স্যামসন চৌধুরীর মরদেহ এসেছে, আজ সমাহিত করা হবে

দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীকে আজ পাবনা শহরের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। এর আগে আতাইকুলার পৈতৃক নিবাসে এবং পাবনার স্কয়ার ফার্মায় শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হবে। গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া নয়টায় স্যামসন চৌধুরীর মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় কাকরাইলের সেন্ট ম্যারিস ক্যাথিড্রাল চার্চে। রাতে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ প্রার্থনা।


এতে স্যামসন এইচ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যসহ শুভানুধ্যায়ীরা যোগ দেন। প্রার্থনা সভা শেষে রাতে মরদেহ রাখা হয় স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘরে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোর সাড়ে চারটায় মরদেহ গাড়িতে করে পাবনার উদ্দেশে নেওয়া হবে। প্রথমে মরদেহ নেওয়া হবে পাবনার আতাইকুলায় পৈতৃক নিবাসে। সেখানে সম্মাননা জানানোর পর পাবনা শহরের স্কয়ার ফার্মা চত্বরে নেওয়া হবে।
১৯৫৮ সালে চার বন্ধু মিলে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড গড়ে তুলেছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। সময়ের পরিক্রমায় তাঁর স্কয়ার আজ দেশের বিশাল একটি শিল্পগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বাংলাদেশের শিল্প, কৃষি, সেবা, আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করেছেন। ফার্মাসিউটিক্যালস দিয়ে শুরু হলেও প্রসাধনসামগ্রী, টেক্সটাইল, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যমেও বিস্তৃত এখন স্কয়ার। বর্তমানে স্কয়ার শিল্পগোষ্ঠীর অধীনে ১৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ২৮ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে স্কয়ারের পণ্য। স্কয়ার গ্রুপের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় ৬১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
বিশিষ্ট এই শিল্পপতি সিঙ্গাপুরের র‌্যাফলস হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত রোগে বৃহস্পতিবার শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শোক: দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের এই অগ্রপথিকের মৃত্যুতে গতকাল ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, বিজিএমইএ, বেক্সিমকো, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি আন্দোলন, জাসদ, গণফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অনেক ব্যক্তি ও সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
শেষকৃত্য: স্যামসন এইচ চৌধুরীর মরদেহ গতকাল কাকরাইলে ক্যাথলিক চার্চে নেওয়া হয়। শেষকৃত্যানুষ্ঠান শুরু হয় রাত ১১টায়। শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এম আনিস উদ্ দৌলা, সাংসদ আমির হোসেন আমু ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও গীতিআরা সাফিয়া চৌধুরী, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, ব্যবসায়ী নেতা ফজলুল হক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।
এ ছাড়া স্যামসন চৌধুরীর তিন ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী, নাতি-নাতনি,ু পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, স্কয়ারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ এতে অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.