আরেকটি ফুটবল ট্র্যাজেডির পর... by সনৎ বাবলা
নেপাল সেমিফাইনালের দুয়ার খুলে দিয়েছিল পাকিস্তানের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে। সেই খোলা দুয়ার পেয়েও বাংলাদেশ পারেনি সাফের সপ্তম আসরে সেমিফাইনালে প্রবেশ করতে। শেষ ম্যাচে পরশু মালদ্বীপের কাছে ৩-১ গোলে হেরে তৃতীয়বারের মতো করুণ ও লজ্জাকর বিদায় হয়েছে সাফ সভাপতির দলের।\সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের প্রত্যাশা ছিল, বাংলাদেশ অন্তত ফাইনালে খেলবে। কিন্তু এই দলকে দেখে মনে হলো, আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে
এসেছে দিল্লিতে। চালচুলোর ঠিক নেই, কোচের অবিরাম পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভয়ে কম্পমান এক দল। আক্রমণের মুখে পড়লেই কেঁপে উঠছে তার ডিফেন্স, খুলে যাচ্ছে 'বাংলাদেশ গেট'। ১৭ মিনিটের ভেতর দুটো উইং অ্যাটাক এবং দুটো গোল। ছয় মিনিটে ওমর এবং ১৭ মিনিটে আশফাক ঢোকেন বাংলাদেশের বাঁ প্রান্ত ধরে, দুবারই বডিডজে ধরাশায়ী লেফট-ব্যাক রেজাউল, শেষবারে সঙ্গী হয়েছেন সুজনও। এরপর ক্রস এবং আহমেদ তারিকের অনায়াস দুটো গোল। শুরু হতে না হতেই বাংলাদেশের ম্যাচ শেষ, ম্যাচে ফেরার জন্য আরো ৭২ মিনিট সময় থাকলেও সংগতি নেই। গোল করবে কারা? মাঝমাঠে গোলের সুযোগটা কে তৈরি করে দেবে?
তবে চেষ্টা ছিল। মিডফিল্ডার মামুনুলের অনুপস্থিতিতে তরুণ শাহেদ ও ইমন বাবু চেষ্টা করেছেন মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করতে। দুই গোল খাওয়ার পর সেখানে আধিপত্য বজায় রাখলেও এক গোলের বেশি শোধ করা যায়নি। ৩০ মিনিটে চমৎকার গোলটি আসে শাহেদের পা থেকে। মিঠুনের শর্ট কর্নার নাসিরের পা ঘুরে তাঁর কাছে যেতেই এই তরুণ মিডফিল্ডার গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল কোনাকুনি প্লেসিং করে ব্যবধান কমান। টুর্নামেন্টে প্রথম গোলের মুখ দেখে দলের ভেতর একটু আত্মবিশ্বাসের সঞ্চারও হয়েছে বৈকি। সুবাদে তারা আরো কয়েকটা ভালো আক্রমণ করেছে, কিন্তু মালদ্বীপ ডিফেন্সের লিড ধরে রাখার প্রহরা টপকাতে পারেনি। গোলের জন্য মরিয়া হতে গিয়ে উল্টো আশফাকের কাউন্টার অ্যাটাকে ৭০ মিনিটে হজম করেছে তৃতীয় গোল। ম্যাচ জয়ের চাবি ঘুরিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে পড়েছেন মালদ্বীপের হাঙ্গেরিয়ান কোচ স্তেফান উর্বানী। ওদিকে বাংলাদেশের কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কি অনবরত চেঁচিয়ে যাচ্ছেন সাইডলাইন থেকে।
তাতে কোনো লাভ তো হয়নি, উল্টো নাকি ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ ডিফেন্ডার আরিফুল ইসলামের দাবি, 'আমাদের ফুটবল সেন্স আছে, খেলতেও জানি। কিন্তু কোচের চেঁচামেচির জন্য স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারি না আমরা। একটা কোচ পুরো ৯০ মিনিট চিৎকার করলে খেলোয়াড়রা ভয়ে থাকে।' ভয়টা হলো বাদ পড়ার, কোচের নির্দেশনার একটু এদিক-ওদিক হলেই পরের ম্যাচে একাদশের বাইরে চলে যেতে হয়। গোলদাতা শাহেদ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ভালো খেলার পরও একবার ডিফেন্সে নামতে পারেননি বলেই বাদ পড়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। মালদ্বীপের বিপক্ষেও কোচের পরিকল্পনার বাইরে ছিলেন এই তরুণ, শেষ মুহূর্তে জায়গা দেন জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান বাদল রায়ের অনুরোধে। সেটপিসগুলো নেওয়ার সময় এই মেসিডোনিয়ান কোচের গলার স্বর আরো ঝাঁঝাল হয়ে ওঠে। কে শট নেবে, কী করে নেবে, সেটাও চেঁচিয়ে বলে দিচ্ছেন এবং প্রতিপক্ষও শুনছে। তাই বেশ কিছু কর্নার আর ডি-এর ওপর পাওয়া তিনটি ফ্রিকিক কোনো কাজেই আসেনি। অথচ ওরকম জায়গার ফ্রিকিকে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের হৃদকম্পন বেড়ে যাওয়ার কথা। এখানে বেড়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের হৃদকম্পন, ভালো মারতে না পারলেই কোচের কথা শুনতে হবে। অধিনায়ক সুজনের অভিযোগ, 'সেটপিস নিয়ে দু-এক দিন প্র্যাকটিস হয়েছিল। কে মারবে, কী সিচ্যুয়েশনে কীরকম প্ল্যান তারও কোনো নির্দেশনা ছিল না। কোচ চাইতেন শুধু প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলো।'
সেই '৯৯ সাফ গেমসের পর মালদ্বীপের বিপক্ষে এক যুগ অজেয় থাকার রেকর্ড ৩-১ গোলে হারে ভূলণ্ঠিত হয়েছে। এরপর অবনত মস্তকে তৃতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়, হারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকার বিমান ধরেছে দল। যাওয়ার আগে আরিফুলদের সলজ্জ বিদায়, 'অন্যান্য টুর্নামেন্টেও আমরা হেরেছি, তবে আমাদের মধ্যে গত রাতের (পরশু) মতো হতাশা ও লজ্জা কখনো দেখিনি। এভাবে হারব ভাবিনি। কোচের ভুলেই সব শেষ হয়ে গেল।'
শেষ করে দিয়ে দলের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইলিয়েভস্কি দিল্লিতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর শির উন্নত করে বলে যাচ্ছেন, 'আমি তো এই দলকে নিয়ে আশাবাদী ছিলাম না।'
তবে চেষ্টা ছিল। মিডফিল্ডার মামুনুলের অনুপস্থিতিতে তরুণ শাহেদ ও ইমন বাবু চেষ্টা করেছেন মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করতে। দুই গোল খাওয়ার পর সেখানে আধিপত্য বজায় রাখলেও এক গোলের বেশি শোধ করা যায়নি। ৩০ মিনিটে চমৎকার গোলটি আসে শাহেদের পা থেকে। মিঠুনের শর্ট কর্নার নাসিরের পা ঘুরে তাঁর কাছে যেতেই এই তরুণ মিডফিল্ডার গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল কোনাকুনি প্লেসিং করে ব্যবধান কমান। টুর্নামেন্টে প্রথম গোলের মুখ দেখে দলের ভেতর একটু আত্মবিশ্বাসের সঞ্চারও হয়েছে বৈকি। সুবাদে তারা আরো কয়েকটা ভালো আক্রমণ করেছে, কিন্তু মালদ্বীপ ডিফেন্সের লিড ধরে রাখার প্রহরা টপকাতে পারেনি। গোলের জন্য মরিয়া হতে গিয়ে উল্টো আশফাকের কাউন্টার অ্যাটাকে ৭০ মিনিটে হজম করেছে তৃতীয় গোল। ম্যাচ জয়ের চাবি ঘুরিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে পড়েছেন মালদ্বীপের হাঙ্গেরিয়ান কোচ স্তেফান উর্বানী। ওদিকে বাংলাদেশের কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কি অনবরত চেঁচিয়ে যাচ্ছেন সাইডলাইন থেকে।
তাতে কোনো লাভ তো হয়নি, উল্টো নাকি ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ ডিফেন্ডার আরিফুল ইসলামের দাবি, 'আমাদের ফুটবল সেন্স আছে, খেলতেও জানি। কিন্তু কোচের চেঁচামেচির জন্য স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারি না আমরা। একটা কোচ পুরো ৯০ মিনিট চিৎকার করলে খেলোয়াড়রা ভয়ে থাকে।' ভয়টা হলো বাদ পড়ার, কোচের নির্দেশনার একটু এদিক-ওদিক হলেই পরের ম্যাচে একাদশের বাইরে চলে যেতে হয়। গোলদাতা শাহেদ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ভালো খেলার পরও একবার ডিফেন্সে নামতে পারেননি বলেই বাদ পড়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। মালদ্বীপের বিপক্ষেও কোচের পরিকল্পনার বাইরে ছিলেন এই তরুণ, শেষ মুহূর্তে জায়গা দেন জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান বাদল রায়ের অনুরোধে। সেটপিসগুলো নেওয়ার সময় এই মেসিডোনিয়ান কোচের গলার স্বর আরো ঝাঁঝাল হয়ে ওঠে। কে শট নেবে, কী করে নেবে, সেটাও চেঁচিয়ে বলে দিচ্ছেন এবং প্রতিপক্ষও শুনছে। তাই বেশ কিছু কর্নার আর ডি-এর ওপর পাওয়া তিনটি ফ্রিকিক কোনো কাজেই আসেনি। অথচ ওরকম জায়গার ফ্রিকিকে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের হৃদকম্পন বেড়ে যাওয়ার কথা। এখানে বেড়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের হৃদকম্পন, ভালো মারতে না পারলেই কোচের কথা শুনতে হবে। অধিনায়ক সুজনের অভিযোগ, 'সেটপিস নিয়ে দু-এক দিন প্র্যাকটিস হয়েছিল। কে মারবে, কী সিচ্যুয়েশনে কীরকম প্ল্যান তারও কোনো নির্দেশনা ছিল না। কোচ চাইতেন শুধু প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলো।'
সেই '৯৯ সাফ গেমসের পর মালদ্বীপের বিপক্ষে এক যুগ অজেয় থাকার রেকর্ড ৩-১ গোলে হারে ভূলণ্ঠিত হয়েছে। এরপর অবনত মস্তকে তৃতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়, হারের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকার বিমান ধরেছে দল। যাওয়ার আগে আরিফুলদের সলজ্জ বিদায়, 'অন্যান্য টুর্নামেন্টেও আমরা হেরেছি, তবে আমাদের মধ্যে গত রাতের (পরশু) মতো হতাশা ও লজ্জা কখনো দেখিনি। এভাবে হারব ভাবিনি। কোচের ভুলেই সব শেষ হয়ে গেল।'
শেষ করে দিয়ে দলের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইলিয়েভস্কি দিল্লিতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর শির উন্নত করে বলে যাচ্ছেন, 'আমি তো এই দলকে নিয়ে আশাবাদী ছিলাম না।'
No comments