বিএনপির দাবি জনমতের প্রতিফলন :ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন আওয়ামী লীগের by অমরেশ রায় ও হাসান শিপলু
মহাজোট সরকারের তিন বছর পূর্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের জরিপে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসের চিত্র উঠে এলেও এসব জরিপের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, কাদের দিয়ে ও কাদের ওপর এ জরিপ চালানো হয়েছে_ সেটিই প্রশ্নবিদ্ধ। তা ছাড়া কেবল রাজধানী কিংবা কয়েকটি বড় শহরের ভিন্ন-মতাদর্শীদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের সার্বিক জনপ্রিয়তার মানদণ্ড বিচার করাটাও অযৌক্তিক। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল
বিএনপির দাবি, এসব জরিপে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা জনমতের সঠিক ও বাস্তব প্রতিফলন। তিন বছরে সরকার সবক্ষেত্রেই যে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে এসব জরিপের ফলেই তার
সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে।
সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জনগণের মূল্যায়ন জানতে সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে পৃথক জরিপ চালায়। গত ক'দিনে
এসব গণমাধ্যমের জরিপের ফল প্রকাশকালে দেখা যায়, এই তিন বছরে সরকার জনপ্রিয়তা হারালেও তুলনামূলকভাবে বিরোধী দলের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে সমকালকে দেওয়া পৃথক প্রতিক্রিয়ায় সরকারি ও বিরোধী দলের নেতারা পরস্পরবিরোধী অভিমত তুলে ধরেন। তবে অনেকে বলেছেন, সরকারের জনপ্রিয়তা কমলেও তা বিএনপির ঘরে যায়নি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, গণমাধ্যমের এসব জরিপ কাদের দিয়ে ও কাদের ওপর চালানো হয়েছে_ সেটা নিয়েই অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। ফলে এসব জরিপের ফলও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, এরপরও বলব_ এ ধরনের জরিপকে আমরা খারাপ চোখে দেখছি না। কেননা নানা বিশ্লেষণে যে কোনো সরকার বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্রের সরকারের জনপ্রিয়তা অনেক সময় ওঠানামা করতেই পারে। ফলে গণমাধ্যমের এসব জরিপে সমাজের যে অংশের মানুষের মতের প্রতিফলনই ঘটুক না কেন, সেটা সরকারের জন্য একটা ইঙ্গিতও বটে। এতে সরকারের কোনো ব্যর্থতা কিংবা ভুলত্রুটির বিষয় উঠে এসে থাকলে সরকারের পক্ষে সেগুলো সংশোধনের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। জরিপগুলোতে সরকারি কর্মকাণ্ডের সমালোচনা যেভাবেই আসুক না কেন সেটাকে বিবেচনায় নিয়ে ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী দিনগুলোতে সরকারের এগিয়ে যাওয়ার এক ধরনের ক্ষেত্রও গড়ে উঠেছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, গণমাধ্যমে যেসব জরিপের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কি-না, সেটা নিয়েই সন্দেহ থেকে যায়। কেননা রাজধানী ঢাকা কিংবা শহরকেন্দ্রিক গুটিকয়েক মানুষের, যারা ভিন্নমতাদর্শীও হতে পারেন, তাদের মতের ভিত্তিতে সরকারের সার্বিক জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বিচার করা সম্ভব নয়। সঠিক জনমতের প্রতিফলন পেতে হলে গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী দেশের অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে কৃষি ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের মত নিতে হবে।
তিনি বলেন, কৃষিনির্ভর এদেশের ৭০ শতাংশ কৃষিজীবী মানুষ এখনও সরকারের প্রতি যথেষ্ট সদয়। গত তিন বছরে বর্তমান সরকার কৃষির পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সবক্ষেত্রে যেভাবে মানুষকে সহযোগিতা দিয়েছে, তাতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ সরকারের প্রতি সন্তুষ্ট। দেশ-জাতির কল্যাণে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ ও সাফল্য বিচারে সরকারের প্রতি মানুষের অসন্তুষ্টি সৃষ্টির কোনো কারণও নেই। তাই শহরকেন্দ্রিক একাংশের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের জনপ্রিয়তা নিয়ে মন্তব্য করতে গেলে সেটা অযৌক্তিক হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণমাধ্যমের জরিপগুলোতে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা আওয়ামী লীগ ও সরকারের ব্যর্থতারই সুস্পষ্ট প্রমাণ। এতে জনমতের বাস্তব ও সঠিক প্রতিফলন ঘটেছে।
জরিপে কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা বলা হলেও সেগুলোর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক চিত্র আরও খারাপ। কৃষি, শিক্ষা ও বিদ্যুত খাতে সরকারের সাফল্যের কথা বলা হলেও তা বাস্তবভিত্তিক নয়। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সফলতাও নেই। কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে অনেকগুণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে চলছে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের বোঝা জনগণকে অনেকদিন বইতে হবে। গুপ্তহত্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিও ঘটছে ক্রমাগত। মানুষ তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চেয়ে সরকার বিরোধী দল দমনেই ব্যস্ত ছিল বেশি।
ফখরুলের দাবি, জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে, বিএনপির বর্তমান জনপ্রিয়তা তার চেয়েও অনেক বেশি। জনগণের পক্ষে কাজ করেই এ জনসমর্থন পাচ্ছেন তারা। দেশ ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপির আন্দোলনও গণদাবির সঙ্গেই সম্পৃক্ত।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, এসব জরিপে সরকারের জনপ্রিয়তায় ধস নামার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা সরকারের ব্যর্থতারই প্রমাণ। তিন বছরের শাসনামলে সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টায় দেশের সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চিত্রই এসব জরিপে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, জরিপে কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যের কথা বলা হলেও তা ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবই ফেলবে। উদাহরণস্বরূপ বিদ্যুতের ক্ষেত্রে উন্নতির কথা বলা হলেও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের ক্ষেত্রে সরকারকে যে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে তার বোঝাও দেশের মানুষকে আগামী এক যুগ বইতে হবে। কৃষিতে সাফল্যের কথা বলা হলেও কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে অনেক।
সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে।
সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জনগণের মূল্যায়ন জানতে সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে পৃথক জরিপ চালায়। গত ক'দিনে
এসব গণমাধ্যমের জরিপের ফল প্রকাশকালে দেখা যায়, এই তিন বছরে সরকার জনপ্রিয়তা হারালেও তুলনামূলকভাবে বিরোধী দলের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে সমকালকে দেওয়া পৃথক প্রতিক্রিয়ায় সরকারি ও বিরোধী দলের নেতারা পরস্পরবিরোধী অভিমত তুলে ধরেন। তবে অনেকে বলেছেন, সরকারের জনপ্রিয়তা কমলেও তা বিএনপির ঘরে যায়নি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, গণমাধ্যমের এসব জরিপ কাদের দিয়ে ও কাদের ওপর চালানো হয়েছে_ সেটা নিয়েই অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। ফলে এসব জরিপের ফলও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, এরপরও বলব_ এ ধরনের জরিপকে আমরা খারাপ চোখে দেখছি না। কেননা নানা বিশ্লেষণে যে কোনো সরকার বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্রের সরকারের জনপ্রিয়তা অনেক সময় ওঠানামা করতেই পারে। ফলে গণমাধ্যমের এসব জরিপে সমাজের যে অংশের মানুষের মতের প্রতিফলনই ঘটুক না কেন, সেটা সরকারের জন্য একটা ইঙ্গিতও বটে। এতে সরকারের কোনো ব্যর্থতা কিংবা ভুলত্রুটির বিষয় উঠে এসে থাকলে সরকারের পক্ষে সেগুলো সংশোধনের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। জরিপগুলোতে সরকারি কর্মকাণ্ডের সমালোচনা যেভাবেই আসুক না কেন সেটাকে বিবেচনায় নিয়ে ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী দিনগুলোতে সরকারের এগিয়ে যাওয়ার এক ধরনের ক্ষেত্রও গড়ে উঠেছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, গণমাধ্যমে যেসব জরিপের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কি-না, সেটা নিয়েই সন্দেহ থেকে যায়। কেননা রাজধানী ঢাকা কিংবা শহরকেন্দ্রিক গুটিকয়েক মানুষের, যারা ভিন্নমতাদর্শীও হতে পারেন, তাদের মতের ভিত্তিতে সরকারের সার্বিক জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বিচার করা সম্ভব নয়। সঠিক জনমতের প্রতিফলন পেতে হলে গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী দেশের অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে কৃষি ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের মত নিতে হবে।
তিনি বলেন, কৃষিনির্ভর এদেশের ৭০ শতাংশ কৃষিজীবী মানুষ এখনও সরকারের প্রতি যথেষ্ট সদয়। গত তিন বছরে বর্তমান সরকার কৃষির পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সবক্ষেত্রে যেভাবে মানুষকে সহযোগিতা দিয়েছে, তাতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ সরকারের প্রতি সন্তুষ্ট। দেশ-জাতির কল্যাণে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ ও সাফল্য বিচারে সরকারের প্রতি মানুষের অসন্তুষ্টি সৃষ্টির কোনো কারণও নেই। তাই শহরকেন্দ্রিক একাংশের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের জনপ্রিয়তা নিয়ে মন্তব্য করতে গেলে সেটা অযৌক্তিক হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণমাধ্যমের জরিপগুলোতে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা আওয়ামী লীগ ও সরকারের ব্যর্থতারই সুস্পষ্ট প্রমাণ। এতে জনমতের বাস্তব ও সঠিক প্রতিফলন ঘটেছে।
জরিপে কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা বলা হলেও সেগুলোর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক চিত্র আরও খারাপ। কৃষি, শিক্ষা ও বিদ্যুত খাতে সরকারের সাফল্যের কথা বলা হলেও তা বাস্তবভিত্তিক নয়। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সফলতাও নেই। কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে অনেকগুণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে চলছে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের বোঝা জনগণকে অনেকদিন বইতে হবে। গুপ্তহত্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিও ঘটছে ক্রমাগত। মানুষ তার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চেয়ে সরকার বিরোধী দল দমনেই ব্যস্ত ছিল বেশি।
ফখরুলের দাবি, জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে, বিএনপির বর্তমান জনপ্রিয়তা তার চেয়েও অনেক বেশি। জনগণের পক্ষে কাজ করেই এ জনসমর্থন পাচ্ছেন তারা। দেশ ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপির আন্দোলনও গণদাবির সঙ্গেই সম্পৃক্ত।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, এসব জরিপে সরকারের জনপ্রিয়তায় ধস নামার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা সরকারের ব্যর্থতারই প্রমাণ। তিন বছরের শাসনামলে সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টায় দেশের সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চিত্রই এসব জরিপে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, জরিপে কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যের কথা বলা হলেও তা ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবই ফেলবে। উদাহরণস্বরূপ বিদ্যুতের ক্ষেত্রে উন্নতির কথা বলা হলেও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের ক্ষেত্রে সরকারকে যে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে তার বোঝাও দেশের মানুষকে আগামী এক যুগ বইতে হবে। কৃষিতে সাফল্যের কথা বলা হলেও কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে অনেক।
No comments