যে খবর নাড়া দেয়-মাত্র ১০ মিনিট
৪ জানুয়ারি প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় খবরটি ছাপা হয়েছে ছবিসহ। এক মা তাঁর মৃত সন্তানকে বুকে জড়িয়ে কাঁদছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের ঘরে ঢুকেছিলেন তিনি। আড়াই বছরের শিশু ইশরাতকে নিয়েই ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দরজার পাশে দাঁড়ানো এক নারী ও এক পুরুষ নিজেদের নিরাপত্তাকর্মী পরিচয় দিয়ে শিশুটিকে বাইরে রেখে যেতে বলে। মাত্র ১০ মিনিটই তো! মায়ের মনে কোনো ধরনের সন্দেহই জাগেনি।
কিন্তু এই ১০ মিনিট তাঁর জীবনে নিয়ে এল কারবালার হাহাকার। শিশুটি নেই দরজার পাশে। নেই নিরাপত্তারক্ষী নামের প্রতারকেরাও। চার ঘণ্টা পাগলের মতো সন্তানকে খুঁজতে খুঁজতে একসময় তিনি শুনতে পান, হাসপাতালের তৃতীয় তলার সিঁড়ির ধারে পড়ে আছে একটি শিশুর লাশ। শঙ্কিত মা সেখানে পৌঁছানোর পর নিজের শিশুকে চিনতে পারেন। তখন ইশরাতের ছোট্ট শরীরে প্রাণ নেই। শরীরের কোনো কোনো জায়গা থেঁতলানো, কোনো কোনো জায়গায় আঁচড়ের দাগ!
এ কথাগুলোই লেখা হয়েছে খবরে। যা লেখা হয়নি, তা হলো মা রোজিনা বেগমের অনুভূতি। আদরের সন্তানকে এভাবে হঠাৎ করে হারালে কেমন অনুভূতি হয় মানুষের, তা কি মা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবেন? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মী পরিচয়ে ওই দুজন কারা ছিল? কেন আড়াই বছরের একটি শিশুকে হত্যা করল তারা? প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া যাবে কি না জানি না, কিংবা পাওয়া গেলেও তা রোজিনা বেগমের জীবনে কোনো অর্থ বয়ে আনবে কি না জানি না। শুধু জানি, খবরের সঙ্গে ছাপা হওয়া ছবিটি আরও অনেক দিন কাউকে কাউকে তাড়া করে ফিরবে। কেউ কেউ নিজের সন্তানের ওই ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কায় শিউরে উঠবেন—একবার নয়, বারবার।
— জাহীদ রেজা নূর
এ কথাগুলোই লেখা হয়েছে খবরে। যা লেখা হয়নি, তা হলো মা রোজিনা বেগমের অনুভূতি। আদরের সন্তানকে এভাবে হঠাৎ করে হারালে কেমন অনুভূতি হয় মানুষের, তা কি মা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবেন? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মী পরিচয়ে ওই দুজন কারা ছিল? কেন আড়াই বছরের একটি শিশুকে হত্যা করল তারা? প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া যাবে কি না জানি না, কিংবা পাওয়া গেলেও তা রোজিনা বেগমের জীবনে কোনো অর্থ বয়ে আনবে কি না জানি না। শুধু জানি, খবরের সঙ্গে ছাপা হওয়া ছবিটি আরও অনেক দিন কাউকে কাউকে তাড়া করে ফিরবে। কেউ কেউ নিজের সন্তানের ওই ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কায় শিউরে উঠবেন—একবার নয়, বারবার।
— জাহীদ রেজা নূর
No comments