সদানন্দের চিরবিদায়
আসমুদ্র হিমাচল কথাটা বোধহয় ক্লিশে শোনাবে এ ক্ষেত্রে। কারণ দেব আনন্দের মৃত্যুতে ভারতের সীমা অতিক্রম করে শোক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে বুকে জড়িয়েই তিনি ছড়িয়ে যাচ্ছিলেন অনাবিল বিনোদনের ফুলবৃষ্টি। কিন্তু হঠাৎ বজ্রপাতে থেমে গেল সব। রোমান্টিক অভিনয়ের অমোঘ টানে দীর্ঘ ৬৫ বছরের বেশি সময় ধরে দর্শককে যিনি টেনে এনেছেন রূপালি পর্দার সামনে, যার অভিনয় দেখার জন্য আজও মনে
তৃষ্ণা সদাজাগ্রত_ তাকে সময়ের টানে চলে যেতে হলো পৃথিবী থেকে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন বলিউডের চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দ। শাহরুখ খান বলেছেন, 'আমরা হারিয়ে ফেললাম অভিনয় জাদুর এক ফেরিওয়ালাকে।' সত্যিই ১৯৪৬ সালে 'হাম এক হ্যায়' ছবির মাধ্যমে বলিউডে বর্ণিল পথচলা শুরুর পর তিনি ফেরি করে বেরিয়েছেন অভিনয়ের জাদু। একেবারে শুন্য থেকে শুরু করে তিনি পেঁৗছেছিলেন খ্যাতির শিখরে। তৈরি করেছিলেন এক নিজস্ব অননুকরণীয় ঘরানা। ১৯৪৭ সালে যখন 'জিদ্দি' মুক্তি পেল ততদিনে বলিউড পেয়ে গেছে বলিউডের সবচেয়ে রোমান্টিক নায়ককে। কিছুদিন পরেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা নবকেতন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মস। যত বয়সই হোক না কেন নিজেকে নায়ক ছাড়া আর কিছু ভাবতে রাজি ছিলেন না সদানন্দ। তিনি বলতেন, 'নিজেকে নায়ক না ভাবতে পারলে আর নায়ক হওয়া কিসের!' নিজস্ব চুলের স্টাইল, হাঁটার ভঙ্গি, ঘুম ঘুম চোখ সবকিছু দিয়েই নিজেকে আলাদাভাবে চিনিয়েছিলেন। দীর্ঘ কর্মব্যস্ত জীবনে তিনি ৩০টি ছবি প্রযোজনা করেছেন আর ১৯টি ছবি পরিচালনার গুরুভার তুলে নিয়েছিলেন কাঁধে। নিজের অভিনয়ের ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ছবির সেঞ্চুরি। এর মধ্যে 'হাম দোনো' [১৯৬১] এবং 'গাইড' [১৯৬৬], 'হরে রাম হরে কৃষ্ণ' প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুগ্ধ করেছে। সেরা অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ারসহ জীবনে যে কত পুরস্কার পেয়েছেন তার হিসাব নেই। ২০০১ সালে ভারত সরকার তাকে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার 'পদ্মভূষণে' ভূষিত করে। পরের বছরই তিনি পান 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কার। আজ দেব আনন্দের মৃত্যুতে শোকাহত সবাই। আমির খান বলেন, 'দেব সাহেব পরবর্তী সব প্রজন্মের জন্য এক আইকন।'
চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দ ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন রোমান্টিক। আত্মজীবনী 'রোমান্সিং উইথ লাইফ'-এ সেকথা অবলীলায় জানিয়েছেন। তিনি বলে গেছেন, 'আমি কখনও পেছনে তাকাই না। যতদিন বেঁচে থাকব চলচ্চিত্র তৈরি আর সেগুলোতে অভিনয়ই হবে আমার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা।'
চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দ ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন রোমান্টিক। আত্মজীবনী 'রোমান্সিং উইথ লাইফ'-এ সেকথা অবলীলায় জানিয়েছেন। তিনি বলে গেছেন, 'আমি কখনও পেছনে তাকাই না। যতদিন বেঁচে থাকব চলচ্চিত্র তৈরি আর সেগুলোতে অভিনয়ই হবে আমার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা।'
No comments