কেউই ইভিএমের বিরুদ্ধে বলেননি; কিন্তু নাসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় ইভিএম সম্পর্কে ধারণাই নিতে পারেননি বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার।
এই প্রথম দেশের কোনো নির্বাচনে ভোটাররা কাগজ ব্যবহার না করে ভোট দিলেন। ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রতীকে সিল মারার পর জটিল ভাঁজ পদ্ধতির বালাই ছিল না এ নির্বাচনে। শুধু একটি বোতামে চাপ দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৭২ জন। প্রতিটি ভোটই পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে গেছে।
কুসিক নির্বাচনের এক দিন পর রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল বাতেন সমকালকে বলেন, ব্যালট পেপারের তুলনায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হলে তা ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের জন্য সুবিধাজনক হয়।
কুসিকের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রশিদ মিয়া সমকালকে বলেন, নির্বাচনে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭২ ভোটার মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে ভোট দিয়েছেন। ব্যালট পেপার ব্যবহার হলে ৩ লাখ ৮১ হাজার ২১৬টি ব্যালট পেপার গুনতে সারারাত পার হয়ে যেত। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৪২ হাজার ভোটার ভোট দেননি। কিন্তু ইসিকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬০৩টি ব্যালট পেপার ছাপাতে হতো। বাড়তি খরচ থেকে বেঁচে গেল সরকার।
কুসিকে ভোটগ্রহণ বিকেল ৪টায় শেষ হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রে ফল ঘোষণা করা হয় এবং সাড়ে ৫টা থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফল পেঁৗছতে শুরু করে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফল ঘোষণা শুরু হয়ে ৬৫টি কেন্দ্রের মেয়র পদের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টায়। রাত ১০টার মধ্যে কাউন্সিলরদের চূড়ান্ত ফল ঘোষণাও শেষ হয়।
বিজয়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু গতকাল শুক্রবার সমকালকে বলেন, ইভিএমে ফল কারচুপির আশঙ্কা থাকলেও তা হয়নি। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন এবং পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিতে পেরেছেন। তিনি নিজেও নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছেন বলে জানান। ইভিএমের যাত্রা শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের জামালখান থেকে। এরপর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ব্যবহৃত হয়। এবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। আগামীতে নরসিংদী পৌর মেয়র উপনির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কুসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে আধঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রভিত্তিক ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম ব্যবহারের কারণে একটি কেন্দ্রেও ব্যালট পেপার বা ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি, ভোটারদের একটি ভোটও নষ্ট হয়নি। কুসিক সাফল্যের পর নির্বাচন কমিশন এবং সুশীল সমাজ মনে করছে, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে সব দ্বিধা-সংশয় দূর হবে।
গত বছর ৭ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহারের আগে স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে এর কার্যকারিতা প্রমাণ করতে মত দেয়। কুসিক
নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সমকালকে বলেন, ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষের ভোট দেওয়া, নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি না হওয়া, সব বয়সের ও নারী-পুরুষ সবার ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত ইভিএম ব্যবহার সফল হয়েছে। মানুষ এ প্রযুক্তিকে গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ফল দেরিতে ঘোষণার নামে ফল পাল্টানো বা বারবার ভোটগণনার নামে সময় পার করার সুযোগ ইভিএমে নেই।
ইভিএমের দেখভালকারী বুয়েটের আইআইসিটি পরিচালক অধ্যাপক লুৎফুল কবীর বলেন, কুসিক নির্বাচনে বৃদ্ধ এবং নারী ছাড়া আর কারও ভোট দিতে অসুবিধা হয়নি। মূল নির্বাচনের আগে কিছু প্রশিক্ষণ ভোটের আয়োজন করলে সে সমস্যাও দূর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দূরের কেন্দ্রে ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইসি কর্মকর্তাদের ল্যাপটপের মাধ্যমে বা কয়েকটি কেন্দ্রের জন্য একটি উপকেন্দ্রে ল্যাপটপে ইন্টারনেটের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অল্প সময়েই প্রাথমিক ফল পেঁৗছে দেওয়া সম্ভব। এটা হলে আরও দ্রুত ফল ঘোষণা করা যাবে। কুমিল্লায় ইভিএম সফল হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যবহারের পথ সুগম হবে বলে মনে করেন তিনি। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে ইভিএমে ফল পাল্টে দেওয়া সম্ভব_ এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি মেশিন আলাদা। একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো সংযোগ নেই। এটি চলে ব্যাটারির মাধ্যমে। তাই কোনোভাবেই ফল পাল্টে দেওয়া সম্ভব নয়।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সমকালকে বলেন, এটা প্রমাণিত, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফল ঘোষণা করা যায়। ইভিএম নিয়ে বিএনপির বিরোধিতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কুসিক নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীসহ সবাই বলেছেন, ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপি বা অনিয়ম করা সম্ভব নয়। তাই আর বিতর্কের সুযোগ নেই। নির্বাচনকে সহজ করতে যেমন প্রয়োজন ছবিসহ ভোটার তালিকা, তেমনি এই ইভিএম। আগামী নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমেই হবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার সমকালকে বলেন, ইভিএমকে মানুষ নেতিবাচক হিসেবে নেয়নি। সবাই উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে এটি আরও ব্যবহার করা যায়। তবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যবহারের আগে ঐকমত্য প্রয়োজন। কেননা সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও রাজনৈতিক দলগুলো বলে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি। সেক্ষেত্রে ইভিএম তাদের জন্য একটা হাতিয়ার হতে পারে। তিনি বলেন, যারা ইভিএম নিয়ে বিরোধিতা করছেন তারা চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অসুবিধা এবং এর দুর্বলতা চিহ্নিত করে দেখাতে পারেননি। ইভিএম নিয়ে বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করলে হবে না।
কুসিক নির্বাচনে শতভাগ সফলতার পর এবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি আরও জোরশোরে নেওয়া যায় বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না নিয়ে পরবর্তী কমিশনের ওপর সে ভার দেওয়ার পক্ষে বর্তমান কমিশন। তবে নতুন কমিশন ইভিএমের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে ইভিএম তৈরিতে সময়ের অভাব যেন বিঘ্ন ঘটাতে না পারে তাই আগে থেকেই প্রায় আড়াই লাখ ইভিএম তৈরি করে রাখতে চান কমিশনাররা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে ইভিএম তৈরি করা হচ্ছে। ইসি তাদের দ্রুত ইভিএম তৈরির কার্যাদেশ দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তা তৈরি করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রামে মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মনজুর আর কুমিল্লায় হলেন সাক্কু। তাদের কেউই ইভিএমের বিরুদ্ধে বলেননি; কিন্তু নাসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় ইভিএম সম্পর্কে ধারণাই নিতে পারেননি বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার।
এই প্রথম দেশের কোনো নির্বাচনে ভোটাররা কাগজ ব্যবহার না করে ভোট দিলেন। ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রতীকে সিল মারার পর জটিল ভাঁজ পদ্ধতির বালাই ছিল না এ নির্বাচনে। শুধু একটি বোতামে চাপ দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৭২ জন। প্রতিটি ভোটই পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে গেছে।
কুসিক নির্বাচনের এক দিন পর রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল বাতেন সমকালকে বলেন, ব্যালট পেপারের তুলনায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হলে তা ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের জন্য সুবিধাজনক হয়।
কুসিকের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রশিদ মিয়া সমকালকে বলেন, নির্বাচনে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭২ ভোটার মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে ভোট দিয়েছেন। ব্যালট পেপার ব্যবহার হলে ৩ লাখ ৮১ হাজার ২১৬টি ব্যালট পেপার গুনতে সারারাত পার হয়ে যেত। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৪২ হাজার ভোটার ভোট দেননি। কিন্তু ইসিকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৬০৩টি ব্যালট পেপার ছাপাতে হতো। বাড়তি খরচ থেকে বেঁচে গেল সরকার।
কুসিকে ভোটগ্রহণ বিকেল ৪টায় শেষ হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রে ফল ঘোষণা করা হয় এবং সাড়ে ৫টা থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফল পেঁৗছতে শুরু করে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফল ঘোষণা শুরু হয়ে ৬৫টি কেন্দ্রের মেয়র পদের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টায়। রাত ১০টার মধ্যে কাউন্সিলরদের চূড়ান্ত ফল ঘোষণাও শেষ হয়।
No comments