নাটকে সংলাপে মুক্তিযুদ্ধের নাট্যোৎসব by মামুন মিজানুর রহমান

বিজয়ের মাসের প্রথম দিন থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে শুরু হয়েছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের সংস্কৃতি উৎসব। স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান নিয়ে লিখেছেন মামুন মিজানুর রহমান অনেক দিন ধরেই শিল্পকলায় চলছে উৎসবের ঘনঘটা। গত কয়েক দিনে অনুষ্ঠিত হলো বেশ কয়েকটি নাট্যোৎসব। লোকোনাট্যদল আয়োজিত নাট্যোৎসব, বাংলাদেশ থিয়েটার আয়োজিত নাট্যোৎসবের পর পরই পয়লা


ডিসেম্বর শুরু হয়েছে মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী 'মুক্তিযুদ্ধের সংস্কৃতি উৎসব'। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর তিনটি হলেই চলছে এ উৎসব। এতে নাটক তো বটেই, রয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। পয়লা ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। যদিও বিকেল থেকেই জাতীয় নাট্যশালা চত্বরে এ উৎসবের অংশ হিসেবে গান-বাদ্য হয়ে আসছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাট্যজন আতাউর রহমান, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লিয়াকত আলী লাকী, আসাদুজ্জামান নূর, গোলাম কুদ্দুসসহ বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। উৎসব উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমী সেজেছে নতুন সাজে। জাতীয় নাট্যশালার লবি সেজেছে বাবুল বিশ্বাস সংগৃহীত মুক্তিযুদ্ধের নাটকের পোস্টার, স্মরণিকা ও নানা আলোকচিত্রে। এতে রয়েছে এ যাবৎ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটকগুলোর প্রামাণ্য দলিল। এসব নাটক নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনগুলো এ আয়োজনকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। এই প্রদর্শনী থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মঞ্চনাটকের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া সম্ভব।
উৎসবের প্রথম দিন মঞ্চস্থ হয় নাটক 'মুজিব মানে মুক্তি'। লিয়াকত আলী লাকীর রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটি পরিবেশন করে লোকোনাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী)। এ উৎসবে অনুষ্ঠিত হয় দুটি নাটকের ১০০তম প্রদর্শনী। ঢাকা থিয়েটারের নাটক 'বিনোদিনী'র শততম মঞ্চায়ন হয় ২ ডিসেম্বর জাতীয় নাট্যশালায়। বিনোদিনী দাসীর জীবনীভিত্তিক এ নাটকটি মঞ্চপাড়ায় বহুল সমাদৃত। সাইমন জাকারিয়া রচিত ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু নির্দেশিত একক এ নাটকে অভিনয় করেছেন মঞ্চকুসুম শিমুল ইউসুফ। শততম মঞ্চায়িত আরেকটি নাটক 'ঘুম নেই'। ৮ ডিসেম্বর জাতীয় নাট্যশালায় এ নাটকের প্রদর্শনী হয় বিপুল দর্শকের উপস্থিতিতে।
এ ছাড়া এ উৎসবে প্রদর্শিত অন্যান্য নাটকের মধ্যে ২ ডিসেম্বর কলকাতার অনিক নাট্যদল পরিবেশন করে 'তপতি'। ত্রিপুরার কালচারাল ক্যাম্পেইন ৫ ডিসেম্বর জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চায়ন করে 'কোর্টমার্শাল'। ঢাকার নাটকের মধ্যে রয়েছে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের 'সেইসব দিনগুলি', সময়ের 'ভাগের মানুষ', প্রাচ্যনাটের 'সার্কাস সার্কাস', শূন্যনের 'লাল জমিন', বুনন থিয়েটারের 'চাকা', থিয়েটার আর্ট ইফনিটের 'সময়ের প্রয়োজনে', শব্দনাট্য চর্চা কেন্দ্রের 'রাইফেল' এবং সুবচন নাট্য সংসদের 'মহাজনের নাও'। এ ছাড়া প্রতিদিন স্টুডিও থিয়েটারে প্রদর্শিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র, শিশুদলের নাটক ও মূকাভিনয়। ৮ ডিসেম্বর স্টুডিও থিয়েটারে পরিবেশিত হবে 'তমসা'। এ ছাড়া প্রতিদিন বিকেলে রয়েছে মুক্তমঞ্চে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

No comments

Powered by Blogger.