বন্ধুত্ব বিপদের সঙ্গে by স্যাম মাহিদ
বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে গেছেন বান্দরবানে। সবুজ পাহাড়ে ট্রেকিং, অদেখা জলপ্রপাত দেখার উত্তেজনা আর আবিষ্কারের রোমাঞ্চ। কিন্তু পথ ভুলে সব বদলে গেল আতঙ্কে। মশা আর পোকামাকড়ের উপদ্রব, পানীয় জলের অভাব, খাবার সংকট_একে একে সব বিপদই উপস্থিত। এখন উপায়? জীবন রক্ষার সহজ কিছু কৌশল জানা থাকলে খুব সহজেই উতরে যেতে পারবেন এসব বিপদ থেকে। সেই কৌশলগুলো সাধারণ মানুষকে জানানোর জন্যই ডিসকভারি
চ্যানেলের তিনটি 'সারভাইভাল রিয়ালিটি শো'। তিনটি অনুষ্ঠানের তিন সঞ্চালককে নিয়ে এই ধারাবাহিক আয়োজন। ডিসকভারি চ্যানেলে প্রতিদিন বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় প্রচারিত হচ্ছে 'ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড'। মানুষ ও প্রকৃতির এই টিকে থাকার লড়াইয়ে মানুষের পক্ষে লড়ছেন এডওয়ার্ড মাইকেল গ্রাইলস, যদিও পিতৃপ্রদত্ত নামটা ছোট করে 'বিয়ার' (ভালুক) করে ফেলেছেন তিনি। ধারাবাহিক আয়োজনের প্রথম পর্বে থাকছে তাঁকে নিয়ে ফিচার
বয়স যখন মাত্র এক সপ্তাহ, তখন থেকেই বড় বোন লারা তাঁকে ডাকতেন বিয়ার বলে। সেই বিয়ার নামটাই রীতিমতো অনুষ্ঠান করে পাকাপাকি করে নিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের নাগরিক জীবনের চেয়ে ভালুকের মতো বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোটাই যে তাঁর বেশি পছন্দের! ২০০৬ সালে প্রথম শুরু হয় বিয়ার গ্রাইলসের সারভাইভাল শো 'ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড'। গ্রাইলস ঘুরে বেড়িয়েছেন কানাডার রকি পর্বতমালা, পশ্চিম আমেরিকার উটাহ প্রদেশের ঊষর মরুভূমি, ফ্লোরিডার কুমিরবহুল এভারগেডস জলাভূমি, কেনিয়ায় সিংহের বিচরণভূমি, হাওয়াইয়ে জীবন্ত আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে তৈরি হওয়া আগ্নেয় দ্বীপ, কোস্টারিকার বৃষ্টি অরণ্যসহ আইসল্যান্ডের বরফের রাজ্য থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের জনহীন দ্বীপে। এভাবেই পৃথিবীর দুর্গম সব জায়গায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছেন গ্রাইলস, দেখিয়েছেন পানি বিশুদ্ধ করা, আগুন জ্বালানো, ফাঁদ পেতে শিকার ধরে খাবার সংগ্রহ করা, ভেলা বানানো, উদ্ধার সংকেত দেখানোর মতো জীবন বাঁচানোর অনেক কৌশল। আর এ জন্য বারবার তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছে মৃত্যুর। কখনো উন্মত্ত পাহাড়ি ঢল, মরুভূমির উত্তাপ আর ধূলিঝড়, হাঙর-কুমিরসহ ভয়াবহ অনেক প্রাণীর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন গ্রাইলস। প্রাণ বাঁচাতে খেয়েছেন এমন অনেক কিছু, সাধারণ জীবনে ঘেন্নায় যার কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, অনেক সময় রোমাঞ্চকর অনেক অভিযাত্রীর পথটাও বেছে নেন গ্রাইলস। ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সেনারা যেভাবে ভিয়েতকংদের বন্দিশালা থেকে পালাতেন, সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে ভিয়েতনামের পাহাড়ি নদী, সবুজ অরণ্যের ভেতর শুধু একটা ছুরি সম্বল করে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। হারিকেন ক্যাটালিনার আঘাতে ডুবে যাওয়া এক মাছ ধরা নৌকার নাবিকের বর্ণনা পত্রিকায় পড়ে গ্রাইলসও চেষ্টা করেছেন তাঁর মতো করে ঝড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে ফিরতে। কখনো আফ্রিকায়, কখনো দক্ষিণ আমেরিকায়, কখনো বা মেরু অঞ্চলে। প্রকৃতির বিরূপতার বিরুদ্ধে লড়াই করার কৌশল শেখাতে গ্রাইলস ছুটে গেছেন পৃথিবীর দূরতম প্রান্তে। বিপদের নেশা এমনই এক নেশা, যার মজাটা শুধু অভিযাত্রীরাই জানেন!
কে এই বিয়ার গ্রাইলস? কেন বিপদের মুখে তাঁর বারবার ছুটে চলা? উত্তরটা লুকিয়ে আছে তাঁর শৈশবে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলের নেতা স্যার মাইকেল গ্রাইলস ও ব্রিটিশ রাজপরিবারের আত্মীয় প্যাট্রিসিয়া ফোর্ডের ছেলে বিয়ার চাইলেই বেছে নিতে পারতেন আয়েশি জীবন। কিন্তু ছোটবেলায়, মাত্র আট বছর বয়সে বাবার কাছে পাহাড়ে চড়া শিখেছিলেন তিনি। পাহাড়ের ডাক শুনে ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন হিমালয়ে চড়ার। সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ হিসেবে মাত্র ২৩ বছর বয়সে হিমালয় জয় করেন বিয়ার। সামরিক বাহিনীতেও ছিলেন বিয়ার, যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্সের রিজার্ভ বাহিনী, ২১ রেজিমেন্টাল এয়ার সার্ভিস বাহিনীর সদস্য তিনি। এ ছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে জীবন ধারণের কৌশল শেখানোর প্রশিক্ষকের দায়িত্বও পালন করেন বিয়ার। এ ছাড়া তিনি একজন লাইসেন্সড স্কুবা ডাইভার, স্কাই ডাইভার, ইয়ট চালক, নিনজুতসু, কারাতে ও আন-আর্মড কমব্যাটসহ খালি হাতে আত্মরক্ষার কৌশলে বিশেষ পারদর্শী। স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিয়ার। সবচেয়ে কম বয়সে তাঁকে স্কাউট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান বানানো হয়েছিল। ডানপিটে এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে খুব ধার্মিক ও সাদাসিধে। তিন ছেলে জেস, মারমাডিউক ও হাকলবেরি ও তাদের মা শারা গ্রাইলসকে নিয়ে থাকেন টেমসের বুকে, তাঁদের নৌকাবাড়িতে। ১০০ বছরের পুরনো একটি মেরু অভিযানের জাহাজকে ঠিকঠাক করে নিয়ে সেখানেই বসবাস বিয়ার গ্রাইলসের।
বয়স যখন মাত্র এক সপ্তাহ, তখন থেকেই বড় বোন লারা তাঁকে ডাকতেন বিয়ার বলে। সেই বিয়ার নামটাই রীতিমতো অনুষ্ঠান করে পাকাপাকি করে নিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের নাগরিক জীবনের চেয়ে ভালুকের মতো বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোটাই যে তাঁর বেশি পছন্দের! ২০০৬ সালে প্রথম শুরু হয় বিয়ার গ্রাইলসের সারভাইভাল শো 'ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড'। গ্রাইলস ঘুরে বেড়িয়েছেন কানাডার রকি পর্বতমালা, পশ্চিম আমেরিকার উটাহ প্রদেশের ঊষর মরুভূমি, ফ্লোরিডার কুমিরবহুল এভারগেডস জলাভূমি, কেনিয়ায় সিংহের বিচরণভূমি, হাওয়াইয়ে জীবন্ত আগ্নেয়গিরির লাভা থেকে তৈরি হওয়া আগ্নেয় দ্বীপ, কোস্টারিকার বৃষ্টি অরণ্যসহ আইসল্যান্ডের বরফের রাজ্য থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের জনহীন দ্বীপে। এভাবেই পৃথিবীর দুর্গম সব জায়গায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছেন গ্রাইলস, দেখিয়েছেন পানি বিশুদ্ধ করা, আগুন জ্বালানো, ফাঁদ পেতে শিকার ধরে খাবার সংগ্রহ করা, ভেলা বানানো, উদ্ধার সংকেত দেখানোর মতো জীবন বাঁচানোর অনেক কৌশল। আর এ জন্য বারবার তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছে মৃত্যুর। কখনো উন্মত্ত পাহাড়ি ঢল, মরুভূমির উত্তাপ আর ধূলিঝড়, হাঙর-কুমিরসহ ভয়াবহ অনেক প্রাণীর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন গ্রাইলস। প্রাণ বাঁচাতে খেয়েছেন এমন অনেক কিছু, সাধারণ জীবনে ঘেন্নায় যার কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, অনেক সময় রোমাঞ্চকর অনেক অভিযাত্রীর পথটাও বেছে নেন গ্রাইলস। ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সেনারা যেভাবে ভিয়েতকংদের বন্দিশালা থেকে পালাতেন, সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে ভিয়েতনামের পাহাড়ি নদী, সবুজ অরণ্যের ভেতর শুধু একটা ছুরি সম্বল করে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। হারিকেন ক্যাটালিনার আঘাতে ডুবে যাওয়া এক মাছ ধরা নৌকার নাবিকের বর্ণনা পত্রিকায় পড়ে গ্রাইলসও চেষ্টা করেছেন তাঁর মতো করে ঝড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে ফিরতে। কখনো আফ্রিকায়, কখনো দক্ষিণ আমেরিকায়, কখনো বা মেরু অঞ্চলে। প্রকৃতির বিরূপতার বিরুদ্ধে লড়াই করার কৌশল শেখাতে গ্রাইলস ছুটে গেছেন পৃথিবীর দূরতম প্রান্তে। বিপদের নেশা এমনই এক নেশা, যার মজাটা শুধু অভিযাত্রীরাই জানেন!
কে এই বিয়ার গ্রাইলস? কেন বিপদের মুখে তাঁর বারবার ছুটে চলা? উত্তরটা লুকিয়ে আছে তাঁর শৈশবে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলের নেতা স্যার মাইকেল গ্রাইলস ও ব্রিটিশ রাজপরিবারের আত্মীয় প্যাট্রিসিয়া ফোর্ডের ছেলে বিয়ার চাইলেই বেছে নিতে পারতেন আয়েশি জীবন। কিন্তু ছোটবেলায়, মাত্র আট বছর বয়সে বাবার কাছে পাহাড়ে চড়া শিখেছিলেন তিনি। পাহাড়ের ডাক শুনে ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন হিমালয়ে চড়ার। সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ হিসেবে মাত্র ২৩ বছর বয়সে হিমালয় জয় করেন বিয়ার। সামরিক বাহিনীতেও ছিলেন বিয়ার, যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্সের রিজার্ভ বাহিনী, ২১ রেজিমেন্টাল এয়ার সার্ভিস বাহিনীর সদস্য তিনি। এ ছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে জীবন ধারণের কৌশল শেখানোর প্রশিক্ষকের দায়িত্বও পালন করেন বিয়ার। এ ছাড়া তিনি একজন লাইসেন্সড স্কুবা ডাইভার, স্কাই ডাইভার, ইয়ট চালক, নিনজুতসু, কারাতে ও আন-আর্মড কমব্যাটসহ খালি হাতে আত্মরক্ষার কৌশলে বিশেষ পারদর্শী। স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বিয়ার। সবচেয়ে কম বয়সে তাঁকে স্কাউট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান বানানো হয়েছিল। ডানপিটে এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে খুব ধার্মিক ও সাদাসিধে। তিন ছেলে জেস, মারমাডিউক ও হাকলবেরি ও তাদের মা শারা গ্রাইলসকে নিয়ে থাকেন টেমসের বুকে, তাঁদের নৌকাবাড়িতে। ১০০ বছরের পুরনো একটি মেরু অভিযানের জাহাজকে ঠিকঠাক করে নিয়ে সেখানেই বসবাস বিয়ার গ্রাইলসের।
No comments