২০তম জাতীয় টিকা দিবস আজ-সব শিশুকে টিকাকেন্দ্রে আনার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেছেন, ‘নগরের উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, তাঁদের শিশুদের টিকা খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। এটি নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের জন্য। কিন্তু জাতীয় টিকা দিবসে পাঁচ বছরের সব শিশুকে টিকা খাওয়াতে হবে। তাই আপনারা সবাই সচেতন হয়ে নিজ দায়িত্বে শিশুকে টিকাকেন্দ্রে আনুন।’ গতকাল শুক্রবার ২০তম জাতীয় টিকা দিবস উপলক্ষে মহাখালীতে ইপিআই ভবনের সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী


এ আহ্বান জানান। টিকাকেন্দ্রে শিশুকে খালি পেটে না এনে ভরা পেটে আনার জন্যও স্বাস্থ্যমন্ত্রী অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ২০তম জাতীয় টিকা দিবসে এবার পাঁচ বছরের কম বয়সী দুই কোটি ৪০ লাখ শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে। আজ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টিকাদানকেন্দ্র খোলা থাকবে। পৌর এলাকায় এবং সিটি করপোরেশনে কর্মজীবী নারীদের সুবিধার জন্য কেন্দ্রগুলো প্রয়োজনে রাতেও খোলা রাখা হবে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ২০তম জাতীয় টিকা দিবসের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এলাকার একটি শিশুও যদি পোলিও টিকা না খায় তবে তার এবং সবার জন্য পোলিও-আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। পোলিও একটি মারাত্মক ব্যাধি। পোলিও হয়ে গেলে ভালো হওয়ার পথ নেই। শিশুর অঙ্গহানি এমনকি মারাও যেতে পারে। দেশকে পোলিওমুক্ত রাখার লক্ষ্যেই টিকাদান দিবস পালিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, এবারও প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে দুই ফোঁটা করে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে। কোনো শিশু আগের জাতীয় টিকা দিবসে বা কোনোভাবে পোলিও টিকা খেয়ে থাকলেও তাকে আবার খাওয়াতে হবে। পোলিও টিকা খাওয়ানোর পাশাপাশি প্রথম পর্বে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে নীল রঙের ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং দ্বিতীয় পর্বে দুই থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। তবে কোনো শিশু গত চার মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে থাকলে এবং শিশু এক মাসের মধ্যে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে থাকলে তাদের খাওয়ানো যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ইপিআইর প্রোগ্রাম ম্যানেজার (আইসি) তাজুল ইসলাম এ বারী বলেন, এখনো বিশ্বের ১৬টি দেশে পোলিও রোগী আছে। পোলিও রোগ নির্মূলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পোলিও নির্মূলের সনদ দিচ্ছে না। কেননা, ভারতে এখনো একজন পোলিও রোগী আছে, ফলে অঞ্চলভিত্তিক মূল্যায়নে পিছিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব হুমায়ুন কবীর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার সেফায়েত উল্লাহ এবং ইপিআই কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.